সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৪২)
, ২৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২০ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৪ পৌষ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মুনাফিক্ব বিশরকে হত্যা:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ حَتّٰى يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوْا فِيْ أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا
অর্থ: “আপনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! তারা কস্মিনকালেও ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আপনাকে তাদের সমস্ত বিষয়ে ফয়সালাকারী হিসেবে মেনে না নিবে। তাদের অন্তরে কোনোরূপ সংকীর্ণতা অনুভব করবে না। অতঃপর তারা আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফয়সালা মুবারক উনাকে বিনা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বালে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে মেনে না নিবে। ” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৫)
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে ইরশাদ মুবারক করেন, এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার শানে নুযূল সম্পর্কে বলা হয়- এক ব্যক্তির নাম ছিল বিশর। সে মুসলমান দাবি করতো, হাক্বীক্বত সে ছিল মুনাফিক্ব। এই মুনাফিক্ব বিশরের সাথে এক ইহুদীর গ-গোল হয়ে যায়। যখন গ-গোল হয়ে গেল, তখন মুনাফিক্ব বিশরকে ইহুদী বললো, ‘হে বিশর! এটার বিচার বা ফয়সালা করতে হবে। ’ কে বিচার করবেন? ইহুদী বললো, ‘তোমাদের যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী এবং রসূল, যিনি আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিচার করবেন। ’ মুনাফিক্ব বিশর মনে মনে চিন্তা করলো, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি বিচার করেন, উনি তো হক্ব বিচার করবেন, যেহেতু বিশর না হক্ব, ইহুদীর পক্ষে রায় চলে যাবে। তখন মুনাফিক্ব বিশর বললো যে, কেন; তোমাদের যে বিচারক- কা’ব ইবনে আশরাফ অথবা আবূ রফে ইহুদী রয়েছে তাদের কাছে চলো বিচারের জন্য। কিন্তু ইহুদী ব্যক্তি জানতো যে, কা’ব ইবনে আশরাফ অথবা আবূ রফে যদি বিচার করে, তাহলে তারা মুনাফিক্বী করবে, হেরফের করবে, তারা ঘুষ খেয়ে পক্ষপাতিত্ব করবে। কারণ পূর্বেও তারা এমন অনেক করেছে যার নযীর রয়েছে। তখন সেই ইহুদী অস্বীকার করে বললো- ‘না; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিচার করবেন। ’ সেই ইহুদী এই কথা বলে মুনাফিক্ব বিশরকে বুঝিয়ে নিয়ে গেল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে। বিচার হয়ে গেল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিচার করলেন। রায় পড়লো ইহুদীর পক্ষে আর মুনাফিক্ব বিশরের বিরুদ্ধে। মুনাফিক্ব বিশর সেখানে তা বাহ্যিকভাবে মেনে নিলেও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দরবার শরীফ থেকে বের হয়ে বললো- ‘বিচারটা আমার মনপুতঃ হচ্ছে না। ’ না‘ঊযুবিল্লাহ! ইহুদী বললো, ‘হে বিশর! তুমি বল কি? তোমাদের যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী এবং রসূল, যিনি আল আমীন উনার বিচার তোমার মনপুতঃ হয়নি? তাহলে তুমি কার বিচার মানবে?’ সেই যামানায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বিচার করতেন। মুনাফিক্ব বিশর সে মনে করলো যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খুব জালালী তবীয়ত মুবারক। উনার প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
اَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ
‘অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি কাফিরদের প্রতি কঠোর। ’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফাত্হ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
তিনি হয়তো আমার পক্ষেই রায় দিবেন এবং ইহুদী কাফির তার বিপক্ষে রায় দিবেন। মুনাফিক্ব বিশর সে ইহুদীকে নিয়ে গেল সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার কাছে বিচারের জন্য। ইহুদী খুব চালাক ছিলো, তাই সে বিষয়টা বুঝতে পেরে যাওয়া মাত্রই বললো, ‘হে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! এই বিশর আমাকে নিয়ে এসেছে আপনার কাছে বিচারের জন্য; অথচ আমরা এই মাত্র সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দরবার শরীফ থেকে আসলাম। তিনি নিজে বিচার করে দিয়েছেন। রায় আমার পক্ষে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিশর সেই বিচার মানতে নারাজ। সেজন্য সে আমাকে আপনার কাছে নিয়ে এসেছে পুনরায় বিচার করার জন্য। ’ সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি একথা শুনে বললেন, ‘ঠিক আছে; তোমরা বসো, আমি তোমাদের বিচার করবো। উনি ঘরে প্রবেশ করলেন, ঘরে প্রবেশ করে সবচেয়ে ধারালো একটা তরবারী নিয়ে আসলেন। তরবারী এনে মুনাফিক্ব বিশরকে এক কোপে দু’ভাগ করে দিলেন। মুনাফিক্ব বিশরের দেহ থেকে মাথাটা আলাদা হয়ে গেলো এবং বিকট আওয়াজ হলো। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘এটাই তোর বিচার। কারণ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেই বিচার করেছেন, সেটা তুই মানিসনি। তোর একমাত্র শরঈ শাস্তি ও বিচার হচ্ছে মৃত্যুদ-। ’
(অপেক্ষায় থাকুন)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৭)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তিনটি বিষয় নাজাতের কারণ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র “নূরুর রহমত” ও “নূরুল বারাকাত” মুবারকদ্বয় উনাদের ব্যাপকতা ও বিশালতা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩২)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৬)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৪১)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৫)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৪০)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৯)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












