পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার পবিত্রতা রক্ষা করা সকলের জন্যেই ফরয
, ১৬ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ৩০ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার বুযূর্গী সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে,
مَنْ اكْرَمَ شَهْرَ اللهِ رَمَضَانَ اَكْرَمَهُ اللهُ تَعَالَـى بِالْـجَنَّةِ
অর্থ : যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মাস পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনাকে সম্মান করলো মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে সম্মানিত জান্নাত দিয়ে সম্মানিত করবেন। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে উল্লেখ আছে যে, একজন বুযূর্গ ব্যক্তি একবার স্বপ্নে দেখেন- এক ইহুদী মহিলা সম্মানিত জান্নাতে বিচরণ করছেন, খুব আরাম-আয়েশে আছেন। বুযূর্গ ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে মহিলা! আপনি তো ইহুদী ছিলেন, আপনি কি করে সম্মানিত জান্নাতে গেলেন? সম্মানিত দ্বীন ইসলাম আসার পর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ না করে যে সকল বিধর্মী মারা যাবে তারা তো সম্মানিত জান্নাতে যেতে পারবে না বরং তারা চির জাহান্নামী হবে। ’
জবাবে ইহুদী মহিলা বললেন, ‘হে বুযূর্গ ব্যক্তি! মহান আল্লাহ পাক তিনি একটি আমলের ওসীলায় আমাকে ঈমান দান করেছেন ও ইন্তিকালের পর সম্মানিত জান্নাত নছীব করেছেন। ’
বুযূর্গ ব্যক্তি বললেন, ‘কোন আমলের ওসীলায় আপনি নাজাত পেলেন?’
ইহুদী মহিলা বললেন, ‘আমার ইন্তিকালের পূর্বে যে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ ছিলো সেই পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে দিনের বেলায় আমি আমার ছোট সন্তানকে নিয়ে কিছু খাদ্য খরিদ করার জন্য বাজারে যাই। তখন আমার ছোট সন্তানকে কিছু রুটি বিস্কুট কিনে দেই। সে সন্তান রুটি-বিস্কুট পেয়ে সাথে সাথে খেতে শুরু করে। যেহেতু সে অবুঝ শিশু। তখন আমি তাকে একটি আঘাত করে বলি, হে বালক! এটা মুসলমানদের পবিত্র মাস। এ মাসে প্রকাশ্যে কিছু খেতে হয় না। এ মাসকে সম্মান করা উচিত। ’ এ কথা বলে আমি তার হাত থেকে রুটি-বিস্কুট নিয়ে নেই। ইহুদী মহিলা বললেন, এভাবে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনাকে তা’যীম করার ওসীলায় মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সম্মানিত ঈমান দান করেন এবং সম্মানিত ঈমানের সাথে ইন্তিকাল দান করে সম্মানিত জান্নাত নসীব করেন। ’ সুবহানাল্লাহ!
এখন ফিকিরের বিষয় যে, একজন অমুসলিম পবিত্র রমাদ্বান শরীফকে তা’যীম-তাকরীম বা ইজ্জত-সম্মান করার কারণে যদি তার সম্মানিত ঈমান ও জান্নাত নছীব হয়, তবে যদি কোন মুসলমান পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনাকে তা’যীম-তাকরীম বা ইজ্জত-সম্মান করে, সকল স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে, তবে সে কতটুকু ফযীলত লাভ করবে তা সত্যিই চিন্তা-ফিকিরের বিষয়।
অথচ আজকাল মুসলমানই পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার গুরুত্ব, সম্মান ও পবিত্রতা বুঝে না ও মানে না। তারা পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার মধ্যে প্রকাশ্যে খানাপিনা করে, বেপর্দা চলে, গান-বাজনা, সিনেমা-নাটক, খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। নাউযুবিল্লাহ! অথচ এ সমস্ত হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা সকল মুসলমানদের জন্য ফরয-ওয়াজিব।
এখন দেখা যায়- পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার মধ্যেও স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি খোলা রাখা হয়। এবং নানা পরীক্ষা, কোচিং ইত্যাদির নামে ছাত্র-ছাত্রীদের এমন ব্যস্ত রাখা হয় যার ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা অধিকাংশই রোযা রাখে না। অথচ তারা মুসলমান। পবিত্র রোযা তাদের দ্বীনের প্রধান ভিত্তি ও ফরয আমল।
কাজেই, বাংলাদেশ সরকারের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হবে, প্রতি বছর পবিত্র রমাদ্বান মাস উনার পূর্ব থেকেই ছুটি ঘোষণা করা এবং এ সিদ্ধান্ত দায়িমীভাবে বলবৎ রাখা।
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার মধ্যে ইবাদতের ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আদম সন্তানের রোযা ব্যতীত প্রত্যেক নেক আমল তার নিজের জন্য। কেননা, রোযা একমাত্র আমারই জন্য রাখা হয় এবং তার প্রতিফল আমি নিজেই (যত ইচ্ছা) দান করব। সম্মানিত রোযা সমস্ত মন্দ কাজ তথা জাহান্নাম হতে বাঁচার ঢালস্বরূপ। যখন তোমাদের কেউ রোযা রাখবে তখন সে অশ্লীলতা ও ঝগড়া করবে না। তাকে যদি কেউ গালী দেয় বা তাকে হত্যা করতে চায়, সে বলবে আমি রোযাদার। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! যাঁর পবিত্রতম কুদরতী হাত মুবারক-এ আমার পবিত্রতম প্রাণ মুবারক, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত রোযাদারের মুখের ঘ্রাণ মিশ্কে আম্বরের সুঘ্রাণের চেয়েও বেশী পছন্দনীয়। সম্মানিত রোযাদারের জন্য দু’টি খুশি। যখন সে ইফতার করে তখন খুশি প্রকাশ করে আর যখন সে মহান আল্লাহ পাক উনার সাক্ষাৎ মুবারক লাভ করবে তখনও খুশি প্রকাশ করবে। (তিরমিযী শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












