ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযীমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (৬)
, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
জান্নাত, জাহান্নাম ও অন্যান্য বিষয় পরিদর্শন:
আসমানে সফরের সময়ই ছাহিবে মিরাজ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বেহেশত, দোযখ প্রত্যক্ষ করেন এবং বিভিন্ন পাপের কি রকম শাস্তি পরকালে হবে তা তিনি প্রত্যক্ষ করেন। সুদ, ঘুষ, অত্যাচার, নামায বর্জন, ইয়াতিমের মাল ভক্ষণ, প্রতিবেশীদের উপর জুলুম, স্বামীর অবাধ্যতা, বেপর্দা ও অন্য পুরুষকে নিজের রূপ প্রদর্শন, জিনা-ব্যভিচার ইত্যাদির শাস্তি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বচক্ষে দেখেন। বেহেশতে উম্মুল মু’মিনীন আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাক্বাম, হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মাক্বাম, হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নালাইন মুবারকের শব্দ এসব দেখেন এবং শুনেন।
এরপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি খালিক্ব, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সিদরাতুল মুনতাহা বা সীমান্তের কুলবৃক্ষের নিকট নিয়ে যান।
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “এই বৃক্ষের পাতাগুলো হাতির কানের ন্যায় বড় এবং ফলগুলো উহুদ পাহাড়ের মত। শহীদগণের রূহ মুবারক সবুজ পাখির ছূরতে উক্ত বৃক্ষের ফল ভক্ষণ করছেন। ”
হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার সীমানা:
সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট থেকে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বিদায় নিলেন এবং বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি যদি ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ থেকে এক চুল পরিমাণ সম্মুখে অগ্রসর হই তাহলে আমার ছয়শত থেকে ছয় হাজার পাখা নূরের তাজাল্লীতে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে। ” সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মতো কেউই নেই, ছিল না ও হবেও না। কারণ তিনি হচ্ছেন খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব। নিছবত, তায়াল্লুক, সম্পর্ক, অবস্থান সবকিছুই দায়িমীভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার সঙ্গে।
এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন-
لِىْ مَعَ اللهِ وَقْتٌ لَايَسْعَنِ فِيْهِ مَلَكٌ مُّقَرَّبٌ وَلَانَبِىٌّ مُّرْسَلْ
“মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে আমার প্রতিটি মুহূর্ত বা সময় এমনভাবে অতিবাহিত হয়, যেখানে কোনো হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম ও কোনো নৈকট্যশীল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরও স্থান নেই। ” সুবহানাল্লাহ!
মূলত মহান আল্লাহ পাক উনার বিষয়গুলো যেমন কুদরতের অন্তর্ভুক্ত; একইভাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়গুলোও কুদরতের অধীন। উনার সৃষ্টি, অবস্থান, ইসরা, মি’রাজ শরীফ ইত্যাদি সবকিছুই কুদরতের অন্তর্ভুক্ত। এক কথায় উনার পরিচয়- উনি শুধু খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক নন, এছাড়া সবদিক থেকে তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার গুণে গুণান্বিত। যা মিরাজ শরীফ-এর মাধ্যমে উনার বেমেছাল শান মুবারক-এর যৎকিঞ্চিৎ প্রকাশ করা হয়েছে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, যেখানে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাইয়্যিদ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি জ্বলে-পুড়ে যান, উনার সীমানা শেষ; সেখান থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ভ্রমণ শুরু। সুবহানাল্লাহ!
রফরফে আরোহন:
হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বিদায়ের পর ‘রফরফ’ নামক একটি বাহন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে হাযির হলো। তিনি বাহনে তাশরীফ নিলেন। এরপর ‘রফরফ’ মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে সত্তর হাজার নূরের পর্দা মুবারক পাড়ি দিলেন। এক একটি পর্দা মুবারকের ঘনত্ব ছিল পাঁচশত বৎসরের রাস্তা।
আরশে মুয়াল্লায় অবতরণ:
এরপর মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘আরশে মুয়াল্লায়’ পৌঁছলেন। এ পথে যখন তিনি একাই যাচ্ছেন; তখন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার গলা মুবারকের আওয়াজ শুনতে পেলেন। আর হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একান্ত ছাহিব বা সঙ্গী খাদিম। দুনিয়া, আখিরাত, হাশরে, জান্নাতে এমনকি মি’রাজ শরীফ উনার সময়েও তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছাহিব ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
-আল্লামা সাইয়্যিদ আহমদ শাবীব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












