সুওয়াল-জাওয়াব
সুওয়াল: মসজিদের অনেক ইমাম ও খতীবকে দেখা যায়, তারা দুআ করার সময় মহান আল্লাহ পাক উনাকে তুমি বলে সম্বোধন করে থাকে। এটা কতটুকু শুদ্ধ? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে সঠিক ফায়ছালা জানিয়ে বাধিত করবেন।
, ১০ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ১০ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
![সুওয়াল: মসজিদের অনেক ইমাম ও খতীবকে দেখা যায়, তারা দুআ করার সময় মহান আল্লাহ পাক উনাকে তুমি বলে সম্বোধন করে থাকে। এটা কতটুকু শুদ্ধ? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে সঠিক ফায়ছালা জানিয়ে বাধিত করবেন।](https://www.al-ihsan.net/uploads/1698268801_.jpg)
সুতরাং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করাটা উনার পবিত্রতম শান মুবারককে ইহানত করার শামিল। যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত এবং এর ফলশ্রুতিতে ঈমানহারা হয়ে জাহান্নামী হওয়া ব্যতিত কোন উপায় থাকবে না।
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
إِنَّ الْعِزَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًا هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
অর্থ: নিশ্চয়ই সমস্ত ইজ্জত-সম্মান মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য এবং তিনি সবকিছু শোনেন ও সবকিছু জানেন। (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৫)
আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلَكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ
অর্থ: আর মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যেই সমস্ত ইজ্জত-সম্মান এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্যে এবং মু’মিন মুসলমানদের জন্যে। কিন্তু মুনাফিকরা এ সম্পর্কে আদৌ অবগত বা অবহিত নয়। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
এ পবিত্র আয়াতে কারীমা দ্বারা প্রতিভাত হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার ইজ্জত-সম্মান সম্পর্কে মুনাফিক শ্রেণীর লোকেরাই বেখবর। অর্থাৎ যারা কাফির, মুশরিক ও মুনাফিক তারা মহান আল্লাহ পাক উনার ইজ্জত-সম্মান প্রদর্শনে কার্পন্য করে থাকে।
অতএব, প্রত্যেক বান্দা-বান্দীর জন্যে, বিশেষ করে মুসলমান পুরুষ মহিলা, জিন-ইনসানের জন্য ফরয ওয়াজিব হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনাকে সম্মানসূচক শব্দ মুবারক দ্বারা আহ্বান বা সম্বোধন করা এবং উনার পবিত্রতম শান মুবারকে সম্মানিত শব্দ মুবারক ব্যবহার করা।
মহান আল্লাহ পাক উনার ইজ্জত-হুরমত, মর্যাদা-মর্তবা তো বলার অপেক্ষা রাখে না; বরং যে বিষয় বা বস্তুসমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার শিআর বা নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত সেসমস্ত বস্তু বা বিষয়ের ইহানত করতে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَا تُحِلُّوا شَعَائِرَ اللَّهِ وَلَا الشَّهْرَ الْحَرَامَ
অর্থ: হে ঈমানদারগণ! মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শন সমূহকে তোমরা অবমাননা বা অসম্মান করো না। (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
এছাড়া পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أَنْزِلُوا النَّاسَ مَنَازِلَهُمْ
অর্থ : তোমরা মানুষদেরকে তাদের পদমর্যাদা অনুযায়ী সম্মান করো। (মিশকাত শরীফ)
এমনিভাবে অসংখ্য পবিত্র আয়াত শরীফ ও অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে সম্মানিত ব্যক্তি বা বিষয়সমূহকে সম্মান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং অসম্মান বা ইহানত করতে নিষেধ করা হয়েছে।
যদি তাই হয় তাহলে যিনি সমস্ত কিছুর খালিক্ব, মালিক, রব, মা’বুদ মহান আল্লাহ পাক উনাকে সৃষ্টিজীব কি করে অসম্মান প্রদর্শন করতে পারে! বস্তুত উনাকে যারা অস্বীকারকারী, কাফির, মুশরিক, মুনাফিক কেবল তারা ব্যতীত আর কেউই অসম্মান করতে পারে না, ইহানত বা অবজ্ঞা করতে পারে না।
উল্লেখ্য, মহান আল্লাহ পাক উনাকে তুমি বলে সম্বোধন করা একদিকে যেমন কুফরী তেমনি চরম বেয়াদবিরও শামিল। আদব সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
حُسْنُ الْاَدَبِ مِنَ الْاِيْمَانِ
অর্থ : উত্তম আদবই হলো ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।
স্মরণীয় যে, যার আদব নেই সে বেআদব। বেআদব সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত বুযুর্গ এবং কবি হযরত মাওলানা জালালুদ্দীন রুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বসমাদৃত ‘মসনবী শরীফ’ কিতাবখানা লেখার শুরুতে লিখেছেন যে-
از خدا جویم توفیق ادب
بے ادب محروم گشت از لطف رب.
অর্থ : মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আমি আদব রক্ষার ব্যাপারে তাওফীক চাচ্ছি। কেননা বেআদব মহান রব তায়ালা উনার রহমত থেকে বঞ্চিত। নাঊযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে খোঁজ-খবর নেয়া
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ নামাযে একামত দেয়া
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: কবরে রাখার পরে মৃতের চেহারা দেখানো
২৩ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গঃ হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার প্রতি সঠিক আক্বিদা
২২ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুওয়াল- জাওয়াব
১৪ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুওয়াল-জাওয়াব
১১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ ও মহিলার নামাযের পার্থক্য
১৭ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সুওয়াল জাওয়াব: প্রসঙ্গ দেনমোহর
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুওয়াল: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইলমে গইব সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বার লোকেরা বিভিন্ন প্রকার চু-চেরা করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দলীল সহকারে জাওয়াব প্রদান করলে ঈমান-আক্বীদা হিফাযতে সহায়ক হবে।
২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুওয়াল: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইলমে গইব সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বার লোকেরা বিভিন্ন প্রকার চু-চেরা করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দলীল সহকারে জাওয়াব প্রদান করলে ঈমান-আক্বীদা হিফাযতে সহায়ক হবে।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুওয়াল-জাওয়াব
১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সুওয়াল-জাওয়াব
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)