পাইলস কি এবং কাদের হয়
এডমিন, ১০ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৩ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৩ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১৭ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) চিকিৎসা

পাইলস বা হেমরয়েড কি?
সাধারণত মানুষের মলদ্বার এর দৈর্ঘ্য হচ্ছে ২-৩ ইঞ্চি, এই ২-৩ ইঞ্চির উপরের অংশকে বলা হয় রেক্টাম, রেক্টামের নিচের অংশে তথা মলদ্বারের আশেপাশে কিছু রক্তনালী থাকে, যাকে রেক্টাল ভেইন বলা হয়, এই রেক্টাল ভেইন গুলি যদি কোনো কারণে ফুলে যায়, কিংবা এখাকে যদি কোনো প্রদাহ হয়, যদি ইস্তিঞ্জার সময় (মলত্যাগ) সময় তা থেকে ব্লিডিং হয় তথা রক্ত যায়, এই অবস্থাকে পাইলস বা হেমোরয়েড বলা হয়।
পাইলস বা হেমরয়েড এর প্রকার :
১। এক্সটারনাল হেমোরয়েড: এক্ষেত্রে মলদ্বারের বাহিরের রক্তনালীগুলিতে প্রদাহ হয়, এবং মলত্যাগের সময় ব্যাথা হয়, রক্তও যেতে পারে, অন্যান্য সময় মলদ্বারের আশেপাশে চুলকানি থাকে বা ফুলে যায়।
২। ইন্টারনাল হেমরয়েড: ইন্টারনাল শব্দের অর্থ হচ্ছে অভ্যন্তরীণ। ইন্টারনাল হেমোরয়েড এর ক্ষেত্রে মলদ্বারের অভ্যন্তরীণ রক্তনালীগুলোতে প্রদাহ হয়ে রক্তনালীগুলো ফুলে যায়, ফ্রেশ ব্লাড যায় এবং ব্যাথা হয়, মলদ্বার দিয়ে পিন্ডের মত বেরিয়ে আসে, চুলকানি থাকে ইত্যাদি। রোগের জটিলতা বিবেচনায় ইন্টার্নাল হেমরয়েড এর ৪ টা স্তরে ভাগ করা হয়।
পাইলস কেনো হয়?
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে কিংবা অনিয়মিত বাওয়েল হেবিট রয়েছে অথবা যাদের প্রচুর পরিমাণ ডায়রিয়া হয়, তাদের ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যতার জন্য অথবা ডায়রিয়ার কারণে রেকটাল ভেইনগুলো গুলিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, এবং তাতে ইরিটেট হয়ে সেখানে প্রদাহ হয় এবং পরবর্তীতে পাইলস হয়। প্রেগন্যান্ট মহিলাদের হতে পারে, ওবেসিটি তথা অতিরিক্ত শারীরিক ওজন হলে হতে পারে, যাদের দীর্ঘদিনের কাশি রয়েছে, তাদেরও হতে পারে।
পাইলস এর উপসর্গ কি?
১. বড় ইস্তেঞ্জার সাথে রক্ত যাওয়া
২. ইস্তেঞ্জার সময় ব্যাথা হওয়া
৩. মলদ্বার দিয়ে পিণ্ড বেরিয়ে আসা
৪. অনিয়মিত বাওয়েল হেবিট
৫. পায়ুপথের আশেপাশে চুলকানি হওয়া।
পাইলস এর চিকিৎসা :
একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করাবেন। সে ক্ষেত্রে কিছু ক্রিম/ অয়েন্টমেন্ট কিংবা খাবার ঔষধ প্রয়োজন হতে পারে, ক্ষেত্র বিশেষে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়াও হোমিওপ্যাথিতে এর সুফল পাওয়া যায়।
পাইলস প্রতিরোধে করণীয় কি?
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মোটামুটি ৭০ শতাংশ পাইলসের জন্য দায়ী হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্যতা, তাই কোষ্ঠকাঠিন্যতা থেকে বেঁচে থাকলে পাইলস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে, আর কোষ্ঠকাঠিন্যতার মূল কারন হচ্ছে তেলে ভাজা খাবার খাওয়া এবং যারা আঁশ জাতীয় খাবার যেমন ফলমূল-শাকসবজি কম খাওয়া। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বেশী হয় এবং তা থেকে একসময় পাইলস দেখা দেয়। তাই পাইলস প্রতিরোধে যা করা উচিৎ নিয়মিত শাকসবজি খাওয়া, দৈনিক ২-৩ লিটার পানি পান করা, তেলে ভাজা কিংবা চর্বি জাতীয় খাবার কম খাওয়া।
যাদের পাইলস প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে তারা-
১। প্রতিদিন পর্যাপ্ত শাক-সবজি ও সাথে ইসুপগুল খেতে পারেন
২। প্রতিদিন ২-৩ লিটার পানি পান করবেন
৩। ভাজা-পোড়া খাবার ও প্রসেসড খাবার পরিহার করবেন
৫। যেইসব খাবার খেলে কোষ্টকাঠিন্য হয়, তা পরিহার করে চলবেন
৬। কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা ডায়রিয়া থাকলে তার চিকিৎসা নিবেন
-ডাঃ মহসিন রেজা চৌধুরী।