অমুসলিম মহিলাদের দ্বীন ইসলাম গ্রহণের ঈমানদীপ্ত ঘটনা:
একমাত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যেই রয়েছে পারিবারিক প্রশান্তি -অস্ট্রিয়ান নওমুসলিম যয়নাব
, ১৫ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩০ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
ক্লারা ল্যান্টসেল আরো বলেছেন: কেউ যদি উচ্চতর লক্ষ্যে উপনীত হতে চায় তাহলে তার উচিত বেশি বেশি প্রচেষ্টা চালানো এবং দিক-নির্দেশনা ও উপদেশের আলোকে বেশি বেশি পদক্ষেপ নেয়া, ঠিক যেভাবে একজন ক্রীড়াবিদ মেডেল অর্জনের জন্য ব্যাপক পরিশ্রম করে ও নানা উপদেশ মেনে চলে। তাই আধ্যাত্মিক লক্ষ্য অর্জনের জন্যও ন্যূনতম প্রচেষ্টাগুলো চালানো জরুরি। এই সর্বনিম্ন কর্তব্যগুলো হল ধর্মের মূল ভিত্তিকেন্দ্রীক যার অভাবে ধর্ম ক্রমেই ধ্বসে পড়ে। খ্রিস্ট ধর্ম ঠিক এই দশারই শিকার হয়েছে। এ ধর্মে তথাকথিত যেসব বাইবেল ও পবিত্র বাণী দেখা যায় সেগুলোর বেশিরভাগই মতামত মাত্র এবং খ্রিস্ট ধর্মে মানুষের জীবন-যাপন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত ও যথাযথ বিধান নেই। কিন্তু আমি সব সময়ই পূর্ণাঙ্গ জীবন-বিধানের সন্ধানে ছিলাম যাতে তা আমাকে সবচেয়ে ভালো পথে পরিচালিত করতে পারে।”
সামাজিকতা, বন্ধু-বাৎসল্য, প্রফুল্লতা, আন্তরিকতা ও দয়ার মত মহত গুণগুলোর সঞ্চালন দ্বীন ইসলামের আরেকটি বড় দিক। মুসলমানদের এইসব গুণ অনেক অমুসলিমকে আকৃষ্ট করছে এই দ্বীন উনার দিকে।
শৈশবে যুদ্ধাহত একদলের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে ইসলামের এইসব দিকের সৌন্দর্য দেখেছিলেন অস্ট্রিয়ার নও-মুসলিম যয়নাব ওরফে ক্লারা ল্যান্টসেল যা দ্বীন ইসলাম উনার দিকে তার আকৃষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ।
তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন: “দ্বীন ইসলাম উনার রয়েছে আকর্ষণীয় বহু দিক। এইসব আকর্ষণের মধ্যে আমার কাছে যে দু'টি দিক সবচেয়ে মধুর ও সুন্দর মনে হয়েছে তার একটি হল, দ্বীন ইসলাম মানুষকে প্রফুল্ল থাকার ও সুন্দর আচার-আচরণের শিক্ষা দেয়। চিকিৎসার জন্য অস্ট্রিয়ায় আসা একদল যুদ্ধাহত মুসলমানের মধ্যে আমি আধ্যাত্মিক নানা আকর্ষণসহ এই দিকটি দেখতে পেয়েছি। উনাদের অনেকেরই ছিল না হাত ও পা এবং রাসায়নিক হামলার কারণে অনেকের চেহারাও বিকৃত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও উনারা ছিলেন বেশ উৎফুল্ল ও প্রফুল্ল। উনাদের এমন আনন্দিত ভাব আমাদের ওপর গভীর প্রভাব ফেলত। এইসব আচরণ ছিল খুব দৃঢ় ও গভীর বিশ্বাসের সুফল। শৈশবের সেই অভিজ্ঞতার কারণেই আমি “দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়েছিলাম। ধর্মের প্রভাবে মানুষের এতটা দৃঢ়-বিশ্বাস বা আত্মবিশ্বাস ও প্রশান্ত চিত্ত এক অবিশ্বাস্য বিস্ময়।”
অস্ট্রিয়ার নও-মুসলিম যয়নাব ওরফে ক্লারা ল্যান্টসেলের মতে, দ্বিতীয় যে বড় দিক “দ্বীন ইসলাম উনার দিকে তার আকৃষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে তা হল “দ্বীন ইসলাম উনার বিধি-বিধানের সুদৃঢ় অস্তিত্ব। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন: “দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে রয়েছে মানুষের জন্য জীবনের সব ধরনের বিধান। এইসব বিধান নানা সমস্যার ক্ষেত্রে মানুষকে দেয় সর্বোত্তম সমাধান ও মানুষকে পরিচালিত করে পূর্ণতার দিকে।”
দ্বীন ইসলাম সমাজ গঠনের অন্যতম প্রধান ভিত্তি পরিবার ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করার বিধান ও দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। পরিবার সম্পর্কে দ্বীন ইসলাম ও খ্রিস্ট ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য তুলে ধরতে গিয়ে নওমুসলিম যয়নাব ওরফে ক্লারা ল্যান্টসেল বলেছেন: “একজন ধর্মপ্রাণ খ্রিস্টান যদি গির্জার পরিবর্তে পরিবার ও সমাজে জীবন যাপন করতে চায় তাহলে তিনি বিশেষ সমস্যার সম্মুখীন হবেন। কারণ, পারিবারিক জীবন সম্পর্কে খ্রিস্ট ধর্মের কোনো সুধারণা নেই। এ ধর্ম একাকীত্ব ও বৈরাগ্যের জীবনকে বেশি গুরুত্ব দেয়। একজন খ্রিস্টান যদি পড়াশুনার জন্য সফর করতে চায় কিংবা সন্তানকে সুশিক্ষিত করতে চায় বা জীবনের অন্য ক্ষেত্রে কোনো কাজ করতে চায় তাহলে খ্রিস্ট ধর্মের বিধি-বিধান ঘেঁটে এ সম্পর্কে বাস্তব ও বিস্তারিত কোনো নির্দেশনা পাবে না। কিন্তু দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনসহ জীবনের সব ক্ষেত্রের খুঁটি-নাটি দিক সম্পর্কেও বিস্তারিত এবং নিখুঁত দিক-নির্দেশনা রয়েছে। একমাত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যেই রয়েছে এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য এভাবে দ্বীন ইসলাম মানুষের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তার জীবন্ত উপস্থিতি বজায় রাখতে সক্ষম। ইসলামের বিধি-বিধানগুলো মানুষের বিবেক ও যুক্তির সঙ্গেও মানানসই। ফলে এই মহান দ্বীন মানুষের অসহায় একাকীত্ব ও অর্থহীনতার ভাবকে এ পার্থিব জীবনেই দূর করতে সক্ষম।'
অস্ট্রিয়ার নও-মুসলিম নারী যয়নাব ওরফে ল্যান্টসেল দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করায় পরিবার ও সমাজের পক্ষ থেকে নানা বাধা-বিপত্তির শিকার হয়েছেন। কিন্তু দ্বীন ইসলাম তাকে দিয়েছে আত্মিক প্রশান্তি। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন: ‘যে দ্বীন উনার বিধান মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের পদে পদে উপস্থিত, পাশ্চাত্যে সে সম্মানিত দ্বীনের বিধান মেনে চলা বেশ কঠিন। কিন্তু এই কষ্টের মধ্যেও মহান আল্লাহ পাক উনার উপস্থিতিকে অনুভব করা যায়। খোদার সঙ্গে সম্পর্ক ও নৈকট্য আর ভালোবাসা নানা কাজ বা আমলের মধ্যে প্রকাশিত হয়। আসলে দ্বীন ইসলাম উনার মহান শিক্ষাগুলো মানুষকে দেয় প্রশান্তি ও আত্ম-বিশ্বাস। অথচ এই প্রশান্তি আজ পাশ্চাত্যে পুরোপুরি অস্তিত্বহীন।’
-উম্মু রাহাত।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম এটাইতো সে বিষয় যা বহু বছর ধরে আমি খুঁজছিলাম -মার্কিন নও মুসলিম ডায়না বিটি
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জন্য জামায়াতে নামায পড়া নাজায়েজ : এই নির্দেশনা মুবারক এসেছে সর্বোচ্চ স্থান থেকেই
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু বোরকা পরার মধ্যেই পর্দা নয়
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: অপ্রয়োজনীয় কথা না বলে চুপ থাকা
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য সুন্নতী লিবাস, অলংকার ও সাজ-সজ্জা (৯)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র আরবী হরফ উনার পরিচয় (১১)
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মানবীয় সম্পদের গুরুত্ব কতটুকু
২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহিলারা নিজেরাই জানে না, দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে মহিলাদের মর্যাদা ও অধিকার কতবেশি
২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত উম্মুল ফদ্বল বিনতুল হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা (২)
২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মার্কিন খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারক ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ
২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: বিয়ের পর মা-বাবার প্রতি মেয়ের দায়িত্ব
২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আরবী বারো মাসের নাম
২০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)