আর্থিক মন্দায় চীন
আযাব গযব
এডমিন, ০৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) বিদেশের খবর

কয়েক দশক ধরে চীন নিজের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে কারখানা, আকাশচুম্বি বহুতল ভবন ও সড়কে বিনিয়োগ করে। কিন্তু এখন এই মডেল ভেঙে পড়েছে।
চীন যখন ঘাটতি পূরণে কাজ করছিল তখন এই মডেল কাজে এসেছে। কিন্তু এখন দেশটি ঋণে জর্জরিত এবং নির্মাণ করার মতো অবকাঠামো পাওয়া যাচ্ছে না। চীনে নির্মিত অনেক সেতু ও বিমানবন্দরের যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। লাখো অ্যাপার্টমেন্ট ভবন খালি পড়ে আছে। এসব নির্মাণ থেকে বিনিয়োগের ফিরে আসা হ্রাস পেয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
চীনা অর্থনীতির হতাশাজনক তথ্য ছাড়াও সংকটের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনানসহ দূরবর্তী প্রদেশগুলোতে।
অন্যান্য এলাকাও একই কাজ করছে। বেসরকারি বিনিয়োগ দুর্বল ও রফতানি হ্রাস পাওয়ায় কর্মকর্তারা বলছে, অর্থনীতিকে গতিশীল করার জন্য ঋণ গ্রহণ এবং নির্মাণ চালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাদের কাছে খুব বেশি বিকল্প নেই।
মার্কিন গ্রাহকদের করোনা গযবের ব্যয় বৃদ্ধি চীনের অর্থনৈতিক সমস্যাকে আরও জটিল করেছে। আবাসন খাতের রমরমা পরিস্থিতির পতন, পশ্চিমা বিশ্বে চীনা পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া এবং ঋণ নেওয়ার মাত্রা অস্থিতিশীল পর্যায়ে পৌঁছেছে। র্
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। উৎপাদন সংকুচিত ও রফতানি হ্রাস পেয়েছে এবং যুবকদের বেকারত্ব রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। দেশের বৃহত্তম আবাসন কোম্পানি কান্ট্রি গার্ডেন হোল্ডিংস ঋণখেলাপির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। কারণ সামগ্রিক অর্থনীতি মুদ্রাস্ফীতির দিকে চলে যাচ্ছে।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় নির্মাণের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য চীনের সাউথ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইকোনমিকসের একটি সমীক্ষা অনুসারে, ২০১৮ সালে শহুরে চীনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অ্যাপার্টমেন্ট বা কমপক্ষে ১৩০ মিলিয়ন ইউনিট খালি ছিল।
চীনা সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় হাইনান প্রদেশের শহর দানঝোতে একটি উচ্চ-গতির রেল স্টেশন তৈরি করতে ৫.৫ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। কিন্তু যাত্রীর চাহিদা এত কম ছিল বলে যা কখনোই ব্যবহার করা হয়নি। হাইনান সরকার বলেছে, স্টেশনটি চালু রাখলে ‘ব্যাপক ক্ষতি’ হবে।
এদিকে চীনের শ্রমশক্তি সঙ্কুচিত হচ্ছে এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির গতি কমে যাচ্ছে। হফম্যানের বিশ্লেষণ অনুসারে, ১৯৮০ এবং ২০০০ দশকের শুরুর দিকে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি চীনের জিডিপিতে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অবদান রেখেছে। সেই অনুপাত গত এক দশকে এক-ষষ্ঠাংশের নিচে নেমে এসেছে।
ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্ট ডেটা অনুসারে, বিভিন্ন স্তরের সরকার ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর মোট ঋণ ২০২২ সালের জিডিপির প্রায় ৩০০ শতাংশতে পৌঁছে গেছে। এই মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০১২ সালে চীনের এই হার ছিল ২০০ শতাংশের কম।
ঋণের বেশিরভাগ শহরগুলোতে ব্যয় করা হয়েছিল। আইএমএফের তথ্য অনুসারে, বেইজিং কর্তৃক সরাসরি প্রকল্পে অর্থ ঋণ করার ক্ষমতায় সীমিত রাখায় তারা অফ-ব্যালেন্স শিট অর্থায়নের দিকে ঝুঁকছে। যে ঋণ এই বছর ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত কয়েক বছরে প্রবৃদ্ধি দুর্বল হয়ে পড়েছে। ভূমি বিক্রয় থেকে রাজস্ব কমে যাওয়ায় আবাসন বাজারের ক্ষয়ক্ষতি স্থানীয় আর্থিক ব্যবস্থায় কঠোর আঘাত করেছে।