পবিত্র শবে বরাত শরীফ উনার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
, ১৪ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৭ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ৩১ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ

হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনি একবার সফর করছিলেন। সফর করতে করতে এক এলাকায় গেলেন। বিরাট একটা ময়দান! সেখানে যেয়ে বললেন যে, বারে এলাহী! এখানে এই যে অনেক বড় একটা ময়দান, এখানে আপনার কোনো নিদর্শন মুবারক আছে কি দেখার মতো? তখন যিনি খ¦ালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন যে, হ্যাঁ; আছে। হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি জিজ্ঞাসা করলে, কোথায়? মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি সামনে সোজা হাঁটতে থাকেন। উনি সোজা হাঁটতে থাকলেন। হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর আসলেন। আসার পরে দেখলেন, সামনে বিরাট একটা গম্বুজ! সেখানে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। তখন উনি বললেন, বারে এলাহী! এখন তো রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। বিরাট একটা গম্বুজ এখানে। তখন যিনি খ¦ালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন যে, আপনি এক কাজ করুন- আপনার যে আছা (লাঠি) মুবারকখানা আছে, এটা সোজা করে আস্তে গম্বুজের উপর রাখুন। তাহলেই রাস্তা হয়ে যাবে। উনি যখন আছা মুবারকখানা রাখলেন, সাথে সাথে গম্বুজটা দুই ভাগ হয়ে গেলো! দেখা গেলো এর মধ্যে একজন বুযূর্গ লোক! মুখতালিফ বর্ণনা- কেউ কেউ বলেছেন, বুযূর্গ লোকটি তাসবীহ হাতে বসা ছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন, দাঁড়ানো ছিলেন। উনার সামনে আনার ফল। এটা দেখে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তাজ্জুব হয়ে গেলেন! তিনি বললেন, এটা কি মহান আল্লাহ পাক? এর কী হাক্বীক্বত? যিনি খ¦ালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ; এটার হাক্বীক্বীত রয়েছে। আমাকে বলতে হবে না। আপনি ঐ বুযূর্গ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করুন। ঐ বুযূর্গ ব্যক্তিই বলবেন। তখন উনি ঐ বুযূর্গ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কে? কতদিন ধরে আছেন এখানে? ঐ বুযূর্গ ব্যক্তি বললো- আমি এখানে ৪শ বছর ধরে যিকির-ফিকির, ইবাদত-বন্দেগীতে মশগূল আছি। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
তখন হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনি জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে আপনি যে এখানে থাকেন, খাওয়া-দাওয়া করেন কী? উনি বললেন, এই যে দেখেন জান্নাতী আনার ফল। আমাকে প্রতিদিন জান্নাত থেকে আনার ফল দেয়া হয়। আমি সেটা খাই। ঠিক আছে; তাহলে আপনার ওযূ-ইস্তিনজা, অন্যান্য বিষয় কিভাবে ফায়ছালা হয়? উনি বললেন, এটা কুদরতীভাবে ফায়ছালা হয়। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাহলে আপনি দিন-রাত্রি বুঝেন কিভাবে? উনি বললেন, দিন হলে ভিতরে একটু আলো হয়, আর রাত্রি হলে অন্ধকার হয়। তখন জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে আপনি এখানে আসলেন কিভাবে? তখন সেই ব্যক্তি বললেন, আসলে আমি আমার পিতা-মাতা উনাদের খুব বাধ্যগত সন্তান ছিলাম। আমি আমার বাবা-মা উনাদের অনেক খেদমত করেছি। আমার বাবা-মা আমার প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন। উনারা ইন্তিকাল করার সময় আমার জন্য অনেক দো‘আ করেছেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাকে কুদরতীভাবে হেফাযত করেন এবং কুদরতীভাবে যেন মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দেগী করার তাওফীক্ব দান করেন। যার কারণে উনারা যখন ইন্তিকাল করেন, তারপর আমি কুদরতীভাবে এখানে এসেছি। আমি কুদরতীভাবে এখানে ৪শ বছর যাবৎ ইবাদত-বন্দেগীতে মশগূল রয়েছি। এটা শুনে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক! তাহলে আপনার এই বান্দা তো অনেক বড় নেককার! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ; সে অনেক বড় নেককার। ঠিকই আছে। তখন যিনি খ¦ালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম! আপনি এটা দেখে তাজ্জুব হয়ে গেলেন? এই লোকের ৪শ বছরের ইবাদত-বন্দেগী জেনে আপনি কি আশ্চর্য হচ্ছেন? এর চেয়ে আরো আশ্চর্যময় বিষয় রয়েছেন। তখন হযরত রূহুল্লাহ আলাইহি সালাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক! তাহলে আরো আশ্চর্যময় বিষয় কি রয়েছেন? তখন যিনি খ¦ালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, সেটা হলো- আমার যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়। সেই বিষয়টা কি? সেই বিষয়টা হচ্ছেন- আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার উম্মতদেরকে আমি একটা রাত্র মুবারক দিয়েছি। সেই রাত্রিতে যদি কোনো উম্মত খালিছ নিয়তে মাত্র দুই রাকাত নামায পড়তে পারে, তাহলে এই বুযূর্গ ব্যক্তি ৪শ বছর ইবাদত-বন্দেগী করে যেই নেয়ামত হাছিল করেছেন, মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত হাছিল করেছেন, সেই উম্মত এই বুযূর্গের থেকে বেশি নেয়ামত হাছিল করবেন, মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন যে, মহান আল্লাহ পাক! সেটা কোন্ রাত্র? তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, সেটা হচ্ছে- লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান (পবিত্র ১৫ই শা’বান শরীফ), শবে বরাতের রাত্র। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনি সিজাদয় পড়ে গেলেন যে, মহান আল্লাহ পাক! তাহলে আমাকে নবী-রসূল না করে সেই আখেরী নবী, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত করে দিন। উনি সিজাদয় গেলেন। যেয়ে দো‘আ করতে থাকলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি জানালেন, ঠিক আছে; আপনাকে ক্ববূল করা হলো। উনি আখেরী যামানায় উম্মত হিসেবে আসবেন।
তাহলে এই উম্মতকে কতো নেয়ামত দেয়া হয়েছে? তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি কতটুকু রহমান, রহীম, গাফ্ফার, সাত্তার? ঠিক একইভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি রহমাতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম কতটুকু? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উম্মতদেরকে একটা রাত্র দেয়া হয়েছে। সেই রাত্রে দুই রাকাত নামায পড়লে এতো ফযীলত! তাহলে এই উম্মতের কত ফযীলত? তাহলে সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ফযীলত মুবারক কত? উনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সব। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
(ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আলোচনা মুবারক থেকে সংকলিত। )
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড (১২)
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের তরফ থেকে বিশেষ দাওয়াত মুবারক এবং খুশি মুবারক প্রকাশ
২৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড (১১)
২৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রচিত সম্মানিত কবিতা বা ক্বাছীদাহ্ শরীফ
২২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক
২২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যারা জীবতি আছ, তাদরে দায়ত্বি হলো- মুসলমানদরে পক্ষে দো‘আ করা। কাফরেদরে বরিুদ্ধে কঠনি বদ দো‘আ করা
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড (১০)
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক অবমাননাকারীদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড(৯)
২০ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সিবতু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর রবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
এক নযরে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
১৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)