নছীহতে ক্বায়িম মাক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
, ১৯ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ০২ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১৮ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
দুনিয়া অন্বেষণকারী না হয়ে পরকাল অন্বেষণকারী হও
১৯শে মুহররম, ১৪৪২ হিজরী (ইয়াওমুল ইসনাইন শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ شَدَّادٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ سَـمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ الدُّنْـيَا عَرَضٌ حَاضِرٌ يَأْكُلُ مِنْـهَا الْبَـرُّ وَالْفَاجِرُ وَإِنَّ الْاٰخِرَةَ وَعَدٌ صَادِقٌ يـَحْكُمُ فِيْهَا مَلِكٌ عَادِلٌ قَادِرٌ يُـحِقُّ فِيْهَا الْـحَقَّ وَيُـبْطِلُ الْبَاطِلَ كُوْنُـوْا مِنْ أَبْـنَاءِ الْاٰخِرَةِ وَلَا تَكُوْنُـوْا مِنْ أَبْـنَاءِ الدُّنْـيَا فَإِنَّ كُلَّ أُمٍّ يَـتْـبَـعُهَا وَلَدُهَا. (مشكوة الـمصابيح)
হযরত শাদ্দাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, হে মানব জাতি! নিশ্চয়ই দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী আবাসস্থল। এখান থেকে নেককার, বদকার সকলেই ভোগ করে থাকে। আর পরকাল হচ্ছে একটি সত্য প্রতিশ্রুতি। সেখানে বিচার করবেন যিনি ক্ষমতাসম্পন্ন, ইনসাফগার মালিক বা বাদশাহ। সেখানে তিনি সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করবেন আর বাতিলকে মিটিয়ে দিবেন, তোমরা পরকালের সন্তান হয়ে যাও এবং দুনিয়ার সন্তান হয়ো না; নিশ্চয়ই প্রত্যেক সন্তান তার মায়ের অনুগামী হয়ে থাকে।
[মিশকাতুল মাছাবীহ শরীফ]
অর্থাৎ যারা সত্যের উপর থাকবেন উনাদেরকেই মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করবেন তথা কামিয়াবী দান করবেন। আর বাতিল মত-পথের উপর যারা আমল করবে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। পরকালে তারা মারাও যাবেনা আবার বাঁচার মত বাঁচতেও পারবে না, শাস্তি ভোগ করতেই থাকবে। আর যারা হক্ব মত-পথের উপর চলবে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। সুতরাং প্রত্যেককে সেই আমল করতে হবে যে আমল পরকালে নাজাতের কারণ হবে। আর দুনিয়া লাভের জন্য আমল করা যাবে না। দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী আর পরকাল স্থায়ী আবাসস্থল। দুনিয়ার জন্য আমল করলে তা পরকালে নিয়ে যেতে পারবে না।
এখন যদি কেউ দুনিয়ার সন্তান হয় তাহলে সে দুনিয়া তালাশকারী বা দুনিয়া গ্রহণকারী হবে। আর যদি পরকালের সন্তান হয় তাহলে সে পরকালকেই গ্রহণ করবে, পরকালের হিসাব-কিতাব ও আযাবকে ভয় করে পরকালের জন্য আমল করবে।
নেককার-বদকার সকলেই দুনিয়াবী সম্পদ ভোগ করে। মহান আল্লাহ পাক প্রত্যেকের অবস্থানস্থল এবং রিযিক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। হালাল উপার্জনের লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম করার ফলে যে রিযিক বান্দার কাছে পৌঁছবে, উপার্জনের পিছনে কঠোর পরিশ্রম না করে শুধুমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্যতার মাধ্যমেও সেই রিযিক তার কাছে পৌঁছবে। যেভাবেই রিযিক অন্বেষণ করুক যতটুকু রিযিক তার জন্য নির্ধারিত ততটুকুই সে ভোগ করবে। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ أَبِـي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ الرِّزْقَ لَيَطْلُبُ الْعَبْدَ كَمَا يَطْلُبُهٗ أَجَلُهٗ. (رواه ابو نعيم فى الـحليه)
হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই রিযিক বান্দাকে এমনভাবে তালাশ করে যেমন তার মৃত্যু তাকে তালাশ করে।
কাজেই, রিযিক লাভের জন্য দুনিয়া তালাশী হওয়া উচিত হবে না বরং পরকালের জন্য আমল করতে হবে। পরকালের আমল হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনাকে স্মরণে রেখে উনার আদেশ-নিষেধ মানা এবং এর পাশাপাশি উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারকের অনুসরণ করা। এই আমলগুলো করলে কুদরতীভাবে রিযিক লাভ করা সম্ভব হবে এবং দুনিয়াবী বালা-মুছিবত দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ! কাজেই মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদেরকে দুনিয়ার সন্তান না হয়ে পরকালের সন্তান হওয়ার তাওফীক্ব দান করেন। (আমীন)
ইনশাআল্লাহ চলবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












