পথচলা এবং চলার পথে দৃষ্টিপাত করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক-১
এডমিন, ০২ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৩ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম

এজন্য আমরা এ-পর্বে হাঁটা-চলার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক সম্পর্কে আলোকপাত করবো।
উল্লেখ্য যে, পথ চলার প্রকারভেদ দশটি-
১) هَوْنٌ (হাউন): হাউন হচ্ছে পূর্ণ পদচারণা এবং গতিময় পদক্ষেপে হাঁটা।
২) تَحَادَت (তাহাদাত): নির্জীব ও শীর্ণ শুকনো কাঠিসাদৃশ্য লোকের ধীরগতিসম্পন্ন হাঁটা।
৩) اِزْعَاجٌ (ইযআজ): রাগের বশবর্তী হয়ে দ্রুত গতিতে বিরক্তিকর ও পেরেশানীর হাঁটা।
এ দুই ধরনের হাঁটাই নিন্দনীয় যা মৃত অন্তর বিশিষ্ট হওয়ার আলামত।
৪) سَعى (সায়ী): দৌড়ের ন্যায় দ্রুত গতিতে চলা।
৫) رَمل (রমল): তাড়াতাড়ি পা উঠিয়ে স্কন্ধ হেলিয়ে দুলিয়ে বীরের ন্যায় চলা।
৬) نُسْلَان (নুসলান): খুব জোড়ে দৌড়ে চলা। ইহা সায়ীর চেয়েও বেশি গতিসম্পন্ন।
৭) خَوْزَلِى (খাওঝালী): হাতের পাঞ্জায় ভর করে চলা।
৮) قَهْقَرِى (ক্বাহকা¡রী): পিছনের দিকে উল্টোভাবে হাঁটা। যেমন মহাসম্মানিত রওজা শরীফ, পবিত্র কাবা শরীফ এবং হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মাজার শরীফ অথবা উনাদের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে পিছনের দিকে চলা।
৯) جَمْرِى (জামরী): লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটা। উট লাফিয়ে লাফিয়ে চলে তাই উটকে জাম্মারা বলা হয়।
১০) تَبَخْتَر (তাবাখতার): ধীরে ধীরে মনোহর ভঙ্গিতে টলায়মান অবস্থায় গাম্ভীর্যের সাথে হাঁটা।
উক্ত দশ প্রকারের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম এবং মহাসম্মানিত সুন্নতী হাঁটা হচ্ছে হাউন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত হাঁটার প্রশংসা মুবারক করেছেন।
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَعِبَادُ الرَّحْمٰنِ الَّذِيْنَ يَمْشُوْنَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا.
অর্থ: “পরম করুণাময় মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ বান্দা, যারা বিনয়- ন¤্রতার সাথে যমীনে চলাচল করেন। (পবিত্র সূরা ফুরক্বান শরীফ) (সিফরুস সায়াদাত-২৪৬, মাদারিজুন নুবুওয়াত-১/৫৭)
রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-
اِنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا مَشٰى، مَشٰى مَشْيًا مُجْتَمِعًا لَيْسَ فِيْهِ كَسْلٌ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন হাঁটতেন তখন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র পা মুবারক) তুলে হাঁটতেন। উনার মহাসম্মানিত হাঁটা মুবারক উনার মধ্যে কোনরূপ আলস্য বা দুর্বলতা ছিলনা। (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ১৬৪)
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রহমাতুল্লিল আলামীন, মুহ্ইউস সুন্নাহ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পথ চলার ধরন মুবারক হচ্ছেন হাউন।
হাউন হচ্ছেন পূর্ণ পদচারণা এবং গতিময় পদক্ষেপ। আর এভাবেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাঁটতেন। সুবহানাল্লাহ!
-আহমদ হুসাইন