আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরে সুদ পরিশোধেই ব্যয় হবে ৮০ হাজার কোটি টাকা। সুদ ব্যয়ের কারণে আকার বাড়লেও সুফল নেই বাজেটের। সরকারের উচিত, ঋণের ধারা থেকে সরে এসে আভ্যন্তরীণ আয়ের দিকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেটকে গণমুখী করা।
, ৩০ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০১ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মন্তব্য কলাম
প্রতিবছর বাজেটের আকার বড় হচ্ছে। বাড়ছে সরকারের ব্যয়। কিন্তু ব্যয় অনুযায়ী আয় হচ্ছে না। বাজেটে বাড়ছে ঘাটতি। আর এ ঘাটতি মেটাতে সরকার প্রতিনিয়ত আভ্যন্তরিণ ও বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণ করছে। এতে প্রতি বছরই ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। সাথে বাড়ছে ঋণের সুদ। আবার এ সুদ পরিশোধ করা হচ্ছে ঋণ নিয়ে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকার বাজেট হয়েছে। এই অর্থের মধ্যে সরকারকে সুদ ব্যয় বাবদই বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি। পাঁচ বছর আগের তুলনায় এ সুদ ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেটে সুদ ব্যয় বাবদ ধরা ছিল ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা।
গত ছয়টি অর্থবছরের বাজেটের সারসংক্ষেপ ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সুদ ব্যয় ছিল ৪৯ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। পরে এই ব্যয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫৭ হাজার ৬৬৪ কোটি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭০ হাজার ৬০৬ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭১ হাজার ২৪৪ কোটি, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়।
বলাবাহুল্য, ভুল নীতির কারণে এ সুদব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে ঘাটতি মেটানো হচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকলে সামনে সরকারি কর্মচারীদের বেতনভাতা ও সুদ পরিশোধেই বাজেটের সমুদয় অর্থ ব্যয় করতে হবে। সঙ্কুচিত হয়ে যাবে উন্নয়ন বাজেট। বিপরীতে নীতি পরিবর্তন করলে অপেক্ষাকৃত বিনা সুদে ঘাটতি বাজেটের অর্থায়ন করা যেত।
বাংলাদেশের অর্থনীতির গঠন, অবস্থা বিবেচনায় আনলে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ আয়ের যত পথ রয়েছে তা যদি বিকশিত করা যায় তাহলে বাংলাদেশের আর বিদেশ থেকে ঋণ নেয়ার কোনো প্রয়োজনই পড়েনা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বিদেশি নাগরিকদের ওপর সরকারের কোনো কর নেই। সেখান থেকে সরকার ৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা আয় করতে পারে। যেহেতু সম্পদ কর নেই, তাই এ খাতে সরকারের কোনো আয় নেই। অথচ সম্পদ কর থেকে আয় হতে পারে কমপক্ষে লাখো কোটি টাকা। বিদেশি পরামর্শক ফি বাবদ সরকার আয় করতে পারে ৩ হাজার কোটি টাকা; অথচ বর্তমানে এ বাবদ সরকারের কোনো আয় নেই। দেশে অপ্রদর্শিত অর্থের পরিমাণ জিডিপির প্রায় ৩৬ শতাংশের সমান। এই খাত থেকে সরকার ৬০ হাজার কোটি টাকা আয় করতে পারে। সরকার দেশের রাজস্বের উৎসগুলোর দিকে যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করলে রাজস্বও হতে পারে জাতীয় আয়ের অন্যতম উৎস।
গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। যা বেসরকারি হিসেবে প্রায় ১৮ লাখ কোটি টাকা এবং বর্তমানেও প্রতি বছর লাখো কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। এই অর্থ যদি পাচার ঠেকানো যায় তাহলে এটি দিয়েই সরকারের একটি বড় অর্থ আয়ের সুযোগ থাকতো। কারন তা দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হতো। বর্তমানে সারাদেশে বিপুল পরিমাণ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী রয়েছে যারা কর্মহীন ও বেকার। হিসাব মতে, তাদের সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি। এই কর্মক্ষম জনশক্তিকে যদি দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতগুলোতে কাজে লাগানো যায় তাহলে এই খাত থেকেই বাজেটের সমপরিমাণ আয় হবে সরকারের।
সরকার দেশের বাণিজ্যিক খাতে নানারূপ অস্বাভাবিক ভ্যাট-কর আরোপ করে রেখেছে। যদি সরকার এই ভ্যাট কর উঠিয়ে নিয়ে দেশের বাণিজ্যিক খাতকে পৃষ্ঠপোষকতা করে তাহলে এটি থেকেও সরকারের আয় বাড়বে। সবচেয়ে বড় কথা সরকারের প্রতিটি প্রকল্পে, কাজে দুর্নীতির মচ্ছব চলছে। এই দুর্নীতি যদি রোধ করা যেতো তবে বাংলাদেশ টাকার উপরে ভাসতো।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে অর্থমন্ত্রী বলেছে, ২০৩০ সালের পর আমরা ঋণ নেবনা বরং ঋণ দেব। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমানে যে হারে ঋণ ও সুদভিত্তিক বাজেট হচ্ছে তাতে অর্থমন্ত্রীর স্বপ্ন তো পূরণ হবেই না বরং দেশে শ্রীলঙ্কার মত পরিস্থিতি তৈরি হবে। তার বিপরীতে সরকার যদি আভ্যন্তরিণ আয়ের পথগুলো বিশৃঙ্খলামুক্ত করে তাহলে ২০৩০ সাল নয় বরং এখনই সরকার এই সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে ইনশাআল্লাহ।
কিন্তু আত্মঘাতী ঋণের সুদ পরিশোধের বিষয়টি এখন অর্থনীতির জন্য মরণ কামড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়া, চিনিকলগুলোকে বেসরকারি খাতে দিয়ে দেয়া, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সঙ্কট তৈরি বা শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সেবা খাতকে বাণিজ্যিকীকরণ করতে বাধ্য হয়েছে অযাচিত ঋণ গ্রহণের ফলে। এতে প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি, বরং দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে দেশের জনপ্রতি ঋণের বোঝা। কাজেই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে জনগণের এখন সচেতন হয়ে সরকারের এই ঋণ গ্রহণের বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে হবে।
মূলত, সুদভিত্তিক অর্থনীতিতে কখনোই সমৃদ্ধি আসবেনা। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে সুদ হারাম করেছেন। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে সুদের সাথে সংশ্লিষ্টদেরকে লানত দিয়েছেন। কাজেই, সুদমুক্ত বিশ্ব অর্থনীতির অনুশীলন, অনুসরণ ও প্রচলনই হোক বিশ্ববাসীর কামনা।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষন, যুদ্ধকৌশল, সামরিক সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন সাফল্যের শীর্ষে। সরকারের উচিত- দেশের মর্যাদা বুলন্দ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্বকে সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীর প্রতি সকল প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর তথ্যানুযায়ী বেনিয়া বৃটিশগুলো মুসলিম ভারত থেকে লুট করেছে ১২ হাজার লক্ষ কোটি টাকা প্রকৃতপক্ষে তারা লুট করেছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ করলে যা লাভ হবে চালু রাখলে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হবে ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবী অবিলম্বে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হোক কিন্তু তাদের উপেক্ষা করে পরিবেশ উপদেষ্টা প্রমাণ করছে তার পরিবেশবাদী তৎপরতা অন্য পরিবেশবাদীদের সাথে সাংঘর্ষিক এবং তার পরিবেশবাদী প্রচারণা কার্যকলাপ আসলে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নয় বরং বিশেষ প্রভুর নির্দেশনায় (প্রথম পর্ব)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন এসব খেলা স্বাভাবিক গেমের মতো হওয়ায় প্রকাশ্যে খেলা হলেও আশপাশের মানুষ তা বুঝতে পারেন না কেবলমাত্র ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব ইনশাআল্লাহ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
গার্মেন্টসের চেয়েও বড় অবস্থানে তথা বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে অধিষ্ঠান হতে পারে বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে শুধু মাত্র এ খাত থেকেই বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা অর্জন সম্ভব ইনশাআল্লাহ। যা বর্তমান বাজেটের প্রায় দেড়গুণ আর শুধু অনিয়ম এবং সরকারের অবহেলা, অসহযোগীতা দূর করলে বর্তমানেই সম্ভব প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা অর্জন জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সমৃদ্ধি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সরকারের গাফলতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জনগণের জন্যও জরুরী। (২য় পর্ব)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার মুসলিম বিশ্বে অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা বিশেষত মূল্যহীন কাগজী মুদ্রা বাদ দিয়ে সুন্নতী দিনার-দিরহাম মুদ্রা চালু করা আবশ্যক ইনশাআল্লাহ (দ্বিতীয় পর্ব)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিদেশি হাইব্রিড বীজের ফাঁদে দেশের কৃষি। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় ফসলের জাত, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। ফুলে-ফেঁপে উঠছে বীজ কোম্পানিগুলো।
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুশরিক ভারতের প্রতি লা’নত ওদের জনসংখ্যা দিন দিন নিম্নমুখী পক্ষান্তরে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে খোদায়ী রহমত। (সুবহানাল্লাহ) বাংলাদেশে জনসংখ্যার এখন ৬৫ ভাগই কর্মক্ষম এবং জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার উর্ধ্বগামী বাংলাদেশ ভোগ করছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের নিয়ামত। সুবহানাল্লাহ!
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়াতে সতর্কতা তথা মধ্যম আয়ের স্থবিরতা তাওয়াক্কুল আর তাকওয়া অবলম্বনে সব সমস্যা দূর হয়ে অচিরেই বাংলাদেশ হতে পারবে শীর্ষ সমৃদ্ধশালী দেশ ইনশাআল্লাহ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রিজওয়ানার পরিবেশবাদী প্রচারণার বিপরীতে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনে ইতিবাচক বার্তা এবং ইউনুসের পানি ও প্রকৃতি প্রেমের বানীর পরিবর্তে আপত্তি সত্ত্বেও একনেকে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প অনুমোদনে জনগণ তথা নেটিজনের মূল্যায়নটা কী?
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যখন কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধবিমান কিনে, তখন তা শুধু একটি বিমান কেনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর সাথে যুক্ত হয় একাধিক শর্ত, নিষেধাজ্ঞা এবং জটিল টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












