পবিত্র কুরবানী বিষয়ক সুওয়াল-জাওয়াব
, ২৬ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৬ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ মে, ২০২৫ খ্রি:, ১২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

সুওয়াল:
পবিত্র কুরবানীর পশুর জন্য কোন কোন ত্রুটি থেকে মুক্ত হওয়া জরুরী?
জাওয়াব:
পবিত্র কুরবানীর জন্য পশু দোষ-ত্রুটি মুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। পশুর ত্রুটিগুলি দু’ভাগে বিভক্ত। (এক) আয়িবে ফাহিশ অর্থাৎ বড় ধরনের দোষ বা ত্রুটি। যার কোন একটি পশুর মধ্যে থাকলে উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী শুদ্ধ হবে না। যেমন- এমন দূর্বল পশু, যার হাড়ে মজ্জা বা মগজ শুকিয়ে গেছে। অথবা যে সকল পশু কুরবানীর জায়গা পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারেনা। যেসব পশুর একটি পা এরূপ নষ্ট হয়ে গেছে যে, উক্ত পা দ্বারা চলার সময় কোন সাহায্য নিতে পারে না। যে পশুর কান অথবা লেজের তিনভাগের একভাগ কাটা গেছে, যে পশুর শিং-এর গোড়া থেকে ভেঙ্গে গেছে, যে পশুর কান একেবারে গজায়নি, অর্ধেক দাঁত পড়ে গেছে এরূপ পশু দ্বারা পবিত্র কুরবানী শুদ্ধ হবে না।
(দুই) আয়িবে ইয়াসির অর্থাৎ সাধারণ দোষ বা ত্রুটি। যে দোষ-ত্রুটি থাকলে পবিত্র কুরবানী শুদ্ধ হবে। যেমন যে পশুর কোন এক অঙ্গের এক তৃতীয়াংশের কম নষ্ট হলে উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী শুদ্ধ হবে। অথবা যে পশুর অর্ধেকের বেশী দাঁত যদি থাকে, তবে উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী জায়িয রয়েছে। অথবা যে পশুর শিং একেবারে উঠেনি, উক্ত পশু দ্বারা পবিত্র কুরবানী শুদ্ধ হবে।
হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত-
اَشَارَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِه وَيَدِى قَصْرٌ مِنْ يَدِه اَرْبَع لَايُضَحّىْ بِـهِنَّ اَلْعَوْرَاء اَلْبَيّنُ عَوْرُهَا وَالْـمَرِيْضَةُ اَلْبَيّنُ مَرْضُهَا وَالْعَرْجَاء اَلْبَيّنُ ظَلْعُهَا وَالْعَجْفَاءَ اَلَّتِيْ لَا تُنْقِي فَقَالُوْا لِلْبَرَاءِ فَاِنـَّمَا نَكَرَهُ النُّقْصَ فِى السّنّ وَالْاُذْنِ وَالذَّنْبِ قَالَ فَاكْرِهُوْا مَا شِئْتُمْ وَلَا تُـحَرّمُوْا عَلى النَّاسِ.
অর্থ : “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাত মুবারক দিয়ে ইশারা মুবারক করেন, আমার হাত মুবারক তো উনার হাত মুবারক থেকে ছোট এবং বলেন, ‘চার ধরণের পশু দ্বারা কুরবানী করা যায় না- ১) যে পশুর চোখের দৃষ্টিহীনতা সুস্পষ্ট, ২) যে পশু অতি রুগ্ন, ৩) যে পশু সম্পূর্ণ খোড়া এবং ৪) যে পশু এত জীর্র্ণ-শীর্র্ণ যে তার হাড়ে মগজ নেই। ’ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বললেন, আমরা তো দাঁত, কান ও লেজে ত্রুটিযুক্ত প্রাণী দ্বারাও কুরবানী করা অপছন্দ করি। তিনি বললেন, যা ইচ্ছা অপছন্দ করতে পারেন তবে তা অন্যের জন্য হারাম করবেন না। ” (আবূ দাঊদ শরীফ, নাসায়ী শরীফ, তিরমিযী শরীফ)
হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত-
اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنْ نَسْتَشْرِفَ الْعيْنَ وَالْاُذْنَ وَاَنْ لَّانُضَحِّى بِـمُقَابَلَةِ وَلَا مُدَابَرَةِ وَلَا شَرْقَاءِ وَلَا خَرْقَاءِ.
অর্থ : “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের আদেশ মুবারক করেন, আমরা যেন পবিত্র কুরবানী উনার পশুর চোখ ও কান ভালোভাবে লক্ষ্য করি এবং ওই পশু দ্বারা পবিত্র কুরবানী না করি, যার কানের অগ্রভাগ বা পশ্চাদভাগ কর্তিত। তদ্রুপ যে পশুর কান লম্বায় ফাঁড়া বা কান গোলাকার ছিদ্রযুক্ত। ” (আবূ দাঊদ শরীফ, নাসায়ী শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ)
হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে আরো বর্ণিত আছে-
نَـهٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنْ نُضَحِّى بِاَعْضَبِ الْقَرْنِ وَالْاُذْنِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের শিং ভাঙ্গা বা কান-কাটা পশু দ্বারা পবিত্র কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন। ” (ইবনে মাজাহ শরীফ)
অন্যত্র বর্ণিত আছে-
وَلَاتَذْبَـحُوْا عَجْفَاءَ وَلَا عَرْجَاءَ وَلَا عَوْرَاءَ وَلَامَقْطُوْعَةَ الْاُذْنِ وَلَوْ وَاحِدَةً
অর্থ : “তোমরা ক্ষীণ-দুর্বল, পঙ্গু, চক্ষুহীণ ও কান কাটা পশু যদিও একটি কান হয়। এমন পশু কুরবানী করবে না।
অর্থাৎ নি¤েœাক্ত দোষ-ত্রুটিযুক্ত পশু কুরবানী করলে কুরবানী ছহীহ হবে না-
১. শিং ভাঙ্গা, ২. কান কর্তিত বা গোলাকার ছিদ্রযুক্ত, ৩. চক্ষুহীন বা দৃষ্টিহীনতা সুস্পষ্ট, ৪. নাক কাটা, ৫. ঠোঁট কাটা বা দাঁত ভাঙ্গা, ৬. পা খোড়া বা পঙ্গু, ৭. লেজ কর্তিত, ৮. খুজলী/পাচড়াযুক্ত ৯. অতি রুগ্ন বা এমন জীর্ণ শীর্ণ যে তার হাড়ে মগজ নেই, ১০. ত্রুটিযুক্ত বাঁট, ১১. পিছন দিক ত্রুটিযুক্ত।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
উলামায়ে সূ’ ধর্ম ব্যবসায়ীদের পরিচিতি ও হাক্বীক্বত (৮)
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরি করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (২৯)
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ শান মুবারক ‘আছবারুছ ছবিরীন’ (২)
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাদীছ শরীফে আরব দেশ থেকে ইহুদী-নাছারা তথা সমস্ত কাফির-মুশরিকদেরকে বের করে দেয়ার ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী রয়েছে
১২ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নামাযে মহান আল্লাহ পাক ও বান্দার মাঝে কথোপকথন
১২ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
১২ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)