পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (৩য় অংশ)
, ১৫ই রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৯ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৮ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ২৪ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক তিনি দু‘আ বা প্রার্থনাকারীকে মুহব্বত মুবারক করেন:
মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে অত্যন্ত একটি পছন্দনীয় আমল হচ্ছে দু‘আ বা মুনাজাত করা। মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট বান্দা কোন কিছু প্রার্থনা করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যন্ত খুশি হন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি চান বান্দা যেন দু‘আ-মুনাজাতের মাধ্যমে উনার নিকট বেশী বেশী প্রার্থনা করে। যে বেশী বেশী দু‘আ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে মুহব্বত করেন।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللَّهِ رضى الله تعالى عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَلُوا اللَّهَ مِنْ فَضْلِه فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يُحِبُّ أَنْ يُسْأَلَ وَأَفْضَلُ الْعِبَادَةِ
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ফদ্বল (দয়া) মুবারক প্রার্থনা করো। কেননা, খলিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রার্থনা বা দু‘আ করা পছন্দ করেন এবং তা ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম। ” (তিরমিযী শরীফ)
অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে-
عَنْ حضرت ام المؤمنين الثالثة عليه السلام قَالَتْ سُئل النبي صلى الله عليه وسلم أي الْعِبَادَةِ أَفْضَلُ قَالَ دُعَاءُ الْمَرْءِ لِنَفْسِهِ
অর্থ: “হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আরজু করা হলো যে, ‘কোন ইবাদত সবচেয়ে উত্তম?’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- মানুষের দু‘আ বা মুনাজাত, যা নিজের জন্য করা হয়। ” (বুখারী শরীফ)
দু‘আ বা মুনাজাত উনার ক্বিবলা:
রদ্দুল মোহতার কিতাবসহ বহু কিতাবে লিখিত রয়েছে, সম্মানিত ছলাত তথা নামায উনার ক্বিবলা যেরূপ মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে, দু‘আ বা মুনাজাত উনার ক্বিবলা সেরূপ আসমানের দিকে।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, দু‘আ বা মুনাজাত উনার ক্বিবলা আসমানের দিকে তাতো ঠিক আছে; এজন্য কেউ যেন আবার মনে না করে যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কেবল মাত্র উপরেই বিরাজমান। মূলতঃ খালিক, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সদা সর্বদা সব স্থানেই বিরাজমান।
সমস্ত দু‘আ বা মুনাজাতে দু’হাত উঠানোর নিয়ম:
দু‘আ বা মুনাজাত উনার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা উভয় হাতের হাতলি বিস্তার করে দু‘আ বা মুনাজাত করবে (অর্থাৎ আরজু-ফরিয়াদ করবে)। আর দু‘আ বা মুনাজাত শেষ করে উভয় হাত দ্বারা মুখমন্ডল মাসেহ করবে। এমনকি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন দু‘আ মুবারক সম্পন্ন করতেন তখন উভয় মহাসম্মানিত নূরুল মাগফিরাত মুবারক তথা হাত মুবারক দ্বারা মুখমন্ডল মাসেহ না করা পর্যন্ত ক্ষান্ত হতেন না। ” (মারাকিউল ফালাহ)
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়-
عَنْ حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه قَالَ صلى الله عليه وسلم سَلُوا اللَّهَ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ وَلَا تَسْأَلُوهُ بِظُهُورِهَا فَإِذَا فَرَغْتُمْ فامسحوا بهَا وُجُوهكُم
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সুওয়াল করো, আরজি করো নিজের হাতের পেটের দিক দিয়ে, পিঠের দিক দিয়ে দু‘আ বা মুনাজাত করো না। অতঃপর যখন দু‘আ বা মুনাজাত শেষ করো তখন হাত দ্বারা নিজেদের চেহারা মাসেহ করো। ” (আবু দাউদ শরীফ, জামি‘উছ ছগীর) (চলবে)
-মুহম্মদ হুসাইন নাফে’।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












