পবিত্র তারাবীহ নামায ‘২০ রাকাত’কে অস্বীকার করতে গিয়ে ‘বুখারী শরীফ’ উনার প্রথম হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বানালো সালাফীরা
, ১১ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৩ হাদি ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৩ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রি:, ২০ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
(তাওহীদ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বুখারী শরীফ উনার ২য় খন্ড ৩৪০ পৃষ্ঠার স্ক্যান কপি)
তারাবীহ নামায উনাকে অস্বীকার করতে গিয়ে এমনই একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে গুমরাহ ফিতনাগ্রস্ত সালাফীরা। বাংলাদেশে সালাফীদের অন্যতম প্রকাশনী হচ্ছে ‘তাওহীদ প্রকাশনী’। তাওহীদ প্রকাশনী ছাড়া কোনো বই তারা পড়ে না। ‘বুখারী শরীফ’ও তারা তাওহীদ প্রকাশনী থেকে সালাফীদের মনগড়া মতামতসহ প্রকাশ করেছে। প্রায় প্রতিটা পবিত্র হাদীছ শরীফেই তারা বিভিন্ন টিকা সংযোজন করে তাদের বক্র নফসের চাহিদা অনুযায়ী সমালোচনা-আলোচনা করেছে। ‘তাওহীদ প্রকাশনী’র প্রকাশিত ‘বুখারী শরীফ’ উনার ২য় খ- ৩৪০ পৃষ্ঠার তারাবীহর সলাত অধ্যায়ে তারবীহর রাকাত প্রসঙ্গে কিছু আলোকপাত করেছে। এখানে তারা তারাবীহর নামায ২০ রাকাতের একটি বর্ণান উল্লেখ করে সেটা জাল বলেছে। মুছান্নাফে ইবনে আবি শায়বার ৭৬৮২ নম্বর হাদীছ শরীফ যেখানে ২০ রাকাত তারাবীহর পক্ষে মুরসাল সনদ বর্ণিত আছে। এই হাদীছ শরীফ উনার একজন রাবী হচ্ছেন হযরত ইয়াহিয়া ইবনে সাঈদ আল আনছারী রহমতুল্লাহি আলাইহি। যিনি একজন বিখ্যাত তাবেয়ী ছিলেন। উনাকে ‘তাওহীদ পাবলিকেশনস’-এর প্রকাশিত ‘বুখারী শরীফ’-এর টিকায় সালাফী-ওহাবীরা মিথ্যাবাদী বলেছে। এবং বলেছে- উনার কোনো বর্ণনা সত্য নয়, বরং সকল বর্ণনা প্রত্যাখ্যাত। অর্থাৎ উনার কোনো বর্ণনা গ্রহণ করা যাবে না। (তাওহীদ প্রকাশনীর সম্পাদনায় বুখারী শরীফের ২য় খণ্ড- ৩৪৩ পৃষ্ঠা)
কিন্তু এবার ভুল জায়গায় হাত পড়ে গেছে, স্বয়ং ‘বুখারী শরীফ’ উনার প্রথম হাদীছ শরীফে। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে চোরের দশ দিন আর গৃহের মালিকের একদিন। সুতরাং চোর ধরা পড়ে গেলো। এবং গণধোলাইয়ের দায়িত্ব জনগণের হাতে ন্যস্ত করা হলো। সেই একই ‘তাওহীদ প্রকাশনী’র সম্পাদনায় ‘বুখারী শরীফ’-এর ১ম খ- ২য় পৃষ্ঠা ১নং পবিত্র হাদীছ শরীফ-এর সনদটা একটু পড়ুন। স্ক্যান কপিতে আন্ডারলাইন করে দেয়া হয়েছে। ‘বুখারী শরীফ’ উনার ১ম হাদীছ শরীফ “ইন্নামা আ’মালু বিন্নিয়াত”- এই মশহূর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার রাবী হচ্ছেন হযরত ইয়াহিয়া ইবনে সাঈদ আল আনছারী রহমতুল্লাহি আলাইহি। মহাজালিয়াত ওহাবী-সালাফীরা তারাবীহ নামায ২০ রাকাত অস্বীকার করতে গিয়ে বক্র নফসের দ্বারা প্রতারিত হয়ে ‘হযরত ইয়াহিয়া ইবনে সাঈদ আল আনছারী রহমতুল্লাহি আলাইহি’ উনার মতো মহান বুযুর্গ ওলীআল্লাহ ও মুহাদ্দিছকে মিথ্যাবাদী বলতেও কুন্ঠাবোধ করে নাই। অথচ ১নং হাদীছ শরীফে হযরত ইয়াহিয়া ইবনে সাঈদ আল আনছারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সালাফীদের কাছে চরম সত্যবাদীই আছেন। যেই তিনি অন্য কিতাবে তারাবীর নামায ২০ রাকাত বলে ফেললেন সাথে সাথে জালিয়াত ওহাবী-সালাফীদের কাছে মিথ্যাবাদী হয়ে গেলেন। নাউযুবিল্লাহ!
(তাওহীদ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বুখারী শরীফ উনার ১ম খণ্ড- ২য় পৃষ্ঠার স্ক্যান কপি)
এখন সালাফীরা তারাবীহ নামায ২০ রাকাত বর্ণনা করার জন্য যদি হযরত ইয়াহিয়া ইবনে সাঈদ আল আনছারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে মিথ্যাবাদী বলতে পারে, তবে সেই একই রাবী দারা বর্ণিত বুখারী শরীফ উনার ১নং হাদীছ শরীফকেও জাল বলবে???
আরো ভয়ানক বিষয় হচ্ছে- এই অপবাদ দিতে গিয়ে সালাফী জালিয়াতরা হযরত ইবনে হাতীম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রতিও মিথ্যারোপ করেছে। কারণ হযরত ইবনে হাতীম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘জরাহ ওয়াত তাদীল’ কিতাবে হযরত ইয়াহিয়া ইবনে সাঈদ আল আনছারী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে মিথ্যাবাদী বলেন নাই, বরং ছিক্বাহ ও চরম সত্যাবাদী হাদীছ শরীফের শায়েখ বলেছেন।
এখন আপনারাই বিচার করেন। এই হলো নামায চোর সালাফীদের হাক্বীকত। এরা পবিত্র হাদীছ শরীফ নিয়েও মিথ্যাচার করতে পিছপা হয় না। পবিত্র হাদীছ শরীফে আছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যাচার করলো, সে যেন দুনিয়ায় থাকতেই তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নিলো।” (বুখারী শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আ’লামীন মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, হুজ্জাতুল ইসলাম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত উসীলায় এই মিথ্যাবাদীদের হাত থেকে সহজ-সরল মুসলমানদের হিফাজত করুন। আর এসব হাদীছ শরীফ কারচুপিকারী, মিথ্যাবাদী, জালিয়াত ইহুদী এজেন্টদের লাঞ্ছিত করে ধ্বংস করুন। আমীন।
তাওহীদ পাবলিকেশন থেকে সম্পাদিত বুখারী শরীফের অনলাইন ডাউনলোড লিংক (http://bit.ly/1X4bZvv)
-মুহম্মদ নূরউদ্দীন পলাশ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দান-ছদকাহ বালা-মুসিবত দূর করে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বেপর্দা-বেহায়াপনাকে যারা ‘স্বাধীনতা’ বলে থাকো, তোমরা কি পরকালে বিশ্বাস করো না?
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সন্তান লালনপালনকারীদের যে বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখা জরুরী
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পুরুষ ও মহিলা উভয়কেই পর্দা পালনের বিষয়ে সচেতন হতে হবে
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার অনন্য এক ঘটনা মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দ্বিতীয় মাসে শিশুর যে পরিবর্তনগুলো লক্ষণীয়
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যিনি আল্লাহওয়ালা হয়েছেন উনার পথ অনুসরণ করে চলো
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নারী নির্যাতনের অন্যতম একটি কারণ : মিডিয়ার অশ্লীলতা
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৫)
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)