সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৪০)
, ২৪ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৭ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০১ পৌষ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
আমর ইবনে আব্দে উদ্দকে হত্যা:
অন্য বর্ণনায় রয়েছেন, ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি আমর ইবনে আব্দে উদ্দকে বললেন, ‘তুমি না মহান আল্লাহ পাক উনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছো যে, যদি সম্মানিত কুরাইশ উনাদের কোনো ব্যক্তি তোমাকে বন্ধুত্বের দিকে আহ্বান করে তবে তুমি তা গ্রহণ করবে।’ সে বললো, ‘হ্যাঁ; আমি তা বলেছি।’ তিনি বললেন, ‘তাহলে শুনো-
فأنا أدعوك إلى الله وإلى رسول الله صلى الله عليه وسلم وإلى الإسلام فقال لا حاجة لي بذلك
‘আমি তোমাকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের এবং মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে আহ্বান করছি।’ তখন সে বললো, ‘এসব আমার কোনো প্রয়োজন নেই।’ না‘ঊযুবিল্লাহ! (আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ্ শরীফ ২/৪২৭)
অন্য বর্ণনায় রয়েছে,
إنك كنت تقول لا يدعوني أحد إلى واحدة من ثلاثة إلا قبلتها قال أجل
‘তুমি না বলতে যে, যুদ্ধের ময়দানে যদি কোনো বীর তার প্রতিপক্ষকে তিনটি প্রস্তাব দেয়, তা হলে সেগুলোর যে কোনো একটি তাকে গ্রহণ করতে হবে। সে বললো, হ্যাঁ; অবশ্যই।’
তখন ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
فإني أدعوك أن تشهد أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله صلى الله عليه وسلم وتسلم لرب العالمين فقال يابن أخي أخر عني هذه
‘আমি তোমাকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোনো মা’বূদ নেই এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তুমি সমস্ত কায়িনাতের রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আতœসমর্পণ করো। তখন সে বললো, হে আমার ভাতিজা! এটা আমার কাছ থেকে স্থগিত করুন।’
ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
وأخرى ترجع إلى بلادك
‘দ্বিতীয় প্রস্তাব হচ্ছে- তুমি তোমার দেশে চলে যাও।’
‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনার নিজ অবস্থার ওপর ছেড়ে দাও এবং যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দূরে চলে যাও।’
সে বলল, ‘এই প্রস্তাব আমার জন্য লজ্জাকর। কারণ আগামীকালই আরবের কবি-সাহিত্যিকরা আমার ব্যাপারে ব্যঙ্গ করবে এবং তারা ভাববে যে, আমি ভয় পেয়ে এই কাজ করেছি। আর তৃতীয় প্রস্তাবটি বলুন।’
তখন ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘এখন যখন তোমার প্রতিপক্ষ যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে, তখন তুমিও তোমার ঘোড়ার পিঠ থেকে নেমে এসো যাতে আমরা মল্লযুদ্ধে লিপ্ত হই।’ সে বললো, ‘হে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! আসলে এটি একটি তুচ্ছ প্রস্তাব মাত্র। আমি কখনোই ভাবিনি যে, কোনো আরব আমার কাছে এমন প্রস্তাব করতে পারে!’
তখন কাফিরটা উনাকে উদ্দেশ্য করে বললো, হে ভাতিজা!
ما أحب أن أقتلك،
‘আমি আপনাকে শহীদ করতে পছন্দ করছি না’
জবাবে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
ولكني والله أحب أن أقتلك
‘মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি কিন্তু তোমাকে হত্যা করতে অত্যন্ত পছন্দ করি।’ সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ্ শরীফ, তারীখুল খমীস)
উনার এমন দৃঢ়তামূলক কথা মুবারক শুনে আমর ইবনে আব্দের খুব গোসসা পয়দা হলো। সে তরবারীর এক আঘাতে তার ঘোড়ার ৪টি পা কেটে দিয়ে নিজের বীরত্ব প্রকাশ করলো এবং ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার দিকে তার তরবারী হাঁকাতে লাগলো। মনে হচ্ছে তার তরবারী থেকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বের হচ্ছে। তখন তার বয়স ছিলো ৯০ বছর। আর ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় সাড়ে ২৭ বছর থেকে একটু বেশি। আমর ইবনে আব্দে উদ্দের একটি যুদ্ধকৌশল ছিল যে, সে তরবারীর এক আঘাতেই তার প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করে ফেলতো।
উভয়ের মাঝে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো। ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনার ঢাল মুবারক নিয়ে আমর ইবনে আব্দে উদ্দের দিকে এগিয়ে যান। আমর ইবনে আব্দে উদ্দ তরবারী দ্বারা এমন এক আঘাত করলো যে, ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার ঢাল মুবারক চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে উনার সম্মানিত কপাল মুবারক-এ আঘাত লাগলো। তখন ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত তরবারী মুবারক দিয়ে
وضربه علي فوق عاتقه فقتله
‘তার কাঁধের উপর স্বজোরে আঘাত করে তাকে হত্যা করলেন।’ সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারক্বানী)
ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার তরবারী মুবারক উনার আঘাতের এত অধিক কুওওয়াত ছিলো যে, এক আঘাতে কাট্টা কাফির আমরের কাঁধ থেকে কোমর পর্যন্ত দুই ভাগ হয়ে গিয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ!
ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি অত্যন্ত উচ্চ আওয়াজ মুবারক-এ সম্মানিত তাকবীর মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! কাট্টা কাফির আমর ইবনে আব্দে উদ্দের নিহত হওয়ার সংবাদ শুনে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাও অত্যন্ত উচ্চ আওয়াজ মুবারক-এ সম্মানিত তাকবীর মুবারক দিতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘ইমামুল আউওয়াল হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার তরবারী মুবারক উনার একটি আঘাত সমস্ত মাখলূকাতের ইবাদতের চেয়ে উত্তম।’ সুবহানাল্লাহ!
(অপেক্ষায় থাকুন)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৫)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৯)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
এক নযরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, আফযালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরানী হুলিয়া মুবারক (৪র্থ পর্ব)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ্ মুবারক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৮)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার ইন্তিজামকারী বিনা হিসাবে সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করবেন
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুল ফাতাহ” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩১)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৭)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৩)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












