আফ্রিকার দেশ জিবুতিতে দ্বীন ইসলাম উনার আগমনের ইতিহাস
এডমিন, ২৬ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৯ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) ইতিহাস

২৩ হাজার ২০০ বর্গকিলোমিটারের ছোট্ট দেশে রয়েছে আটটি পর্বতমালা। তবে আছে `লেক আবি' ও`লেক আসাল নামের দুটি বিখ্যাত লেক। খ্রি: ২৪৭ সালে জিবুতি ম্যাক্রোবিয়ানসদের শাসনের অন্তর্ভূক্ত হয়, যা জিবুতিতে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আগমনের পূর্ব পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
মূলত সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালিন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময়েই জিবুতিতে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আগমন হয় পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে মুশরিকদের অত্যাচারে একদল ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যখন আফ্রিকায় হিজরত মুবারক করেন, তখন জিবুতিতেও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আগমন হয়। দেশটির জেইলা শহরে অবস্থিত দুই কিবলা বিশিষ্ট মসজিদ প্রমাণ করে জিবুতি আফ্রিকার প্রাচীনতম ভূখণ্ডগুলোর অন্যতম।
দেশটিতে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রচারে আরব মুসলমান বণিক উনাদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। জেইলা জিবুতির প্রথম শহর, যা দ্বীন ইসলাম উনার ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল এবং এটিকে কেন্দ্র করেই সেখানে আদল নামের প্রথম মুসলিম সালতানাত প্রতিষ্ঠিত হয়।
বিশিষ্ট ঐতিহাসিক আল ইয়াকুবির মতে, আদল সালতানাত ছিল একটি সমৃদ্ধ মুসলিম সালতানাত, যার প্রাণকেন্দ্র ছিল জেইলা শহর। এরপর খ্রি: ১৩ শতকে হর্ন অব আফ্রিকায় মুসলিম ইফাত সালতানাতের সূচনা হয়, যার সীমানা বিস্তৃত ছিল জিবুতি ও উত্তর সোমিলায়। জেইলা শহরের ওলাসমা বংশ ইফাত সালতানাতের গোড়াপত্তন করে। সুলতান ওমর ওলাসমা এই সালতানাতের প্রথম সুলতান ছিলেন। ১৪১৫ থেকে ১৫৭৭ খ্রি: সাল পর্যন্ত জিবুতিতে পুনরায় আদল সালতানাত প্রতিষ্ঠিত হয়। খ্রি: ১৫৭৭ সালে উসমানীয়রা জিবুতি বিজয় করেন এবং ১৮৬৭ সাল পর্যন্ত তা শাসন করে। উসমানীয় শাসনামলে জিবুতি মিসরে নিযুক্ত পাশাদের শাসনাধীন ছিল। উসমানীয় সালতানাতের পতনের পর ১৮৬২ সালে জিবুতিতে উপনিবেশ তৈরী করে সাম্রাজ্যবাদী ফ্রান্স। পরবর্তীতে ২৭ জুন ১৯৭৭ জিবুতি ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
জিবুতির জনসংখ্যার ৯৮ ভাগই মুসলমান এবং প্রায় সবাই সম্মানিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদায় বিশ্বাসী। দেশটিতে রাষ্ট্রদ্বীন সম্মানিত ইসলাম। জিবুতির অধিকাংশ মানুষই গ্রামে বসবাস করে। জিবুতির সংস্কৃতিতে রয়েছে আরব ও আফ্রিকার মিশ্রণ। দেশটির মুসলিমরা প্রধানত আরব-আফ্রিকান সংস্কৃতির ধারক। আম্মান ও ইয়েমেনের মুসলিমরা জিবুতিতে গিয়ে আবাস গড়ে তুলেছেন। দেশটির প্রধান ভাষা সোমালি, আরবি ও ইথিওপিয়ান। তবে ফ্রেঞ্চ ও ইতালিয়ান ভাষায়ও কেউ কেউ কথা বলে থাকে।