পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (১)
, ১০ই শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ২৭ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কে এতো বেশি হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে যে, এটাকে কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই। বর্তমানে আমাদের চারপাশে এমন কিছু লোক বের হয়েছে, যাদেরকে পবিত্র হাদীছ শরীফ দিয়ে দলীল দেয়া হলে তারা জাল-দ্বঈফ বলে নাক সিটকায়। ছহীহ হাদীছ শরীফ তালাশ করে। হয়তো তারা নিজেরাও জানে না যে, ছহীছ হাদীছ শরীফ আসলে কি। যারা হক্ব তালাশী তাদের জন্য অনেক বেশি দলীলের প্রয়োজন হয়না। আর যাদের অন্তরে মোহর পড়েছে, তাদেরকে হাজার দলীল দিলেও তারা সেটা গ্রহণ করবে না। যারা হক্ব তালাশী তাদের জন্যই মূলত নি¤েœ পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কে কয়েকখানা ছহীহ হাদীছ শরীফ উল্লেখ করা হলো।
পবিত্র হাদীছ শরীফ নং (১)
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بن النَّضْرِ الْعَسْكَرِيُّ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بن خَالِدٍ، حَدَّثَنَا عُتْبَةُ بن حَمَّادٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، وَابْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ مَالِكِ بن يُخَامِرَ، عَنْ حضرت مُعَاذِ بن جَبَلٍ رضى الله تعالى عنه عَن ِالنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ:"يَطَّلِعُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى خَلْقِهِ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ"
অর্থ: হযরত মুআয বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহা ন আল্লাহ পাক তিনি মধ্য শা’বানের রাতে অর্থাৎ পবিত্র শবে বরাতে সমস্ত সৃষ্টির প্রতি আতœপ্রকাশ করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন। সুবহানাল্লাহ! (মু’জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৫/২১, হিলইয়াতুল আউলিয়া ৫/১৯১, ছহীহ ইবনে হিব্বান ১২/৪৮১ ইত্যাদি)
হযরত আবুল হাসান নূরুদ্দীন আলী ইবনে আবী বকর হায়ছামী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৮০৭ হিজরী) তিনি উনার ‘মাজমাউয যাওয়ায়িদ’ কিতাবে এই হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করে বলেন-
رواه الطبراني في الكبير والأوسط ورجالهما ثقات
অর্থ: হযরত ইমাম ত্ববারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মু’জামুল কাবীর’ এবং ‘মু’জামুল আওসাত্ব’ কিতাবে এই হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করেছেন। উনার ২টি সনদেরই রাবীগণ ছিক্বাহ বা বিশ্বস্ত। (মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৭/৩৮০)
শায়েখ শুআইব আরনাউত বলেন-
حديث صحيح بشواهده
অর্থাৎ এই বর্ণনার পক্ষে আরো শাহেদ হাদীছ শরীফ থাকার কারণে এই পবিত্র হাদীছ শরীফখানা ছহীহ। )ছহীহ ইবনে হিব্বান ১২/৪৮১(
পবিত্র শবে বরাতের সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা যারা করে ও এমনকি অস্বীকার পর্যন্ত করে তারা হলো লা-মাযহাবী সম্প্রদায়। তারা যাকে ইমাম হিসেবে মানে সেই নাছীরুদ্দীন আলবানীও এই পবিত্র হাদীছ শরীফখানাকে ছহীহ বলে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। সে তার ‘সিলসিলাতুছ ছহীহার’ মধ্যে এই হাদীছ শরীফখানা উল্লেখ করে মন্তব্য করেছে-
حديث صحيح ، روي عن جماعة من الصحابة من طرق مختلفة يشد بعضها بعضا و هم حضرت معاذ ابن جبل رضى الله تعالى عنه و حضرت أبو ثعلبة الخشني رضى الله تعالى عنه وحضرت عبد الله بن عمرو رضى الله تعالى عنه وحضرت أبي موسى الأشعري رضى الله تعالى عنه و حضرت أبي هريرة رضى الله تعالى عنه و حضرت أبي بكر الصديق عليه السلام وحضرت عوف ابن مالك رضى الله تعالى عنه وسيدتنا حضرت عائشة عليها السلام
অর্থ: এই হাদীছ শরীফখানা ছহীহ। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের একটি জামায়াত থেকে বিভিন্ন সনদে এই হাদীছ শরীফখানা বর্ণিত হয়েছে। উনাদের একজনের বর্ণনা দ্বারা অপরজনের বর্ণনা সুদৃঢ় হয়েছে। আর উনারা হচ্ছেন- ১. হযরত মু’আয বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ২. হযরত আবূ ছা’লাবা খশানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ৩. হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ৪. হযরত আবূ মূসা আশআরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ৫. হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ৬. আফদ্বালুন নাস বা’দ্বাল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম, ৭. হযরত আওফ বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ৮. উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি। (আস সিলসিলাতুছ ছহীহাহ ৩/২১৮, হাদীছ শরীফ নং ১১৪৪)
এছাড়াও আরো অনেক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। এখানে আলবানীর কথা দ্বারাই প্রমাণিত হয় উল্লেখিত ৮ জন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে শবে বরাত সম্পর্কে বর্ণিত সমস্ত পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহই ছহীহ। এরপরেও কি গোমরাহ লা-মাযহাবী সম্প্রদায় পবিত্র শবে বরাতকে অস্বীকার করবে?
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












