ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযিমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (৫)
, ২৩ শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৭ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১০ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
দীদার মুবারক পেয়ে ধন্য হলেন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা:
তারপর তৃতীয় আসমানে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম উনাকে দেখতে পেলাম। আমি উনাকে সালাম দিলাম। তিনি আমার সালামের জবাব দিয়ে বললেন: ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার প্রতি মুবারকবাদ।
অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে নিয়ে চতুর্থ আসমানে আরোহণ করলেন। সেখানে হযরত ইদরিস আলাইহিস সালাম তিনি অবস্থান করছিলেন। আমি উনাকে সালাম দিলাম। তিনি আমার সালামের জবাব দিয়ে বললেন: ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার প্রতি মুবারকবাদ।
অতঃপর আমরা পঞ্চম আসমানে আরোহণ করলাম। সেখানে হযরত হারূন আলাইহিস সালাম উনাকে দেখতে পেলাম এবং উনাকে সালাম দিলাম। তিনি আমার সালামের জবাব দিলেন এবং বললেন: ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার প্রতি মুবারকবাদ।
অতঃপর আমরা ষষ্ঠ আসমানে আরোহণ করলাম, সেখানে হযরত মূসা কালিমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে দেখতে পেলাম। আমি উনাকে সালাম দিলাম। তিনি আমার সালামের জবাব দিলেন এবং বললেন: আপনার প্রতি মুবারকবাদ।
হযরত মূসা কালিমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, লোকেরা বলে খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আমার বড় মর্যাদা রয়েছে। অথচ আমার সামনে যিনি তাশরীফ এনেছেন উনার মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সর্বাধিক প্রিয়, পছন্দনীয়। তিনি হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ। উনার মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত ও মাক্বাম খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার পরেই। অর্থাৎ তিনি শুধু খালিক্ব, মালিক রব মহান আল্লাহ পাক নন; এছাড়া সবই। সুবহানাল্লাহ!
এরপর আমরা সপ্তম আসমানে আরোহণ করলাম। সেখানে হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে দেখলাম। তিনি স্বীয় পিঠ মুবারক বাইতুল মা’মুরে লাগিয়ে বসে রয়েছেন। আমি বললাম, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! ইনি কে? তিনি বললেন: ইনি হচ্ছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম। উনার সাথে উনার ক্বওমের কিছু লোক ছিলেন। আমি উনাদের সালাম দিলাম অতঃপর উনারা সালামের জবাব দিলেন।
খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি আমার উম্মতকে দু’ভাগে বিভক্ত দেখলাম। অর্ধেকের কাপড় ছিলো বকের মতো সাদা এবং বাকি অর্ধেকের কাপড় ছিলো অত্যন্ত কালো। তিনি বলেন, আমি বাইতুল মা’মুরে গেলাম। সাদা পোশাকযুক্ত লোক সবাই আমার পিছনে পিছনে গেল এবং কালো পোশাকধারী লোকদেরকে আমার সাথে যেতে দেয়া হলো না। আর আমি ছিলাম সবার থেকে অনেক অনেক উত্তম (শ্রেষ্ঠ) মর্যাদার অধিকারী। অতঃপর বাইতুল মা’মুর শরীফ-এ নামায আদায় করলাম। অতঃপর আমি সেখান থেকে বের হলে আমার পিছনে সবাই বের হয়ে আসেন। খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “এই বাইতুল মা’মুর শরীফ-এ প্রত্যেক দিন ৭০ হাজার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নামায পড়ে থাকেন। কিন্তু যাঁরা একদিন নামায পড়েছেন উনারা ক্বিয়ামত পর্যন্ত এখানে আর আসবেন না। ”
জান্নাত, জাহান্নাম ও অন্যান্য বিষয় পরিদর্শন:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “অতঃপর আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় উঠিয়ে নেয়া হয়। যার প্রত্যেকটি পাতা এতো বড় যে, আমার সমস্ত উম্মতকে ঢেকে ফেলবে। তাতে একটি নহর প্রবাহিত ছিলো যার নাম সালসাবীল। এর থেকে দুটি প্রস্রবণ বের হয়েছে। একটি হচ্ছে কাওছার। ” এই কাওছার সম্পর্কে খালিক্ব, মালিক রব মহান আল্লাহ পাক সূরা কাওছারের মধ্যে বলেছেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে ‘কাওছার’ হাদিয়া করেছি। ”
কাওছারের লক্ষ কোটি অর্থ রয়েছে তার মধ্যে দুটি অর্থ প্রধান একটা হচ্ছে, ‘হাউজে কাওছার’ যা বর্ণনা করা হলো আর দ্বিতীয় হচ্ছে ‘খাইরে কাছীর’। অর্থাৎ খালিক্ব, মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত ভালাই হাদিয়া করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
আর একটি হচ্ছে ‘নহরে রহমত। ’ আমি সেই ঝর্ণায় গোসল মুবারক করলাম অর্থাৎ সেই রহমত আমাকে আবৃত করলো। আর আমার উম্মতের পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে যদি তারা এই পবিত্র নহর পেতে পারে।
অতঃপর আমাকে জান্নাতের দিকে তা’যীমের সাথে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে আমি একটি হুর দেখলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কার? উত্তরে সে বলল, আমি হলাম হযরত যায়িদ ইবনে হারিছা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার। আমি সেখানে বিশুদ্ধ নষ্ট না হওয়া পানি, স্বাদ পরিবর্তন না হওয়া দুধ, নেশাহীন সুস্বাদু শরাব এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মধুর নহর দেখতে পেলাম। জান্নাতের ডালিম ফল ছিলো বড় বড় বালতির সমান। পাখিগুলো তোমাদের এই তক্তা ও কাঠের ফালির মত। নিশ্চয়ই খালিক্ব, মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নেককার বান্দাদের জন্যেই ওইসব নিয়ামত প্রস্তুত করে রেখেছেন যা কোন চক্ষু দর্শন করেনি, কোন কর্ণ শ্রবণ করেনি এবং কোন অন্তরে কল্পনাও জাগেনি। সুবহানাল্লাহ!
-আল্লামা সাইয়্যিদ আহমদ শাবীব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












