১০০ টি চমৎকার ঘটনা
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী
ঘটনা-৬০
, ০৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
কিছুক্ষণ পরে সৈন্য সামন্তরা তাদের ঢাল তলোয়ার নিয়ে কি যেন বলে কাঁদতে কাঁদতে সেই তাঁবুটাকে প্রদক্ষিণ করলো। তারপর কিছু সংখ্যক জ্ঞানী সেই তাঁবুটাকে প্রদক্ষিণ করলো। তারাও কাঁদতে কাঁদতে কিছু বলে চলে গেলেন। এরপর আসলো কিছু বৃদ্ধলোক। তারাও তাঁবুটাকে প্রদক্ষিণ করে কিছু বলে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলেন। তারপর কিছু সুন্দরী মহিলা মাথায় স্বর্ণ, মণি, মুক্তার ডালা নিয়ে আসলো। তারাও তাঁবুটাকে প্রদক্ষিণ করে কিছু বলে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো। সবশেষে রোমের বাদশাহ স্বয়ং সেই তাঁবুটাকে প্রদক্ষিণ করে কাঁদতে কাঁদতে কিছু বলে চলে আসলো।
তখন হযরত হাসান বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উযীরকে বললেন, ‘ভাই আমি তো তোমাদের ভাষা বুঝি না। তোমরা কি করলে, কি বললে?’ উযীর বললো, “হে হযরত হাসান বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি! এই তাঁবুর মধ্যে বাদশাহর একটা ছেলে শায়িত আছে। সে খুব উপযুক্ত ছিল। বাদশাহ মনে করেছিল, বাদশাহর পরে সে গদীনশীন হবে। কিন্তু হঠাৎ অসুখে সে মারা যায়। প্রতি বছর শাহযাদার মৃত্যুদিনে বাদশাহ এখানে আসে। আপনি যে সৈন্য সামন্তদের দেখলেন, তারা কি বললো জানেন? তারা বললো, ‘হে শাহযাদা! যদি ঢাল দিয়ে তলোয়ার দিয়ে তোমাকে রক্ষা করা সম্ভব হতো, তাহলে তোমাকে আমরা অবশ্যই রক্ষা করতাম সেই মৃত্যু থেকে। কিন্তু তোমাকে এমন এক অসীম ক্ষমতাধর সত্তা মৃত্যু দিয়েছেন, যাঁর কাছে আমাদের ঢাল তলোয়ারের কোনো মূল্যই নেই!’ এরপর জ্ঞানীরা এসে বললো, ‘হে শাহযাদা! যদি জ্ঞান দিয়ে, আক্বল-সমঝ দিয়ে তোমাকে রক্ষা করা সম্ভব হতো, আমরা রক্ষা করতাম। কিন্তু যিনি তোমাকে নিয়ে গিয়েছেন উনার কাছে আমাদের এইসব জ্ঞান তুচ্ছ!’ এরপর বৃদ্ধলোকেরা বললো, ‘হে শাহযাদা! যদি কান্নাকাটি করে, মায়া মুহব্বত করে তোমাকে রক্ষা করা সম্ভব হতো, আমরা রক্ষা করতাম। কিন্তু যিনি তোমাকে নিয়ে গিয়েছেন উনার কাছে আমাদের কান্নাকাটি, আহাজারি মূল্যহীন!’ এরপর মহিলারা বললো, ‘হে শাহযাদা! যদি সৌন্দর্য দিয়ে, সম্পদ দিয়ে তোমাকে রক্ষা করা সম্ভব হতো, আমরা রক্ষা করতাম। কিন্তু তোমাকে যিনি নিয়ে গিয়েছেন, উনার কাছে এইগুলো নিতান্তই তুচ্ছ।’ সবশেষে বাদশাহ বললো, ‘হে শাহযাদা! যদি আমার সমস্ত রাজত্বের বিনিময়ে তোমাকে রক্ষা করা সম্ভব হতো, আমি করতাম। কিন্তু যে মহামহিম রব তায়ালা তোমাকে নিয়ে গিয়েছেন, উনার কাছে এইসব ধনসম্পদ রাজত্বের কোনই মূল্য নেই। কাজেই তোমাকে রেখে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোনো পথ নেই।’
এই ঘটনা হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার উপর গভীর প্রভাব ফেললো। সত্যিই তো দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী। এত মুহাব্বতের পরিবার-পরিজন, কষ্টার্জিত ধন-সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি কোনো কিছুই মৃত্যুকে আটকাতে পারবে না। একমাত্র নেক আমল ছাড়া আর কোনকিছুই কোনো কাজে আসবে না। তিনি খালিছ তওবা করলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি রেযামন্দি মুবারক হাছিল করার কোশেশ শুরু করলেন। সুবহানাল্লাহ!
ইনশাআল্লাহ চলবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৫)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত রজব মাস হলেন মহান আল্লাহ পাক উনার মাস
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত উম্মে সুরাইকা দাওসিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












