নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সশরীর মুবারকে সংঘটিত পবিত্র মি’রাজ শরীফ অস্বীকার করায় মিশরের সুলতানের অলৌকিক ঘটনা
, ২৮ শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩২ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রাতে পবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ থেকে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন। অতঃপর মুবারক আনুষ্ঠানিক দীদার দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فَكَانَ قَابَ قَوْسَیْنِ اَوْ اَدْنَ.
অর্থ: “ধনুকের দুই মাথার যতটুকু ব্যবধান এই পরিমাণ অথবা এর চেয়েও আরো অধিক নিকটবর্তী হলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নজম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-০৯)
মূলত এটিই হচ্ছে পবিত্র মি’রাজ শরীফ। পবিত্র মি’রাজ শরীফ বিশ্বাস করা হচ্ছে ফরয আর অবিশ্বাস করা কাট্টা কুফরী।
আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি একজন কাফিরের মুখে পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার কথা শুনে বিনা চু-চেরায় বিশ্বাস করলেন। যার ফলশ্রুতিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে ‘ছিদ্দীক্ব’ লক্বব মুবারক হাদিয়া করলেন। সুবহানাল্লাহ!
অবিশ্বাসকারীদের জন্য অনেক মশহুর ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। যেমন- পবিত্র মি’রাজ শরীফ অস্বীকার করার কারণে এক ইহুদী- সে পুরুষ থেকে মহিলায় পরিণত হয়ে অতি অল্প সময়ে ৭টি সন্তানের মা হয়ে যায়। এরুপ অনেক ঘটনা রয়েছে।
কিতাবে বর্ণিত আছে যে, হযরত শেখ শাহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গাউছুল আ’যম সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশিষ্ট খলীফা। উনি যদিও সোহরাওয়ার্দী তরীক্বার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব; ওইদিক থেকে উনি খেলাফতপ্রাপ্ত আবার হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খলীফা। উনার মা হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ ছিলেন। তিনি নিঃসন্তান বলে আরজু পেশ করায় হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দোয়া করলেন; যার ফলে উনার একটি কন্যা সন্তান হলো। তিনি সেই সন্তানটিকে হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে নিয়ে এসে বললেন, হুযূর! নিয়ত করেছিলাম পুত্র সন্তান হলে আপনার খিদমতে পেশ করবো। হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইছি তিনি সেই কন্যা সন্তানটির প্রতি নেক দৃষ্টি দিলেন। মুবারক উনার ফায়েজ-তাওয়াজ্জুহ ও কারামতে বাচ্চা মেয়েটি ছেলে সন্তানে পরিণত হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ! পরবর্তীতে তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার বুযূর্গ ওলীআল্লাহ হলেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত শেখ শাহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনি দামেশকে থাকতেন। উনার সময়ের একটি মশহুর ওয়াকিয়া রয়েছে-
ঘটনাটি ৬০০ হিজরী সনের কাছাকাছি সময়ের। মিশরের এক সুলতান ছিলো মুসলমান। কিন্তু সে পবিত্র মি’রাজ শরীফ নিয়ে চু-চেরা ক্বিল-কাল করতো। ওখানে যারা আলেম-উলামা, ছুফি, দরবেশ, আউলিয়ায়ে কিরাম বা তার যারা সভাসদ ছিলো তারা সবাই তাকে বুঝাতো। কিন্তু সে কোনটা মানতো না। তার বক্তব্য; পবিত্র মি’রাজ শরীফ কি করে স্বাভাবিক হতে পারে। নাঊযুবিল্লাহ! হযরত শায়েখ শাহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ কথা জানার পর তাকে এটা বুঝানোর জন্য একদিন সেখানে গেলেন। উনি ঘোষণা দিয়েছেন, উনি গিয়ে যখন পৌঁছলেন তখন মিশরের সুলতানসহ যত বুযূর্গ আউলিয়ায়ে কিরাম, আলিম, উলামা সব আসলেন। তার উজির, নাযীর সবাই আসলো উনাকে অভ্যর্থনা করে সুলতানের প্রাসাদে নিয়ে গেল। উনি গিয়ে বসে বললেন, আমি সামান্য সময়ের জন্য এসেছি; আমি বেশিক্ষণ থাকবো না। আমি এসেছি তোমাদেরকে মি’রাজ শরীফের বিষয়টা বুঝানোর জন্য। উনিসহ সকলেই যেখানে বসলেন সে কামরাটা ছিল অনেক বড়; যার চারদিকে চারটি বড় বড় জানালা ছিলো। হযরত শাহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রথমে একটি জানালা খুললেন, জানালা খোলা মাত্র দেখা গেলো দূর থেকে হাজার-হাজার, লক্ষ-লক্ষ সৈন্য আসতেছে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মিশর আক্রমণ করার জন্য। এটা সুলতান দেখে চিৎকার করে উঠলো; তার প্রধান সেনাপতির নাম ধরে ডাকতে থাকলো অস্থিরচিত্তে। তার এই প্রতিক্রিয়ায় হযরত শেখ শাহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জানালাটি বন্ধ করে দিলেন। এবং বললেন, আপনি ধৈর্যধারণ করেন; অস্থির হবেন না। এরপর আবার জানালা খুললেন, দেখা গেল সব স্বাভাবিক; সৈন্য-সামন্ত কিছু নেই। এরপর আরেকদিকে আরেকটা জানালা খুললেন, দেখা গেল, দূর থেকে অনেক আগুন দাউ দাউ করে ধেয়ে আসছে। যেন মিশর আগুনে জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। সুলতান ভয়ে আগুন! আগুন! বলে চিৎকার করে উঠলো। অতঃপর তিনি জানালাটি বন্ধ করে পুনরায় খুললেন, দেখা গেল কোন আগুন নেই; সবকিছু ঠিকই আছে। এরপর তৃতীয় আরেকটি জানালা খোলা হলে দেখা গেল নীল নদের পানি উত্তালভাবে ফুঁসে ধেয়ে আসছে। যেন সুলতান্র সমস্ত প্রাসাদ-বালাখানাসহ সবকিছু ডুবিয়ে দিবে। সুলতান ভয়ে পানি! পানি! বলে চিৎকার করে উঠলো। হযরত শাহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনি অস্থির হবেন না; ধৈর্য ধারণ করেন। উনি জানালাটি বন্ধ করে পুনরায় খুললেন, দেখা গেল কোথাও কোন পানি নেই; সব স্বাভাবিক। এরপর চতুর্থ জানালা খুললেন, এবার দেখা গেল অনেক ফল-ফুলে পরিপূর্ণ একটি সুন্দর বাগান। এটা দেখে সুলতান খুব খুশি হলো; এরপর উনি জানালাটি বন্ধ করে দিলেন। বিষয়টি উপস্থিত সবাই দেখে তাজ্জব হলো; সকলেই মনে মনে ফিকির করতে থাকলো। তখন উনি বললেন, এক কাজ করেন আপনারা আমাকে একটি পানি ভর্তি বড় গামলা এনে দেন। তখন উনার আদেশ মুবারক অনুযায়ী উনাকে একটা বড় গামলায় পানি এনে দেয়া হলো সেই সুলতানের সামনে। তখন যারা রাজা-বাদশাহ ছিলো তারাও পাগড়ি-রুমাল পরিধান করতো। সেই সুলতানও পড়ে। হযরত শেখ শাহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সুলতানকে বললেন, আপনি আপনার পাগড়ি-রুমাল খুলে গামলার পানির দিকে দৃষ্টিপাত করেন, দেখেন কিছু দেখা যায় কি-না? সুলতান পাগড়ি-রুমাল খুলে যখন পানির দিকে দৃষ্টি দিলো; দেখা গেল সুলতান গায়েব হয়ে গেছে। সুলতান আর নেই সেখানে। সুলতান সকলের চোখের সামনে অদৃশ্য হয়ে গেল। সকলেই তাজ্জব হলো। সেখানে হযরত শেখ শাহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বসা আছেন। অনেক আলেম-উলামা, ছুফি, দরবেশ, তার উজির, নাযীর সব বসা। এদিকে সুলতান নিজেকে দেখতে পেল, সে এক সমুদ্রের পাড়ে, তার মনে হচ্ছে- সে কোন জাহাজে ছিল; জাহাজ ভেঙ্গে সে কোনরকম সমুদ্রে পাড়ে এসেছে। তার সমস্ত কাপড়-চোপড় পানি-কাদা মিশ্রিত। সে মনে মনে চিন্তা করলো; ব্যাপারটা কি হলো। সেই ছূফি সাহেব কি করলো আমাকে। এখনতো আর করার কিছু নেই। সব মনে হচ্ছে জনমানবহীন জায়গা। সুলতান মনে মনে চিন্তা করতে করতে সমুদ্রের পাড় থেকে উঠে আস্তে আস্তে ভিতরের দিকে যেতে থাকলো। কিছু দূর গিয়ে দেখলো সামনে এক কাঠুরিয়াকে। সে জঙ্গলের মধ্যে কাঠুরিয়াকে দেখতে পেয়ে তার কাছে গেল। কাঠুরিয়া সুলতানকে এরকম অবস্থায় দেখে জিজ্ঞেস করলো; আপনি কে? কোথা থেকে এসেছেন? আপনার এ অবস্থা কেন? সুলতান বললো, আমিতো জাহাজ ভেঙ্গে এখানে আসছি। কাঠুরিয়া জিজ্ঞেস করলো, আপনার কিছু আছে? সুলতান বললো, না আমার কিছু নেই। তখন কাঠুরিয়া তার তরফ থেকে কিছু কাপড়-চোপড় দিলো পাল্টিয়ে পড়ার জন্য। সুলতান পড়লো। এরপর কাঠুরিয়া বললো, আপনি শহরের ভিতর যান। সে হাটতে হাটতে শহরের ভিতরে প্রবেশ করলো। এরপর সুলতান দেখতে পেল, কতগুলি কামারের দোকান। সুলতান কামারের একটি দোকানে প্রবেশ করলো, সেখানে যারা ছিল তারা একজন নতুন লোক দেখে জিজ্ঞেস করলো; আপনি কোথা থেকে আসছেন? সুলতান বললো, আমি আসলে জাহাজ ভেঙ্গে এসেছি; আমি এখানে একজন কাঠুরিয়ার সাহায্যে এসেছি। এটা শুনে সেই কামাররা বললো, আমাদের এই শহরে আসলে কিছু নিয়ম রয়েছে। এখানে নতুন কোন লোক থাকতে পারে না। থাকার কোন জায়গা নেই। আলাদা কোন ব্যবস্থাও নেই। নিয়মটা হলো- যারা এসে থাকে তাদেরকে বিবাহ-শাদী করে থাকতে হয়।
সুলতান শুনে চিন্তায় পড়ে গেল, কিভাবে বিবাহ-শাদী করবে? কোথায় করবে? তখন কামাররা পরামর্শ দিলো, আপনি শহরের আরো ভিতরে প্রবেশ করেন, সেখানে দেখবেন অনেক হাম্মামখানা আছে। কিছু হাম্মামখানা রয়েছে পুরুষদের আর কিছু রয়েছে মহিলাদের। আপনি সেখানে গিয়ে মহিলাদের যে হাম্মামখানা রয়েছে সেখানে দাড়িয়ে থাকেন। দাড়িয়ে থাকলে দেখবেন গোসল করে অনেক মহিলারা বের হয়ে যায়। যখন মহিলারা বের হয়ে যাবে তখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করবেন, তারা বিবাহিত না অবিবাহিত? যদি অবিবাহিত কেউ হয়ে থাকে তাহলে আপনি তাদের বিবাহের প্রস্তাব দিবেন। তাহলে একটা ফায়সালা হতে পারে। এখন সুলতান কি করবে, সে কিছু জানেও না, বুঝেও না। এবং জীবনেও কোন কাজও সে করে নাই। এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীনও কখনো হয় নাই। তখন সে যেতে যেতে একটা মহিলা হাম্মামখানার পাশে গিয়ে দাড়িয়ে রইলো। সুলতান দেখলো, সেখান থেকে একজন একজন করে চারজন বের হলো; তিনজন মহিলা এবং একজন মেয়ে। সুলতান পর্যায়ক্রমে তাদের জিজ্ঞেস করলে প্রথম তিনজন উত্তর দিলো তারা বিবাহিত এবং চতুর্থজন বললো, সে অবিবাহিত। তখন সুলতান সেই মেয়েকে প্রস্তাব দিলো। মেয়েটা কোন উত্তর না দিয়ে সুলতানের দিকে তাকায়ে চলে গেল। সুলতান মনে করলো, তাকে হয়তো সে পছন্দ করে নাই। কিছুক্ষণ পর সুলতান সেখান থেকে যখন বের হয়ে আসছিলো, তখন একটা লোক আসলো; এসে সুলতানকে দেখে বললো, আপনি হাম্মামখানার ওখানে ছিলেন? সুলতান বললো, হ্যা; আপনি কি বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন? সুলতান বললো, হ্যা; আমি বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তখন সেই লোকটা সুলতানকে বললো, তাহলে আসেন আমার সাথে। লোকটি সুলতানকে নিয়ে নিলো সাথে করে, নিয়ে অনেক বড় একটা বাড়িতে নিয়ে একটা কামরাতে বসালো।
এবং তাদের নামী-দামী কাপড়-চোপড় দিয়ে সুলতানকে সুসজ্জিত করলো। এরপর ৫ জন মহিলা সেখানে আসলো। তারমধ্যে তিনজন হলো আগের; আর একজন নতুন মহিলা। এই চারজন প্রথম এরপর সেই মেয়েটা আসলো; যে মেয়েটাকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। এরপর তার লোকজন যারা ছিল তারা সুলতানের সাথে মেয়েটার বিবাহ পড়িয়ে দিলো। পরে মেয়েটা বললো, আমাদের দেশে এরকম নিয়ম। কেউ যদি বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তাহলে প্রথমে কিছু বলা হয় না পরে লোক দিয়ে ডেকে এনে বিবাহ পড়িয়ে দেয়া হয়। বিবাহ যখন সম্পন্ন হয়ে গেল, সুলতান থাকতে থাকলো; মেয়েটা বেশ সম্পদশালীনী। এভাবে একে একে সাত বছর অতিবাহিত হয়ে গেল। এর মধ্যে তাদের সাতজন সন্তান হলো। যখন সাত বছর পুরা হয়ে গেল, তখন ওই মেয়েটা বললো, এখনতো আমার যা টাকা-পয়সা ছিল; সবশেষ হয়ে গেছে। তাহলে আপনি একটা কামাই-রোজগারের ব্যবস্থা করেন। এখন সুলতান কি কামাই-রোজগার করবে; সেতো কোন কাজ জানে না। সুলতান মনে মনে চিন্তা করলো; ওই যে কামারগুলি তাকে যে বুদ্ধি দিয়েছিলো; তাদের কাছে গেলে যদি একটা ব্যবস্থা হয়। এই চিন্তা করে সুলতান সেখানে গেল; গিয়ে তাদের সাথে কথা-বার্তা বললো; আমার কিছু কামাই-রোজগার করা দরকার। কামাররা জিজ্ঞেস করলো, আপনি কোন কাজ জানেন? সুলতান বললো, না আমি কোন কাজ জানি না। তখন তারা পরামর্শ দিলো, যে আপনি একটা টুকরি কিনেন। টুকরি কিনে মিন্তিগিরি/কুলিগিরি করেন। মানুষ মাল কিনে নিয়ে যায় বাজার থেকে; সেখান থেকে বোঝা বয়ে নিয়ে যাবেন, মানুষ পয়সা দিবে; আপনার সংসার চলবে। সুলতান রাজি হলো, একটা টুকরি কিনলো, টুকরি কিনে মাল-সামানা টানলো সারাদিন; সারাদিন কুলিগিরি করে যে পয়সা পেল; এ পয়সা দিয়ে তো চলে না। তাদের সদস্য সংখ্যা নয়জন। এভাবে কিছু দিন গেল। এখন সুলতান চিন্তা করতে থাকলো, তাহলে কি করা যায়? সে মনের দুঃখে চিন্তা করতে করতে সেই সমুদ্রের পাড়ে গেল। মনের দুঃখে-কষ্টে সেখানে গেল; গিয়ে চিন্তা করলো ওযু করে নামায আদায় করবে। সেই সুলতান যখন ওযু করতে নামলো, হঠাৎ তার হুশ ফিরে আসলো। সুলতান এতক্ষণ গায়েব ছিল, এখন সুলতান জাহির হয়ে গেল। সে জাহির হওয়া মাত্র চিৎকার করতে থাকলো, সেই ছূফি সাহেব কোথায়? আমাকে এত কষ্ট দিলো; সাত বছর সংসার! কুলিগিরি/মিন্তিগিরি! ইত্যাদি ইত্যাদি। সেই ছূফি সাহেবকে মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুলতানতো খুব উত্তেজিত। আস্তে আস্তে সে যখন স্বাভাবিত হলো, তখন সবাই বললো, আপনি ১ সেকে- গায়েব ছিলেন। শুধুমাত্র মাথা নুইয়েছেন; গায়েব হয়েছেন আবার জাহির হয়েছেন। সুলতানতো খুব উত্তেজিত; না আমি সাত বছর সংসার করছি। সাতটা সন্তান হয়েছে। তারপর আমি কুলিগিরি করেছি। সবাই তো তাজ্জব! আপনি বলেন কি? আপনি তো মাত্র ১ সেকে- অদৃশ্য ছিলেন। তাহলে সাত বছর গেল কোথায়? এদিকে সুলতানতো কোনমতেই মানবে না। ছূফি সাহেবকে মৃত্যুদ- দিতে হবে। হযরত শেখ শাহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বুঝলেন, সেতো উত্তেজিত; এখন বললে সে বুঝবে না। তিনি শুধু বললেন, না আপনি আপনার লোকজন যারা রয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করেন; আপনি মাত্র ১ সেকে- গায়েব ছিলেন। বলে আস্তে করে তিনি আড়ালে গিয়ে তিনিও অদৃশ্য হয়ে গেলেন। উনিও ঠিক ওখান থেকে চোখের পলকে মিশর থেকে সিরিয়াতে পৌঁছে গেলেন। এখন সুলতানতো উনাকে খুজে পায় না। উনি গায়েব। এদিকে তিনি সিরিয়াতে গিয়ে সুলতানের কাছে চিঠি পাঠালেন। সুলতান! তুমি যে মি’রাজ শরীফ বিশ্¦াস করো না; এখন কি বিশ্বাস করবে? তুমি দেখ; তোমার ওখান থেকে চোখের পলকে আমি মিশর থেকে সিরিয়া আসলাম; এক পলকে। আবার তুমি যে এক পলক ছিলে; তুমি সাত বছর সংসার করলে; সাতজন সন্তান হলো; তুমি শেষে কুলিগিরি/মিন্তিগিরি করলে; কতকিছু করলে। তোমার সভাসদ, আমির, উমরা সেখানে যারা ছিল আলেম, ওলামা সকলে স্বাক্ষী দিচ্ছে তুমি মাত্র ১ সেকেন্ড গায়েব ছিলে। এটা যদি স্বাভাবিক হয়; তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মি’রাজ শরীফে গেলেন; সেটা স্বাভাবিক হবে না কেন? উনারটা তো আরো সূক্ষ্ম বিষয়; তখন সুলতান মানলো; সে স্বীকার করলো। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
সংকলনে: আহমদ হুসাইন মুফহিম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড (৮)
১৭ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর রবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ই’জায শরীফ
১৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড (৭)
১৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড (৬)
১৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড (৫)
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
১৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, জান্নাতী ইমাম, সাইয়্যিদুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহনাওয়াসা আছ ছানী আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুহব্বত মুবারক করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড (৪)
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো ‘বাশার’ বা মানুষ বলা কাট্টা কুফরী
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড(৩)
১১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ‘আল মানছূর’ লক্বব মুবারক উনার অর্থ মুবারক
১০ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যদিুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহসি সালাম উনার এবং মহাসম্মানতি ও মহাপবত্রি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহমিুস সালাম উনাদরে বশিষে শান মুবারক
১০ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)