ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে ‘পহেলা এপ্রিল’ বা ‘এপ্রিল ফুল’ হারাম। ‘এপ্রিল ফুল’ এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস (২)
, ২৫ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৭ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ২৬ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১১ চৈত্র, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
(গতকালের পর)
এমতাবস্থায় দেশহারা মুসলমান সৈন্যদের সন্ধির শর্ত দিয়ে অস্ত্রমুক্ত হতে বলা হয়। কিন্তু তীক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন তৎকালীন মুসলিম সেনাপতি এ সন্ধিকে মরণ শর্ত বুঝতে পেরে সন্ধি শর্তে আবদ্ধ না হওয়ার জন্য স্বপক্ষীয় সৈন্যদল ও জনগণকে এক তেজস্বীনী ভাষণে ভয়াবহ ভবিষ্যৎ পরিণতির ইঙ্গিত দান করেন। কিন্তু উনার অবশ্যম্ভাবী পতনের আশঙ্কায় মুসলমানগণ উনার এ গুরুত্বপূর্ণ ভাষণের কোনো মর্যাদা দেয়নি। তাই তিনি উপায়ান্তর না দেখে এলাভিরা তোরণ দিয়ে অশ্বারোহণে নগর ত্যাগের সময় ওঁৎ পেতে থাকা দশজন খ্রিস্টান অশ্বারোহীর দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে যুদ্ধ করতে করতে তাদের কয়েকজনকে হতাহত করেন এবং নিজেও মারাত্মকভাবে আহত হন। অবশেষে শেনিল নদীতে পড়ে চিরশান্তি লাভের অমীয় সুধা পান করেন।
এরপর প্রতারক শাসক ফার্ডিনান্ড আদেশ জারি করে মসজিদগুলোকে নিরাপদ ঘোষণা করা হলো। এ আদেশে আরো বলা হয় যে, যারা মসজিদে আশ্রয় নেবে তারা নিরাপদ থাকবে। অসংখ্য স্পেনীয় মুসলমান সরল বিশ্বাসে মসজিদগুলোতে আশ্রয় গ্রহণ করে আবদ্ধ হয়। যালিম খ্রিস্টান শত্রুরা মসজিদগুলিকে তালাবদ্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ভস্ম করে দেয় অবশিষ্ট স্পেনীয় মুসলমানদের। আর বাইরে থেকে যালিম খ্রিস্টানরা উল্লাসভরে কৌতুক করে সমস্বরে ঋড়ড়ষ! ঋড়ড়ষ!! (ফুল, ফুল) বলে অট্টহাসি আর চিৎকারে মেতে উঠে। দিনটি ছিলো পহেলা এপ্রিল ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দ সন। অদ্যাবধি প্রতারক খ্রিস্টানরা তাদের সেই শঠতার স্মরণে ধোঁকা বা প্রতারণার দিবস হিসেবে পালন করে ‘এপ্রিল ফুল’। খ্রিস্টানদের জন্য এদিনটি পালনীয় হলেও মুসলমানদের জন্য ভাষাহীন বেদনাদায়ক। কেননা মুসলমানদেরই হাতে গড়ে উঠা একটি সভ্যতা বর্বর অসভ্য যালিম খ্রিস্টানদের নির্মম প্রতারণায় সমূলে উৎখাত হয়ে ভেসে যায় লাখ লাখ মুসলমানদেরই বুকের তাজা রক্ত স্রোতে। ” এটাই হচ্ছে এপ্রিল ফুলের বা পহেলা এপ্রিলের নির্মম ইতিহাস।
কাজেই এদিনের ইতিহাস থেকে প্রত্যেক মুসলমান নর ও নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- হাক্বীক্বীভাবে ইহুদী-খ্রিস্টানদের ইসলাম বিরোধী ও মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাব সম্পর্কে শিক্ষা নেয়া। তাদের সম্পর্কে সচেতন হওয়া। তাদের প্রতিহতকরণে জজবা পয়দা করা। পাশাপাশি সমস্ত মুসলমান পুরুষ-মহিলা, ছোট-বড় সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব হলো, পহেলা এপ্রিল বা এপ্রিল ফুল পালন করা থেকে নিজে বিরত থাকা এবং অন্যকেও বিরত রাখা। এবং ইহুদী-খ্রিস্টানদের মুহব্বত থেকে আন্তরিকভাবে দূরে থাকা কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যে ব্যক্তি কাফির-মুশরিকদের সাথে মিল রাখবে সে তাদেরই দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে। ’
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন “যে ধোঁকা দেয় বা প্রতারণা করে সে আমার উম্মত নয়। ”
স্মরণ রাখতে হবে যে, ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য ‘পহেলা এপ্রিল’ বা ‘এপ্রিল ফুল’ পালন করা কাট্টা হারাম ও কুফরী।
কারণ এদিনের ইতিহাস হলো- বিধর্মী কর্তৃক চরম প্রতারণা ও ধোঁকামূলক আচরণের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে নির্মমভাবে শহীদ করার ইতিহাস। অর্থাৎ এদিন কাফির-মুশরিকরা মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিয়ে নির্মমভাবে শহীদ করেছে।
কাজেই প্রত্যেক মুসলমান নর ও নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- এদিনের ইতিহাস থেকে হাক্বীক্বীভাবে ইহুদী-খ্রিস্টান তথা বিধর্মীদের ইসলাম বিরোধী ও মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাব সম্পর্কে শিক্ষা নেয়া এবং বিধর্মীদের সম্পর্কে সচেতন হওয়া।
পাশাপাশি সমস্ত মুসলমান পুরুষ-মহিলা, ছোট-বড় সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব হলো, পহেলা এপ্রিল বা এপ্রিল ফুল পালন করা থেকে নিজে বিরত থাকা এবং অন্যকেও বিরত রাখা। (সমাপ্ত)
-মুহম্মদ হুমায়ুন কবির।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












