পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (৬)
, ২৫ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ব্রিটিশ বেনিয়াদের পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতবর্ষের সংস্কৃত ভাষার কথিত প-িতসম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় ভাষা ‘সংস্কৃত’ কেন্দ্রীক বাংলা ভাষা, সাহিত্য, ব্যাকরণ এবং বাংলা পরিভাষা ও শব্দ তৈরি করে বাংলা ভাষাকে সংস্কৃতের মধ্যে ডুবিয়ে শেষ করে দিতে চেয়েছে। তারা বাংলা ভাষাকে বিপরীত লোকদের ভাষা অর্থাৎ মুসলমানদের ভাষা মনে করতো। এজন্য তারা বাংলাকে কখনও ভালো চোখে দেখেনি। বার বার তারা বাংলা ভাষাকে দাবিয়ে রাখার অপচেষ্টা করেছে। সেনযুগে বাংলা ভাষা নিষিদ্ধকরণ, ব্রিটিশ আমলে বাংলা ভাষার সংস্কৃতকরণ তথা বিকৃতিকরণসহ বাংলা ভাষার উপর নানান রকম নিপীড়ন তারা চালিয়েছে।
মুসলমানদের হাত ধরে বাংলা ভাষার জন্ম ও বিকশিত হওয়াই ছিল এর অন্যতম কারণ। প্রায় দেড় হাজার বছর যাবৎ আরবী ও ফারসী ভাষার সংস্পর্শে ও পাশাপাশি বেড়ে উঠেছে বাংলা ভাষা। এতে করে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ ও ধীরে ধীরে অনেকটা পূর্ণতায় পৌঁছেছিল। এই কারণে তারা বাংলা ভাষাকে শত্রুর ভাষা তথা মুসলমানের ভাষা আখ্যায়িত করে ব্রিটিশদের যোগসাজসে বাংলার উপর কথিত শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বাংলা ভাষাকে বিকৃত করার অপপ্রয়াস করেছে।
যুগ যুগ ধরে যেসব আরবী-ফারসী শব্দ, পরিভাষা এবং বানানরীতি বাংলা ভাষার প্রাণ হয়ে বাংলার মধ্যে একাকার হয়ে মিশেছিল, বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছিল। কলকাতার বি-রা সেসব আরবী-ফারসী শব্দ, পরিভাষা এবং বানানরীতিকে বেছে বেছে বের করে তার স্থলে সংস্কৃত শব্দ, পরিভাষা ও বানানরীতি প্রবেশ করিয়েছে। এর বিরুদ্ধে একসময় মুসলমান কবি-সাহিত্যিকরা কলম ধরলেও শতভাগ সংস্কৃতের আগ্রাসন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। যার ফলে বাংলা ভাষায় এখনও প্রচুর সংস্কৃত শব্দ ও পরিভাষা চলমান রয়েছে, এবং কথিত মান্য বা প্রমিত বানানরীতির ব্যবহারও চলছে যা একদিকে বাংলা ভাষার উপর আগ্রাসন, অন্যদিকে মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার জন্য হুমকীস্বরূপ। বহিরাগত সংস্কৃতের আগ্রাসী ও ঈমানবিধ্বংসী সেসব শব্দ ও পরিভাষাগুলোর মধ্যে এখানে কিছু শব্দ ও পরিভাষা তুলে ধরা হয়েছে, এবং দুই একটা বানানরীতির ব্যবহার দেখানো হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করা মানে বাংলা ভাষার বিকৃতিকে মেনে নেয়া।
এছাড়া এই তালিকায় এমন কিছু শব্দ ও পরিভাষা উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করা সরাসরি শিরক ও কুফরির অন্তর্ভুক্ত। নাঊযুবিল্লাহ! একজন মুসলমান কোনোক্রমেই এসব শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করতে পারে না। মুসলমানকে অবশ্যই শরীয়তসম্মত শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করতে হবে।
উল্লেখ্য, ভাষার প্রতি আমাদের কোনো বিদ্বেষ নেই। যে কোনো ভাষার শব্দ ও পরিভাষাই ব্যবহার করা যেতে পারে। আমরা কেবল দুই ধরণের শব্দ ও পরিভাষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি-
১. অন্য ধর্মের ধর্মীয় শব্দ ও পরিভাষা,
২. বাংলার উপর আগ্রাসনমূলক শব্দ ও পরিভাষা।
এই দুটি দৃষ্টিকোণকে বিবেচনায় নিয়েই আমরা শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করবো। সেটা সংস্কৃত ভাষা, ইংরেজি ভাষা কিংবা অন্য যেকোনো ভাষার থেকে আগত শব্দ কিংবা পরিভাষা হোক না কেন।
অশুদ্ধ ও শুদ্ধ পরিভাষা, শব্দ এবং বানানের তালিকা
অশুদ্ধ: (বলা/লেখা যাবে না) শুদ্ধ: (বলতে/লিখতে হবে)
১ স্নাতক সম্মান, অনার্স, গ্রাজুয়েট ইত্যাদি
২ মাংস গোশত
৩ ঝোল শুরা বা শুরু’য়া বা শুরবা
৪ ইদ (ভুল বানান) ঈদ (শুদ্ধ বানান)
৫ নবি (ভুল বানান) নবী (শুদ্ধ বানান)
৬ জল পানি
৭ ভোজ/ভোগ/ভোজন খাদ্য, খাবার, তবারক, খাওয়া-দাওয়া করা ইত্যাদি
৮ গুরু-শিষ্য পীর-মুরীদ, উস্তাদ-শাগরীদ
৯ বিদ্যা (না বলা উত্তম) ইলম, জ্ঞান
১০ বিধাতা আল্লাহ, খোদা
১১ ১.বিধি (না বলা উত্তম) ১.নসীব, তক্বদীর, নিয়ম-কানুন, আইন, কায়দা
১২ ২.বিধি: (খোদা অর্থে ‘বিধি’ বলা যাবে না। কারণ হিন্দুদের কথিত দেবতা ব্রহ্মার একটি নাম হচ্ছে ‘বিধি’) ২.খোদা
১৩ বিধান (না বলা উত্তম) আইন, নিয়মকানুন, ব্যবস্থা ইত্যাদি
১৪ বিধির বিধান মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা/তক্বদীরের ফায়সালা
১৫ সাধু/সাধক (না বলা উত্তম) সুফি, দরবেশ
১৬ সাধনা (না বলা উত্তম) রিয়াজত-মাশাক্কাত, কোশেশ ইত্যাদি
(চলবে)
-মুহম্মদ জিয়াউল হক্ব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করার অপরিসীম ফযীলত
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র দুরূদ শরীফ দৈনিক বাদ ইশা ও বাদ ফজর ১০০ বার করে পাঠ করা সকলের জন্য আবশ্যক
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৫)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত- প্রাণীর ছবি হারাম
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে রাস্তা করার অজুহাতে মসজিদ ভাঙা কখনো শরীয়তসম্মত নয়
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা-হুসনে যন পোষণ করা ঈমান
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৬)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (১)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহিলাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ নির্দেশনা মুবারক- পর্দা পালন করা
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












