বিভাগ: মহিলাদের ইলিম-তালিমের ফাযায়িল-ফযীলত
“তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম যে নিজে পবিত্র কুরআন শরীফ শিক্ষা করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়” (৫)
, ২০ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১১ ছানী ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১১ মে, ২০২৩ খ্রি:, ২৮ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
(গত ০৯ শাওওয়াল শরীফের পর)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,
‘হে আবূ যর, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার একটি পবিত্র আয়াত শরীফ শিক্ষা করা আপনার জন্য একশত রাকায়াত নফল নামায পড়ার চেয়েও উত্তম। ইলিমের একটি অধ্যায় শিক্ষা করা আপনার জন্য এক হাজার রাকায়াত নফল নামায পড়ার চেয়েও উত্তম। চাই এর উপর আমল করা হোক বা না হোক। (সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২১৯)
ইলিম অর্জনের উদ্দেশ্য হলো, মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক অর্জন করা। এজন্য ইলিম অন্বেষণকারীর বিশুদ্ধ নিয়তের বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকা জরুরি।
স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক অর্জনের উদ্দেশ্যে শিক্ষা করা হয় এমন ইলিম মুবারক যেই ব্যক্তি পার্থিব কোনো উদ্দেশ্য হাছিলের জন্য শিক্ষা করবে কিয়ামতের দিন সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। (মুসনাদে আহমদ শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৮৪৫৭; সুনানে আবূ দাউদ শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৬৬৪)
অন্য এক হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
‘তোমরা এই উদ্দেশ্যে ইলিম শিক্ষা করো না যে, এর মাধ্যমে আলেমদের সাথে গর্ব করবে বা মূর্খদের সাথে বিবাদে লিপ্ত হবে। কিংবা মজলিসের মধ্যমণি হবে। যে এমন করবে তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম, তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম। (ছহীহ ইবনে হিব্বান শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৭৭)
এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত ওলীআল্লাহ হযরত বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন- ‘পৃথিবীর বুকে ইলিম অন্বেষণের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোনো আমল সম্পর্কে আমার জানা নেই; যদি অন্বেষণকারীর নিয়ত বিশুদ্ধ থাকে এবং তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে চলেন। (আল আদাবুশ শারইয়্যাহ, ইবনে মুফলিহ ২/৩৭)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘ইলিম হাসিল করতে হবে শেখা-শেখানোর মাধ্যমে। (ছহীহ বুখারী শরীফ ১/২৪)
এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত মুহাদ্দিছ খতীব বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘ইলিম অন্বেষণকারী সম্মানিত দ্বীন উনার বুঝ ও সমঝ গ্রহণ করবে আলেমদের যবান থেকে; বই-পুস্তক থেকে নয়। (আল ফাকীহ ওয়াল মুতাফাক্কিহ, খতীব বাগদাদী ২/১৯৩)
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার একখানা পবিত্র আয়াত শরীফ থেকেও বুঝা যায়, পবিত্র ইলিম অর্জনের মূল তরতীব বা পদ্ধতি হলো, আহলে যিকির উনাদের শরণাপন্ন হওয়া বা ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘তোমরা যারা জানো না, যারা আহলে যিকির উনাদের কাছে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও। (পবিত্র সূরা নাহল শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৩)
বিশিষ্ট ফকীহ আল্লামা শাতেবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘আলমুআফাকাত’ কিতাবে লিখেছেন- ‘আহলে ইলিম বলেন, ইলিম সংরক্ষিত হয়েছিল মনীষীদের বুকে। পরে তা চলে এসেছে পুস্তকে। তবে চাবি রয়ে গেছে উনাদেরই হাতে। (আল মুআফাকাত, শাতেবী ১/১৪০)
ইলিম অর্জনের মূলনীতি হচ্ছে, ‘যার থেকে ইলিম গ্রহণ করা হবে, তিনি আহলে যিকির কিনা এবং হকপন্থী কিনা। সেটা যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে।’ এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘তুমি কার থেকে পবিত্র দ্বীন শিক্ষা করছো তা যাচাই করে নাও। (ছহীহ মুসলিম শরীফ ১/১৪)
এজন্য শুধু কিতাবাদি পড়ে ইলিম অর্জনের ধারণা একেবারেই ভুল। শুধু কিতাবাদি পাঠ করলেই হবে না বরং আহলে যিকির উনাদের কাছে গিয়েই ইলিম শিক্ষা করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই হাক্বীক্বীভাবে ইলিম মুবারক জানা ও বুঝার জন্য আহলে যিকির উনাদের কাছেই যেতে হবে। (চলবে)
-উম্মু মুদ্দাস্সির।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












