তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৩)
, ২১ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৪ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ০৭ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
(আল মুক্বদ্দিমাহ্)اَلْمُقَدِّمَةُ
اَلْـحَمْدُ وَالصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ لِشَيْخِنَا مَـمْدُوْحْ مُرْشِدْ قِبْلَةْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ سُلْطَانٍ نَّصِيْـرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَعَلـٰى اَهْلِ بَيْتِهِ الْكَرِيْـمِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ وَالصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ عَلـٰى سَيّـِدِ الْاَنْۢبِيَاءِ وَالْـمُرْسَلِـيْـنَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلـٰى اَهْلِ بَـيْـتِهِ الْكَرِيْـمِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ وَالْـحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِـيْـنَ. اَمَّا بَعْدُ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ سُفْيَانَ رَحَمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَنَّ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَلْفَارُوْقُ الْاَعْظَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ لِحَضْرَتْ كَعْبٍ رَحْمَةُ اللهُ عَلَيْهِ مَنْ اَرْبَابُ الْعِلْمِ قَالَ اَلَّذِيْنَ يَعْمَلُوْنَ بِمَا يَعْلَمُوْنَ قَالَ فَمَا اَخْرَجَ الْعِلْمَ مِنْ قُلُوْبِ الْعُلَمَاءِ قَالَ اَلطَّمَعُ
“হযরত সুফিয়ান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি হযরত কা’ব আহবার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন, আলিম কে? তিনি জবাব দিলেন- যিনি ইলিম অনুযায়ী আমল করে থাকেন, তিনিই হলেন আলিম। কোন্ বিষয়টা আলিমের অন্তর থেকে ইলিমকে বের করে দেয়? দুনিয়ার লোভ, দুনিয়ার মোহ, গাইরুল্লাহর লোভ, গাইরুল্লাহর মোহ আলেমের অন্তর থেকে ইলিম বের করে দেয়। ” না‘ঊযুবিল্লাহ! (দারিমী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “বর্তমানে ওলামায়ে সূ’দেরকে চিনা সহজ হয়ে গেছে। কেননা, মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নামে সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ, গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন, নারী নেতৃত্ব, হরতাল, লংমার্চ, কুশপুত্তলিকা দাহ, ব্লাশফেমী আইন চাওয়া, টিভি, সিনেমা, মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ছবি তোলা, আঁকা, বানানো, রাখা, গান-বাজনা, বাঁশি-সূর, বাদ্যযন্ত্র, খেলা-ধুলা, বেপর্দা হওয়া, মন্দির ও মূর্তি পাহারা দেয়া, হিন্দুদের পূজায় যাওয়া, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করা, সমর্থন করা, সম্মতি প্রকাশ করা, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করা, তাদেরকে সম্মান করা, তা’যীম করা, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করা, তাদেরকে সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা, বাহ বাহ দেয়া, বেশি বেশি মূর্তি তৈরী করতে বলা, বেশি বেশি পূজা করতে বলা, মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, ইহুদী, মজূসী, মুশরিক পরস্পর পরস্পরকে ভাই ভাই বলা, মুশরিকদের গীতা পাঠ করা এবং এই সকল কুফরী কাজ করে আনন্দ প্রকাশ করা ও শুকুরগুজারী করা ইত্যাদি সমস্ত কিছু সম্পূর্ণরূপে হারাম, নাজায়িয ও কাট্টা কুফরী। কাজেই, যে সকল নামধারী আলেম-ওলামা, ছূফী-দরবেশ, পীর ছাহেব, মুফতি, মুহাদ্দিছ, খতীব, ওয়ায়েয, ইসলামী চিন্তাবিদ দাবীদাররা এ সকল হারাম, নাজায়িয ও কাট্টা কুফরী-শিরকী কাজ করেছে বা করছে; তারা কস্মিনকালেও আলিম নয়; বরং এরাই ওলামায়ে সূ’দের অন্তর্ভুক্ত। সম্মানিত শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও কাট্টা মুরতাদ হয়েছে। আর যারা দ্বীন ইসলাম উনার নামে গণতন্ত্র করে ও জায়েয মনে করে, বেপর্দা হয় এবং বলে এতো পর্দা প্রয়োজন নেই, ছবি তোলে এবং বলে বর্তমানে ছবি প্রয়োজন রয়েছে, এ ব্যতীত সম্প্রীতির দোহাই দিয়ে হিন্দু-মুশরিক, খৃষ্টান, ইহুদী, বৌদ্ধসহ সকল বিধর্মীদের সাথে বন্ধুত্ব করে। এরাও সম্মানিত শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী প্রত্যেকেই কাট্টা কাফির ও কাট্টা মুরতাদ হয়েছে। এবং তাদেরকে যারা অনুসরণ করছে এবং করবে তাদের প্রতিও একই হুকুম বর্তাবে এবং যারা তাদের কুফরী সম্পর্কে একমত পোষণ করবে তাদের প্রতিও একই হুকুম বর্তাবে। এদের ইমামতিতে নামায পড়া জায়েয নেই। কারণ, এরা মুরতাদ ও কাফির হয়ে গেছে। কেউ যদি তাদের পিছনে নামায পড়ে, তাহলে তার নামায কখনোই হবে না। তাকে নামায অবশ্যই দোহরায়ে পড়তে হবে। অন্যথায় সে শুধুমাত্র নামায তরকের গুনাহে গুনাহগারই হবে না; বরং সেও মুরতাদ ও কাফির হবে।
এ সকল ওলামায়ে সূ’রা হচ্ছে সৃষ্টির সর্বনিকৃষ্ট জীব। এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَلْاَحْوَصَ بْنِ حَكِيْمِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ اَبِيْهِ قَالَ سَاَلَ رَجُلٌ اَلنَّبِىَّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الشَّرِّ فَقَالَ لَا تَسْاَلُوْنِىْ عَنِ الشَّرِّ وَسَلُوْنِىْ عَنِ الْخَيْرِ يَقُوْلُهَا ثَلَاثًا ثُمَّ قَالَ اَلَا اِنَّ شَرَّ الشَّرِّ شِرَارُ الْعُلَمَاءِ وَاِنَّ خَيْرَ الْخَيْرِ خِيَارُ الْعُلَمَاءِ
“হযরত আহ্ওয়াছ ইবনে হাকীম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার সম্মনিত পিতা উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এক ব্যক্তি খারাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আমাকে আপনারা খারাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন না। আমাকে ভালো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এটা তিনবার ইরশাদ মুবারক করলেন। (তখন ঐ ব্যক্তি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা যদি খারাপটা না জানি, তাহলে কি করে খারাপটা থেকে বেঁচে থাকবো?) অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা সাবধান হয়ে যাও, সতর্ক হয়ে যাও, নিশ্চয়ই! সৃষ্টির সর্বনিকৃষ্ট হচ্ছে- ওলামায়ে সূ’, দুনিয়াদার আলিম। আর সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছেন- উলামায়ে হক্কানী-রব্বানী উনারা। ” (দারিমী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরক্বাত শরীফ)
(অসমাপ্ত)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












