সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৪১)
, ২৬ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৯ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৩ পৌষ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
আমর ইবনে আব্দে উদ্দকে হত্যা:
যেসব মুশরিকরা আমর ইবনে আব্দে উদ্দের পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলো, আমর ইবনে আব্দে উদ্দের ধরাশায়ী হওয়ার দৃশ্য দেখে তাদের অন্তরে এতটাই ভয়-ভীতি সৃষ্টি হলো যে, তারা নিজেদের অজান্তেই লাগাম ধরে নিজেদের ঘোড়াগুলোকে পরিখার দিকে চালনা করলো এবং একমাত্র নওফেল ছাড়া তাদের সবাই তাদের নিজেদের সেনাশিবিরে ফিরে গেলো। নওফেলের ঘোড়া পরিখার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলো এবং সে নিজেও মাটিতে পড়ে গিয়ে কঠিন আঘাত পেয়েছিলো। পরিখার নিকট দায়িত্বরত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা তার দিকে পাথর নিক্ষেপ করতে থাকলেন, তাই সে চিৎকার করে বলতে লাগলো ‘এভাবে হত্যা করা মহানুভবতার পরিপন্থী। আমার সাথে মল্লযুদ্ধের জন্য একজন পরিখার মধ্যে নেমে আসুন।’ ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি পরিখার মধ্যে নেমে তাকে হত্যা করলেন।
মুশরিক বাহিনীর সমগ্র অস্তিত্ব জুড়ে কঠিন ভয়-ভীতি সৃষ্টি হলো। আর হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু (তখনো তিনি সম্মানিত ইসলাম গ্রহণ করেননি) তিনিই সবচেয়ে বেশি ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। তিনি ভাবছিলেন যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুশ শুহাদা আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাত মুবারক উনার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য নওফেলের লাশ বিকৃত করতে পারেন। তাই তিনি নওফেলের লাশ দশ হাজার দীনারে ক্রয় করার জন্য এক ব্যক্তিকে পাঠালেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘লাশটা দিয়ে দিন। কারণ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে মৃতদেহের বিনিময়ে অর্থ-সম্পদ নেয়া হারাম করা হয়েছে।’
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
كان امام الاول سيدنا حضرت كرم الله وجهه عليه السلام ذا شجتين فى قرنى رأسه احداهما من عمرو ابن عَبْدِ ودّ والثانية من ابن ملجم ولذا يقال له ذو القرنين
‘ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু আজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মাথা মুবারক উনার দুই কিনারে অর্থাৎ কপালের উপরের দিকে দুই পাশে দুটি আঘাত বা ক্ষত ছিলেন, যার একটি আমর ইবনে আব্দে উদ্দের এবং অন্যটি ইবনে মুলজিমের। এজন্য উনাকে ‘যুল ক্বারনাইন’ বলা হতো।’ (তারীখুল খমীস ১/৪৮৭)
ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু আজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে এত অধিক ফানা ও বাক্বা ছিলেন যে, তিনি উনার সম্মানিত জীবন মুবারক উনার পরোয়া না করে সারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় যোদ্ধা কাট্টা কাফির আমর ইবনে আবদে উদ্দের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ অবতীর্ণ হলেন এবং তাকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে কতটুকু ফানা ও বাক্বা ছিলেন? তাহলে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে উনার মাঝে কতটুকু ফানা ও বাক্বা হতে হবে? তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল? এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সব। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাই হাক্বীক্বীভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বুলন্দী শান মুবারক উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। যার কারণে উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে হাক্বীক্বীভাবে ফানা ও বাক্বা হয়ে উনার জন্য উনাদের মাল-সম্পদ সমস্ত কিছু তো বিসর্জন দিয়েছেনই; এমনকি শেষ পর্যন্ত উনাদের জানটুকুও কুরবান করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাই, সমস্ত উম্মতের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে হাক্বীক্বীভাবে ফানা ও বাক্বা হয়ে উনার জন্য তাদের মাল-সম্পদ তো অবশ্যই; এমনকি নিজেদের জানটুকুও কুরবান করে দেয়া। সুবহানাল্লাহ! তাহলেই তারা ইহকাল ও হাক্বীক্বী কামিয়াবী লাভ করতে পারবে।
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩২)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৬)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৫)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৪০)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৯)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
এক নযরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, আফযালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরানী হুলিয়া মুবারক (৪র্থ পর্ব)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ্ মুবারক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৮)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার ইন্তিজামকারী বিনা হিসাবে সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করবেন
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












