নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চিকিৎসা পদ্ধতি- ঝাড়-ফুঁক ও তাবীয (৬)
, ২২ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৫ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৪ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২০ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ نَـهٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الرُّقٰى فَجَاءَ آلُ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهُ كَانَتْ عِنْدَنَا رُقْيَةٌ نَرْقٰي بِـهَا مِنَ الْعَقْرَبِ وَإِنَّكَ نَـهَيْتَ عَنِ الرُّقٰى. قَالَ فَعَرَضُوْهَا عَلَيْهِ. فَقَالَ مَا أَرَى بَأْسًا مَّنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَنْ يَنْفَعَ أَخَاهُ فَلْيَنْفَعْهُ.
অর্থ: হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঝাড়-ফুঁক করতে নিষেধ করলেন। তখন হযরত আমর ইবনে হাযম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বংশের কয়েকজন লোক আসলেন। এবং বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের কাছে কিছু দোয়া-কালাম আছে। যা দ্বারা আমরা বিচ্ছুর দংশনে ঝাড়-ফুঁক করে থাকি। অথচ আপনি দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করতে নিষেধ করেন। তারপর উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ইজাযত (অনুমতি) ক্রমে তা পাঠ করে শুনালেন। (ইহা শুনে) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তো এখানে দোষের কিছু দেখছি না। কাজেই, আপনাদের যে কেউ তার ভাইয়ের কোন উপকার করতে পারে, সে যেন অবশ্যই তার উপকার করে। (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ كُنَّا نَرْقٰي فِـي الْـجَاهِلِيَّةِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَيْفَ تَرٰى فِـيْ ذَلِكَ فَقَالَ اَعْرِضُوْا عَلَىَّ رُقَاكُمْ لاَ بَأْسَ بِالرُّقٰى مَالَمْ يَكُنْ فِيهِ شِرْكٌ.
অর্থ: হযরত আউফ ইবনে মালিক আশজায়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। আমরা জাহিলী যুগে দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করতাম। (সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পর) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট বললাম- ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ সকল দোয়া-কালাম সম্পর্কে আপনার ফায়ছালা মুবারক কি, যা আমরা জাহিলিয়াতের যুগে পড়তাম?
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আপনাদের দোয়া-কালামগুলো আমাকে পাঠ করে শুনান। তবে যে সকল দোয়া-কালামে শিরক-কুফর কোন শব্দ মিশ্রিত না থাকে সে সকল দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করা নিষেধ নয়। ” (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ اَلصّـِدِّيْقَةِ عَلَيـْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيـْهَا السَّلَامُ (قَالَتْ أَمَرَنِيْ رَسُولُ اللَّهِ صَلّٰى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَّسْتَرْقٰى مِنَ الْعَيْنِ.
অর্থ: হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কারো বদ নজর লাগলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করার আদেশ মুবারক করেছেন। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ رَخَّصَ رَسُوْلُ اللهِ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فِـىْ الرُّقْيَةِ مِنَ الْعَيْنِ وَالْـحَمَّةِ وَالنَّمْلَةِ
অর্থ: হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। কারো বদ নজর লাগলে, কেহ গরম পানি দ্বারা কিংবা আগুনে পুড়ে গেলে কিংবা নামলাহ্ অর্থাৎ পিপিলিকা কিংবা অন্য কিছু দংশন বা কামড় দিলে দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অনুমতি দিয়েছেন। (মুসলিম শরীফ)
উল্লেখ্য যে, দোয়া-কালাম বলা হয়- কুফর-শিরক মুক্ত বাক্য। আর মন্ত্র বলা হয়- কুফর শিরক যুক্ত বাক্য। কাজেই, দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করা জায়িয ও সুন্নত মুবারক। আর মন্ত্র নাজায়িয ও হারাম।
-সাইয়্যিদ মুফতী মুহম্মদ কাওছার আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আত তাক্বউইমুশ শামসী”একটি নতুন সৌর সন (৩)
০৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৩২)
০৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র কুরবানী ও কুরবানীদাতার ফযীলত (৩)
০৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৯)
০৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (৯)
০১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হালাল হারামের কথা-১৪
০১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুমহান পবিত্র ২১শে শাওওয়াল শরীফ: মুবারক প্রেক্ষাপট
০১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দ্বীন ইসলাম উনার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিবস পালন নিয়ে বিভ্রান্তির দলীলসম্মত জাওয়াব
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল খ্বমিসাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইলিম এবং আলিম উনাদের ফযীলত
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)