নাগরিকের সরকারের পরিবর্তে দেশে চলছে রাজনৈতিক সরকার। দেশে নাগরিকের সরকার তবে কোথায়?
, ১০ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২১ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ০৭ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মন্তব্য কলাম
১৯(২) নং ধারায় বর্ণিত রয়েছে, “মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসামন্য বিলোপ করার জন্য, নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ-সুবিধা দান নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”
প্রসঙ্গত প্রশ্ন উঠে, স্বাধীনতা উত্তর কোনো সরকারেই সংবিধানে উল্লিখিত অনুচ্ছেদদ্বয়ের অনুশীলন আদৌ হয়েছে কী?
বরং স্বাধীনতা অব্যবহিত পরেই দেখা গিয়েছে দীর্ঘদিনের নিবেদিত মুসলিম লীগার রাতারাতি ভোল পাল্টে শুধু নব্যই নয় বরং অতি উৎসাহী আওয়ামী লীগার হয়ে গেছে।
সে থেকে এ অসুস্থ ও অশালীন প্রতিযোগিতা উত্তরোত্তর বেড়েই চলছে। বিশেষ করে সরকারি কর্মচারীদের মাঝে এ প্রবণতা প্রকট। চক্ষুলজ্জা না রেখে কতো রাতারাতি একটি দলের অনুগতরা ক্ষমতার ফালাবদলে নিজেদের ভোল পাল্টে ফেলতে পারে, তা একমাত্র বাংলাদেশের প্রেক্ষিতেই সম্ভব হতে পারে।
বলাবাহুল্য, এর নেপথ্য কারণও রয়েছে। শাসক দলের লোক হলে ভালো পদ, ভালো পোস্টিং- এ যেনো পূর্ব নির্ধারিত এবং অখ-নীয়।
সম্প্রতি প্রবণতটা এমন দাড়িয়েছে ক্ষমতায় আরোহন করেই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল মনে করে যাদেরকে তারা উঁচু ও লোভনীয় পদ এবং ভালো পোস্টিং পেয়েছে তারা সবাই সাবেক ক্ষমতাসীন দলের কাদের লোক ও অনুগত এবং আস্থাভাজন লোক?
অপরদিকে যারা সে সময়ে অযোগ্যতা ও অক্ষমতার জন্যও পানিশমেন্ট পোস্টিং পেয়েছে তারাও এসে জোরালো কণ্ঠে আওয়াজ তোলে ‘আমি নতুন ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অবিচল, অনুগত বলেই আমাকে সাবেক ক্ষমতাসীন সরকারে এ রকম পানিসমেন্ট পোস্টিং থাকতে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও আমি বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অনুগত থেকেছি। সুতরাং এবারে আমাকে পুরস্কার দেন। ভালো পদ ও পোস্টিং দেন।”
বলাবাহুল্য, বর্তমানে এভাবেই ক্ষমতার পালাবদলে রাজনৈতিক দলের পরিবর্তনের পাশাপাশি ঢালাওভাবে সরকারি চাকুরিজীবীদেরও পদ ও পোস্টিংয়ের পরিবর্তন হয়।
কিন্তু একটা স্বাধীন দেশে এটাই কী কাঙ্খিত?
স্বাধীন দেশে নাগরিকরা রাজনৈতিক বিবেচনায় মূল্যায়িত হবেন কেনো?
তাহলে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি অনুগত, রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত, সরকারি কর্মচারী তথা প্রফেশনালিজম থাকে কোথায়?
এর বিপরীতে তখন কী নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুগত কাহিনীই গড়ে তোলা হয় না? এ কাহিনী তো সংবিধানে বর্ণিত বৈষম্যহীন দৃষ্টি নিয়ে চলতে পারে না। স্বাভাবিকভাবেই এ কাহিনী তখন অনুগত, নিবেদিত অনেক উপ-কাহিনীও তৈরি করে। যা শুধু বিরোধীদেরই বঞ্চিত করে না বরং নিজেদের মধ্যেও মারাত্মক দলীয় কোন্দল তৈরি করে।
বলাবাহুল্য, শুধু সরকারি চাকুরিই নয়, ঠিকাদারি, ব্যবস্থা পারমিট, মিল-ফ্যাক্টরি সব জায়গায়ই একই প্রবণতা কাজ করে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় দেশটা যেনো আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এ দুটো দলেরই করদরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ আমলে যারা অসহযোগিতা অথবা নাশকতা করবে তারা আগামী বিএনপি আমলে পুরস্কৃত হবে। আবার বিগত বিএনপি আমলে যারা অবহেলিত হয়েছে, তারা এসে আওয়ামী আমলে পুরস্কৃত হবে। কিন্তু কথা হচ্ছে, সবাই কী আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপি করে? অথবা করতে হবে?
এ কথা তো স্বাধীন বাংলাদেশের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না। স্বাধীন বাংলাদেশে একজন নাগরিক তার নাগরিক পরিচয়েই স্বাধীনতার সুফল লাভ করবে এটাই বরহক্ব কথা। কিন্তু এর অন্যথা হচ্ছে কেনো?
কেনো আজ মন্ত্রীরা প্রকাশ্যেই বলে বেড়াচ্ছে, “চাকরী দলের লোকই পাবে। তবে পরীক্ষার ভিত্তিতে পাবে।”
বলাবাহুল্য, ক্ষমতাসীন দলের লোকদের চাকরি দেয়ার জন্যই তো সরকার পরিচালিত হতে পারে না। সংবিধান অনুযায়ী শপথ তাহলে কোথায় থাকে?
মন্ত্রী-এমপিরা যে সংবিধানে বর্ণিত বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততার উপর এবং কারো প্রতি অনুরাগ বা বিরাগ না হবার ওয়াদার ভিত্তিতে শপথ নিলেন সে শপথের তাহলে কী হবে?
রাজনীতি করা অথবা না করা নাগরিকের ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়। কিন্তু প্রাপ্য সুবিধা পেতে হলেও রাজনৈতিক পরিচয় বহন করতে হবে অথবা কোনো দলের তোষামোদকারী হতে হবে- এ ধরনের প্রভাব-বলয় তৈরি হবে কেনো?
কেনো ক্ষমতাসীন সরকারেরা এ প্রভাব-বলয়কে দিন দিন আরো প্রলম্বিত করবেন? কেনো এর গ্যাঁড়াকলে পরে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হাসফাঁস করবেন?
বলাবাহুল্য কোনো রাজনৈতিক সরকারই এসব প্রশ্নের অবসানে আন্তরিক হবেন, এমনটি আশা করা দুরূহ।
বলাবাহুল্য, নাগরিকদের নিজস্ব প্রয়োজনেই এসব নাগরিক ভাবনা সতেজ ও সক্রিয় করতে হবে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নারীরা এখন প্রকাশ্যে সিগারেট থেকে সব ধরণের মাদক সেবন ও বিকি-কিনিতে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গেছে। রক্ষা পেতে নারীদের জন্য সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার বিকল্প নেই
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রন করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসকরা লাভবান হলেও চিকিৎসার উচ্চ ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতিবছর দারিদ্রসীমায় চলে যাচ্ছে অর্ধকোটি মানুষ চিকিৎসার সরকারি ব্যয় আগের তুলনায় বেড়েছে। তারপরও মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বেড়েই চলেছে। যার বড় একটি কারণ চিকিৎসকদের একটি অংশের অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ সরকারকে সত্ত্বর ব্যবস্থা নিতে হবে।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
খাবারের নামে আমরা কী খাচ্ছি? ভেজাল খাবারে দেশব্যাপী চলছে নীরব গণহত্যা। ভেজাল দমনে ইসলামী মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
রক্ত নিয়ে বাণিজ্য- মেশানো হচ্ছে স্যালাইন, লবণ পবিত্র দ্বীন ইসলামী মূল্যবোধের প্রসার ব্যতীত রক্ষা নেই
২২ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকগুলো আদৌ ইসলামী নয়। সুদবিহীন ব্যাংক নয়। দ্বীনদার, পরহেজগার মুসলমানের জন্য সুদবিহীন ইসলামী ব্যাংকের সুবিধা ও সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গঃ জবরদখলে থাকা সরকারি সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, খাস জমি অথবা রেলওয়ের বেহাত জমি। পরিত্যক্ত জমির হিসাব ভূমি মন্ত্রণালয়ে নেই। উদ্ধারেও সক্রিয় ও জোরদার তৎপরতা নেই।
২০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সবজি উৎপাদন ১২ বছরে ৭ গুন বাড়লেও বাড়ছেনা বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন। উৎপাদন পর্যায়েই সবজিতে মিশছে ২০ গুন বিষাক্ত কীটনাশক। ক্যান্সার, প্যারালাইসিস, কিডনি রোগ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছেই।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভূমি সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় আইন-কানুন জানেনা দেশের সিংহভাগ মানুষ পাঠ্যপুস্তকে ভূমি বিষয়ক আইন ও নিয়মকানুন এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্ভাবনাময় স্ট্রবেরি চাষ সমৃদ্ধি অর্জনের নতুন সোপান। অশিক্ষিত-শিক্ষিত সব বেকারেরই ভাগ্য বদলের উছীলা।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)