পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (৩)
, ০৩ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৫ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ১৪ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
যা একদিকে বাংলা ভাষার উপর আগ্রাসন, অন্যদিকে মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার জন্য হুমকীস্বরূপ। বহিরাগত সংস্কৃতের আগ্রাসী ও ঈমানবিধ্বংসী সেসব শব্দ ও পরিভাষাগুলোর মধ্যে এখানে কিছু শব্দ ও পরিভাষা তুলে ধরা হয়েছে।
কিছু আগ্রাসী শব্দ ও পরিভাষার ব্যাখ্যা:
১১. কীর্তন বা গুণকীর্তন:
কীর্তন শব্দটি হিন্দুদের ধর্মীয় একটি শব্দ, যা রাধাকৃষ্ণের কথিত লীলা বিষয়ক গান। কীর্তন বা গুণকীর্তন শব্দ ব্যবহার করা মুসলমানদের জন্য জায়েয হবে না। বলতে হবে তা’রীফ, প্রশংসা, ছানা ছিফত ইত্যাদি।
১২. অপ্সরা-অপ্সরি:
হিন্দু শাস্ত্র মতে, অপ্সরা-অপ্সরি বলা হয় দেবযোনি বা স্বর্গ বিরাঙ্গনাকে। অথচ দেখা যায় মুসলমানদের মধ্যে অনেকে জান্নাতী হূর বোঝাতে উপরের নোংড়া শব্দটি ব্যবহার করে থাকে, যেটা মারাত্মক রকমের ভুল। জান্নাতী হূরগণ হচ্ছেন পূতঃপবিত্রা।
১৩. ‘জল’ সংক্রান্ত শব্দ:
জল শব্দটি কলকাতার হিন্দুরা ব্যবহার করে। কাজেই জল সংক্রান্ত যাবতীয় শব্দ পরিত্যাজ্য। যেমন- জলাশয়, জলবায়ু ইত্যাদি। জল এর পরিবর্তে পানি বা আব ব্যবহার করতে হবে। যেমন- আবাশয়, পানিস্তূপ, পানাশয়/পানিশয়, আবহাওয়া ইত্যাদি।
১৪. আপামর:
আপামর মানে পামর পর্যন্ত। পামর শব্দের অর্থ হচ্ছে- পাপিষ্ঠ, নরাধম, মূর্খ, নীচ ইত্যাদি। কথিত আর্য সম্প্রদায় ব্যতীত আর্যদের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য সম্প্রদায়কে পামর বলা হত। তখন এই পামর বা আপামর শব্দটি ব্যবহার করা হতো। কাজেই এটি ব্যবহার করা যাবে না। ব্যবহার করতে হবে আম জনতা, আওয়ামুন নাস, সকলে ইত্যাদি।
১৫. ‘দেব’ সংক্রান্ত শব্দ:
দৈববাণী, দৈব, দৈবাৎ, দৈবক্রমে, দৈবচয়ন, দুর্বিপাক, দিব্যি ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এই প্রত্যেকটি শব্দের মূল হচ্ছে হিন্দুদের দেব-দেবতার সাথে সংযুক্ত। যেমন দুর্বিপাক মানে হচ্ছে দেবতা সৃষ্ট দুর্ঘটনা, দৈবচয়ন বলতে দেবতার ইচ্ছাকে বুঝায়। অথচ দ্বীন ইসলামে দেবতা সম্পর্কিত আক্বীদা পোষণ করা শিরক। কাজেই মুসলমানদের জন্য হিন্দুদের দেব-দেবতা সংক্রান্ত শব্দ ব্যবহার করা জায়েয হবে না।
১৬. ধোয়া তুলসী পাতা:
আমাদের সমাজে প্রায়ই এই প্রবাদটি উচ্চারণ করা হয়। অথচ এটি একটি হিন্দুয়ানি প্রবাদ। হিন্দুরা তুলসী পাতা ধুয়ে তাদের কথিত দেবতা নারায়ণের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে। কারণ তাদের বিশ্বাস ধোয়া তুলসী পাতা হচ্ছে পবিত্র।!
অতএব কোন মুসলমানের জন্য ‘ধোয়া তুলসী পাতা’ প্রবাদ ব্যবহার করা জায়েয হবে না। এর পরিবর্তে ফেরেশতা হওয়া, সুফী হওয়া, অবুঝ, নির্দোষ, নিষ্পাপ ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।
১৭. প্রয়াত বা প্রয়াণ:
প্রয়াত, প্রয়াণ, মহাপ্রয়াণ ইত্যাদি সংস্কৃত ভাষার হিন্দুয়ানি শব্দ। কাজেই মুসলমানরা এই শব্দগুলো ব্যবহার করতে পারবে না। মুসলমানরা ব্যবহার করবে মরহুম, ইন্তেকাল, বেছাল ইত্যাদি।
১৮. বেদী বা পীঠ:
হিন্দুদের পূজা পার্বণ সংক্রান্ত শব্দ হচ্ছে বেদী বা পীঠ। হিন্দুদের পূজার জন্য প্রস্তুত উঁচু স্থানকে বেদী ও পীঠ বলা হয়। অনেকে শহীদ মিনারের সাথে বেদী শব্দ ব্যবহার করে বা পীঠ ব্যবহার করে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কোনো মুসলমান এই শব্দগুলো ব্যবহার করতে পারেনা।
১৯. আলিঙ্গন:
এ শব্দটি সংস্কৃত শব্দ যা অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ একটি শব্দ যার অর্থ লিঙ্গ পর্যন্ত। কাজেই এটি ব্যবহার না করে বলতে হবে মোলাকাত, কোলাকুলি ইত্যাদি।
২০. বিসমিল্লায় গলদ:
এটি একটি কুফরী প্রবাদ। শুরুতে বা সূচনায় ভুল-ত্রুটি অর্থে এই প্রবাদটি আমাদের সমাজে প্রচলিত। এটি ব্যবহার করা কুফরী হবে। (চলবে)
-মুহম্মদ জিয়াউল হক্ব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












