নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চিকিৎসা পদ্ধতি- ঝাড়-ফুঁক ও তাবীয (৫)
, ০৮ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২১ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৬ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
কুফর-শিরক মুক্ত বাক্য দ্বারা ঝাড়-ফুঁক করা নিষিদ্ধ নয়
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ نَـهٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الرُّقٰى فَجَاءَ آلُ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهُ كَانَتْ عِنْدَنَا رُقْيَةٌ نَرْقٰي بِـهَا مِنَ الْعَقْرَبِ وَإِنَّكَ نَـهَيْتَ عَنِ الرُّقٰى. قَالَ فَعَرَضُوْهَا عَلَيْهِ. فَقَالَ مَا أَرَى بَأْسًا مَّنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَنْ يَنْفَعَ أَخَاهُ فَلْيَنْفَعْهُ.
অর্থ: হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঝাড়-ফুঁক করতে নিষেধ করলেন। তখন হযরত আমর ইবনে হাযম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বংশের কয়েকজন লোক আসলেন। এবং বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের কাছে কিছু দোয়া-কালাম আছে। যা দ্বারা আমরা বিচ্ছুর দংশনে ঝাড়-ফুঁক করে থাকি। অথচ আপনি দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করতে নিষেধ করেন। তারপর উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ইজাযত (অনুমতি) ক্রমে তা পাঠ করে শুনালেন। (ইহা শুনে) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তো এখানে দোষের কিছু দেখছি না। কাজেই, আপনাদের যে কেউ তার ভাইয়ের কোন উপকার করতে পারে, সে যেন অবশ্যই তার উপকার করে। (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ كُنَّا نَرْقٰي فِـي الْـجَاهِلِيَّةِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَيْفَ تَرٰى فِـيْ ذَلِكَ فَقَالَ اَعْرِضُوْا عَلَىَّ رُقَاكُمْ لاَ بَأْسَ بِالرُّقٰى مَالَمْ يَكُنْ فِيهِ شِرْكٌ.
অর্থ: হযরত আউফ ইবনে মালিক আশজায়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। আমরা জাহিলী যুগে দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করতাম। (সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পর) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট বললাম- ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ সকল দোয়া-কালাম সম্পর্কে আপনার ফায়ছালা মুবারক কি, যা আমরা জাহিলিয়াতের যুগে পড়তাম?
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আপনাদের দোয়া-কালামগুলো আমাকে পাঠ করে শুনান। তবে যে সকল দোয়া-কালামে শিরক-কুফর কোন শব্দ মিশ্রিত না থাকে সে সকল দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করা নিষেধ নয়।” (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ اَلصّـِدِّيْقَةِ عَلَيـْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيـْهَا السَّلَامُ (قَالَتْ أَمَرَنِيْ رَسُولُ اللَّهِ صَلّٰى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَّسْتَرْقٰى مِنَ الْعَيْنِ.
অর্থ: হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কারো বদ নজর লাগলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করার আদেশ মুবারক করেছেন। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ رَخَّصَ رَسُوْلُ اللهِ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فِـىْ الرُّقْيَةِ مِنَ الْعَيْنِ وَالْـحَمَّةِ وَالنَّمْلَةِ
অর্থ: হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। কারো বদ নজর লাগলে, কেহ গরম পানি দ্বারা কিংবা আগুনে পুড়ে গেলে কিংবা নামলাহ্ অর্থাৎ পিপিলিকা কিংবা অন্য কিছু দংশন বা কামড় দিলে দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অনুমতি দিয়েছেন। (মুসলিম শরীফ)
উল্লেখ্য যে, দোয়া-কালাম বলা হয়- কুফর-শিরক মুক্ত বাক্য। আর মন্ত্র বলা হয়- কুফর শিরক যুক্ত বাক্য। কাজেই, দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করা জায়িয ও সুন্নত মুবারক। আর মন্ত্র নাজায়িয ও হারাম।
-সাইয়্যিদ মুফতী মুহম্মদ কাওছার আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












