ইলমে আরূজী অর্থাৎ ছন্দ প্রকরণ সংশ্লিষ্ট আদব (১৭)
, ২৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৫ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৪ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ৩১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সবশেষে ক্বাছীদা শরীফ এবং গান-বাজনার একটি তুলনামূলক আলোচনা করা যাক, যাতে মানুষ বুঝতে পারে কিভাবে মুহইস সুন্নাহ, মাহিউল বিদয়াহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি আমাদের হিফাজত করে যাচ্ছেন।
গান-বাজনা ক্বাছীদা শরীফ
ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হারাম হালাল এবং সুন্নত।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে শরীয়ত উনার নিষিদ্ধ বিষয় নিয়ে রচিত। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার এবং সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ উনাদের শান মুবারক সম্পর্কে লিখিত হয়।
সঙ্গীত একটি অসম্ভব কল্পনার জগতে নিয়ে যায়। একটি চিরস্থায়ী জগতের দিকে নিয়ে যায়
সঙ্গীতের সাথে আছে শরাবের যোগ। ফলে সঙ্গীত শিল্পীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় শরাবখোর। ক্বাছীদা শরীফ উনার মধ্যে থাকে ফানা এবং বাক্বার বিষয়। মানুষ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং ওলীআল্লাহ উনাদের মুহব্বত-ইশক উনার তহুরা পানে নিমজ্জিত থাকে।
সঙ্গীতে থাকে বাদ্যযন্ত্র, যার সুর মানুষের মনে মুনাফিকী সৃষ্টি করে। ক্বাছীদা শরীফ উনার শব্দ, সুর, বাক্য অন্তরে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং ওলীআল্লাহ উনাদের মুহব্বত উনার ইশক তথা মুহব্বত বৃদ্ধি করে।
মানুষ লা’নতগ্রস্ত হয়, ফলে বিপদগ্রস্ত হয়। মানুষ রহমতপ্রাপ্ত হয়।
অনর্থক কথামালায় থাকে ভরা। থাকে গভীর অর্থবোধক রূহানীয়াত সমৃদ্ধ পংক্তিমালা।
মিথ্যা পুনঃ পুনঃ আওড়ালে মিথ্যার অভ্যাস হয়। হৃদয় হয় অন্ধকার আর সত্য বলার অভ্যাসে হৃদয় হয় আলোকিত।
শয়তান সাহায্য করে। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের কর্তৃক সাহায্য প্রাপ্ত হয়।
দ্বীন থেকে সরিয়ে রাখে। দ্বীনে সাহায্য করে। অর্থাৎ দ্বীনদার পরহেজগার হয়।
শরীয়ত উনার নির্দেশ অমান্য করে নাফরমানীমূলক কাজ করা হয়। শরীয়ত উনার নির্দেশ পালন করা হয়। অর্থাৎ ঈমান ও ইসলাম উনাদের উপর ইস্তিকামত হয়।
আরো ব্যাখ্যা : যে সময়ে পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল হয়েছিলো তখনকার আরবগণ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার কতটা ক্বদর করতেন তা বলাই বাহুল্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহের তাৎপর্য ছিল স্পষ্ট। তথাপি তিনি বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত হাসসান বিন সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে মসজিদে নববী শরীফ উনার মাঝে আলাদা একটা মিম্বর শরীফ তৈরি করে দিয়েছিলেন। এ বিষয়টি উম্মতের জন্য বড় একটি ইহসান। পবিত্র কুরআন শরীফ মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম শরীফ। এর গভীরতা বোঝা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু ক্বাছীদা শরীফ যেহেতু মানুষ রচিত; তাই তো এটা মানুষকে আবেগপ্লুত করে, তাছির করে।
তাছাউরে শায়েখ বলে একটি ছবক আছে, যা মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। অর্থাৎ শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার চেহারা মুবারক কল্পনা করে ফয়েজ লাভ করা। যারা ক্বাছীদা শরীফ লিখেন, শোনেন, পাঠ করেন বর্ণনা করেন ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় তারা সেভাবে একটা আলদা ফয়েয প্রাপ্ত হন। সুবহানাল্লাহ!
আজ সর্বত্র গান-বাজনার যে প্রচলন তা পরিকল্পিতভাবেই মুসলমানগণের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়েছে। মুসলমানদের উদাসীনতাও এক্ষেত্রে অনেকটা দায়ী। মুসলমানগণের উচিত সর্বপ্রকার হারাম গান-বাজনা বাদ দিয়ে সম্মানিত সুন্নত উনার অনুসরণে হামদ শরীফ-না’ত শরীফ, ক্বাছীদা শরীফ শোনা, পাঠ করা, লেখা। সকল প্রকার গান-বাজনার অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে সামায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। তাহলে অবশ্যই একদিন হারাম গান-বাজনার অভিশাপ থেকে মানুষ মুক্তি পেয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত দ্বারা সিক্ত হবে।
তথ্যসূত্র :
১) মাসিক আল বাইয়্যিনাত (৭৪তম সংখ্যা)
২) এহইয়াউলুল উলুমুদ্দীন’ (সামা অধ্যায়) - হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
৩) রাহাতিল ক্বুলুব - মাহবুব-ই-ইলাহি হযরত খাজা নিযামুদ্দীন আউলিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
৪) ফুরফুরা শরীফ পীর ক্বিবলার জীবন চরিত্র - মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার (পৃষ্ঠা ১০৪ )
৫) কত জনপদ কত ইতিহাস - ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন (অবঃ)
৬) হযরত আমীর খসরু রহমাতুল্লাহি আলাইহি - অন লাইন সূত্র
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












