নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত মুবারক: (৭)
, ১১ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৯ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১২ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন,
قُـلْ لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَـيْـهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَـوَدَّةَ فِـي الْقُرْبٰـى ۗ وَمَنْ يَـــقْــتَـرِفْ حَسَنَةً نَّــزِدْ لَهٗ فِــيْـهَا حُسْنًا ۚ إِنَّ اللّٰـهَ غَـفُوْرٌ شَكُـوْرٌ ﴿২৩﴾ سورة الشورى
(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমি তোমাদের কাছে কোনো বিনিময় চাচ্ছি না, নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজন (আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) উনাদেরকে মুহাব্বত মুবারক করা ব্যতীত। আর যে ব্যক্তি (এই) নেক কাজ করবে আমি (মহান আল্লাহ পাক) তার নেকীগুলো দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়িয়ে দিবো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমাশীল এবং নেক কাজে প্রতিদান দানকারী। [সূরা শূরা শরীফ: ২৩]
উপরোক্ত আয়াত শরীফে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে যে বিনিময় চাওয়ার কথা বলা হয়েছে এই বিনিময় চাওয়ার বিষয়টি মূলত স্বাভাবিক নয়, চাইলে তা দেয়া কুল কায়িনাতের কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তবে যেহেতু সমস্ত মুসলমানদেরকে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক হাছিল করতে হবে তাই সকলের দায়িত্ব-কর্তব্যের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বিনিময়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহাব্বত, তা’যীম-তাকরীম করার জন্য পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাদেরকে আদেশ মুবারক করেছেন তেমনিভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফেও উনাদেরকে যারা মুহাব্বত করবেন, অনুসরণ করবেন, তা’যীম-তাকরীম করবেন উনাদেরকে অনেক ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা হাছিলের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ ابْنِ عَـبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ أَحِبُّوا اللّٰهَ لِمَا يَـغْذُوْكُمْ مِّنْ نِعْمَةٍ وَأَحِبُّـوْنـِيْ لِـحُبِّ اللّٰهِ وَأَحِبُّـوْا أَهْلَ بَــيْـتِـيْ لِـحُبـِّـيْ.
(رواه ترمذى والـحاكم والطبرانى والبـيـهقى وجامع الاحاديث وجـمع الـجوامع للسيوتى وكنز العمال و الـجامع الاصول من احاديث الرسول وفضائل الصحابة واحـمد ابن حنبل)
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহাব্বত করো যেহেতু তিনি স্বীয় অনুগ্রহে তোমাদেরকে রিযিক দান করেন এবং তোমরা আমাকে মুহাব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহাব্বত করার জন্য এবং আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহাব্বত করো আমাকে মুহাব্বত করার জন্য।
[তিরমিযী, ত্ববারানী, বাইহাক্বী শরীফ ইত্যাদি]
তাহলে দেখা যাচ্ছে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহাব্বত করলে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহাব্বত করা হয় আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহাব্বত করা হলে মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহাব্বত করা হয়। আর মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহাব্বত করা হলে ইহকাল ও পরকালে কামিয়াবী লাভ করা সম্ভব হবে। সুবহানাল্লাহ!
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বতকারীদের সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلـِىٍّ عَلَـيْهِ السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَتْــبَــتُكُمْ عَلَى الصِّرَاطِ اَشَدُّكُمْ حُـبًّا لِاَهْلِ بَــيْـتـِىْ وَ لِاَصْحَابِـىْ. (ابن عدى والديلمى والصواعق الـمحرقة وكنز العمال)
হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের মধ্যে তারাই সঠিক পথের উপর দৃঢ় থাকতে পারবে, যারা আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহুম উনাদেরকে সর্বাধিক মুহাব্বত করবে। সুবহানাল্লাহ!
[দায়লামী ও কানযুল উম্মাল শরীফ ইত্যাদি]
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُـرَيْــرَةَ رَضِىَ اللّٰهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَــيْـــرُكُـمْ خَيْــرُكُمْ لِاَهْــلِـىْ مِنْۢ بَـــعْـدِىْ. (مشکوة)
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে ব্যক্তি আমার পরে আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিকট সর্বোত্তম। সুবহানাল্লাহ!
[মিশকাত শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম শরীফ ৩/৩৫২, মাজমাউয যাওয়ায়িদ শরীফ ৯/১৭৪ ইত্যাদি]
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












