নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চিকিৎসা পদ্ধতি- ঝাড়-ফুঁক ও তাবীয (৪)
, ০১ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৮ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
عَنْ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ اَلصّـِدِّيْقَةِ عَلَيـْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيـْهَا السَّلَامُ (أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا اشْتَكٰى يَقْرَأُ عَلٰى نَفْسِهٖ بِالْمُعَوِّذَاتِ وَيَنْفُثُ فَلَمَّا اشْتَدَّ وَجَعُه كُنْتُ أَقْرَأُ عَلَيْهِ وَأَمْسَحُ عَنْهُ بِيَدِهٖ رَجَاءَ بَرَكَتِهَا.
অর্থ: হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, যখনই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত নূরুল ইহ্সান মুবারক অর্থাৎ মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করতেন তখনই (উম্মতকে তা’লীম দেয়ার জন্য) তিনি বিভিন্ন দোয়া-কালাম মুবারক পাঠ করে স্বীয় নূরুল মুজাসসাম মুবারক বা জিসিম মুবারকে মহাসম্মানিত নূরুছ ছহ্হাহ্ মুবারক দম বা ফুঁক মুবারক দিতেন। তারপর যখন মহাসম্মানিত নূরুল ইহ্সান মুবারক বা মারিদ্বী শান মুবারক বৃদ্ধি পায়, তখন আমি তা পাঠ করে উনার মহাসম্মানিত নূরুল মাগফিরাত মুবারক (হাত মুবারকে) দিয়ে নূরুল মুজাসসাম মুবারক বা জিসিম মুবারকে বরকতের উদ্দেশ্যে মাসেহ করে দিতাম। (আবূ দাউদ শরীফ: বাবু কাইফার রুক্বা)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهٖ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُعَلِّمُهُمْ مِّنَ الْفَزَعِ كَلِمَاتٍ أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهٖ وَشَرِّ عِبَادِهٖ وَمِنْ هَـمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَّـحْضُرُوْنِ. وَكَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرٍو رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يُعَلِّمُهُنَّ مَنْ عَقَلَ مِنْ بَنِيْهِ وَمَنْ لَّـمْ يَعْقِلْ كَتَبَه فَأَعْلَقَه عَلَيْهِ
অর্থ: হযরত আমর ইবনে শুয়াইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার সম্মানিত পিতা ও দাদা থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিপদ-আপদের সময় এ দোয়া পড়ার শিক্ষা দিতেন।
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهٖ وَشَرِّ عِبَادِهٖ وَمِنْ هَـمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَّـحْضُرُوْنِ
আর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার বয়স্ক সন্তানদেরকে এই দোয়া শিখিয়ে দিতেন। আর ছোট বাচ্চাদের গলায় তাবীয বানিয়ে ঝুলিয়ে দিতেন। (আবূ দাউদ শরীফ: বাবু কাইফার রুক্বা)
পরবর্তীতে হযরত ইমাম মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সেই পন্থা-পদ্ধতি, পথকেই অনুসরণ করেছেন। অদ্যাবধি তা অব্যাহত রয়েছে।
কাজেই, তাবীয ব্যবহার করা যে সুন্নত, তা অকাট্য ও স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ كُنَّا نَرْقِيْ فِي الْـجَاهِلِيَّةِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَيْفَ تَرَى فِي ذٰلِكَ فَقَالَ اَعْرِضُوْا عَلَىَّ رُقَاكُمْ لاَ بَأْسَ بِالرُّقٰى مَا لَـمْ يَكُنْ فِيْهِ شِرْكٌ.
অর্থ: হযরত আওফ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা জাহিলী যুগে ঝাড়-ফুঁক করতাম। আমরা বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের এ ঝাড়-ফুঁক বিষয়ে আপনি কি বলেন? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের ঝাড়-ফুঁক করার দোয়া আমার কাছে পেশ করুন। কেননা, যে দোয়া-কালাম শিরকমুক্ত তাতে কোন ক্ষতি নেই।
কাজেই, দোয়া-কালাম যা পড়ে ঝাড়-ফুঁক করা হয় তা অবশ্যই কুফরী শিরকী মুক্ত হতে হবে। কেননা শিরকী কুফরী বাক্য দ্বারা ঝাড় ফুঁক করা কিংবা তাবীযরূপে তা ব্যবহার করা কখনোই জায়িয নেই। বরং তা কুফরী শিরকীর অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, ঝাড়-ফুঁক করা এবং তাবীয দেয়া ও ব্যবহার করা যে সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত তাতে বিষয়ে ইখতিলাফের কোন অবকাশ নেই।
মহান আল্লাহ পাক তিনি মহান মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসীলায় উম্মাহকে সঠিক ইলিম দান করুন এবং ঝাড়-ফুঁক ও তাবীযের যাবতীয় বরকত-নিয়ামত নছীব করুন। আমীন।
-সাইয়্যিদ মুফতী মুহম্মদ কাওছার আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা-হুসনে যন পোষণ করা ঈমান
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৬)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (১)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহিলাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ নির্দেশনা মুবারক- পর্দা পালন করা
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












