পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ২৬শে জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০১ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ২৯ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
তিনি বলেন, উনার বয়স যখন ২০ বৎসর মাত্র। স্মরণীয়, তিনি ছোটবেলা থেকেই খুব ইবাদত বন্দেগী করতেন। উনার শুধু মাতা ছিলেন। তিনি বললেন, আমি একদিন রাত্রে মনে মনে চিন্তা করলাম, আমি সারা রাত্র আজকে ইবাদত বন্দেগী করবো। নামায- কালাম, যিকির- আযকার সব করবো সারা রাত্রব্যাপী। চিন্তা করে তিনি প্রস্ততি নিচ্ছিলেন, তখন উনার মাতা বললেন, বাবা আজকে সারা রাত্র ইবাদত- বন্দেগী করার দরকার নেই, তুমি আজকে ঘুমিয়ে থাক। আজকে করার দরকার নেই, আজকে ঘুমিয়ে থাক, অন্যদিন করো।
তিনি বললেন, উনার মাতা যখন বললেন তখন মাতার কথা শুনে আমি আমার সেই নিয়ত বাদ দিয়ে শোয়ার প্রস্ততি নিলাম, যে আমার মায়ের সাথে আমি ঘুমালাম। আমার মা শুয়ে ঘুমিয়ে গেলেন। আমার একটা হাত যেটা আমি আমার মাকে ধরে ছিলাম সে হাতটা আমার মায়ের তলে পড়ে গেল। মার শরীরের তলে অর্থাৎ পিঠের তলে পড়ে গেল হাতটা।
আমি তখন চিন্তা করতে লাগলাম হাতটা যদি টান দিয়ে বের করি তাহলে হয়তো আমার মায়ের ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে। এমতাবস্থায় আমার হাতটা খুব ব্যাথা হচ্ছিল, পর্যায়ক্রমে ব্যাথা বাড়তেই লাগলো। আমি চিন্তা করতে লাগলাম, কি করা যেতে পারে? তখন মনে মনে চিন্তা করলাম, সূরা ইখলাছ শরীফ পাঠ করি। হয়তো এই উছিলায় মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আমাকে হিফাজত করবেন।
আমি দ্রুত গতিতে সূরা ইখলাছ শরীফ পাঠ করতে লাগলাম এবং ফিকির করতেছিলাম যে, কি করা যেতে পারে?
আমি হিসাব করে সূরা ইখলাছ শরীফ অর্থাৎ কুলহুওয়াল্লাহু শরীফ পাঠ করতেছিলাম। পাঠ করতে করতে আমি সারা রাত্র এগার হাজার বার পাঠ করলাম। সুবাহানাল্লাহ্!
কিন্তু তারপরেও আমি আমার মাকে ডাক দেইনি। যে উনার ঘুম ভেঙ্গে যায় কিনা। যখন আমার এগার হাজার বার পুরা হয়ে গেল তখন সকাল হয়ে গেল।
আমার মা উঠে গেলেন, তখন হাতটা বের করা হলো, মা দেখে বললেন যে, তুমি কেন হাতটা বের করলে না। আমি বললাম যে, আপনার ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে সেজন্য আমি হাতটা বের করিনি। কিন্তু যখন হাতটা বের করলাম তখন দেখা গেল হাতটা অবশ হয়ে গেছে। পরবর্তী জীবনে তিনি সেই হাতটা দিয়ে তেমন কোন কাজ করতে পারেননি। উনার মা খাছ করে উনার জন্য দোয়া করলেন।
এক বুযুর্গ ব্যক্তি বলেন, যখন হযরত সুলত্বানুল আরেফীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইন্তিকাল করলেন, ইন্তিকাল করার পরে উনাকে আমি স্বপ্নে দেখলাম, স্বপ্নে দেখলাম যে, মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী সুলত্বানুল আরেফীন, হযরত বায়েজিদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বেহেস্তে উড়ে বেড়াচ্ছেন।
আমি উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী সুলত্বানুল আরেফীন, হযরত বায়েজিদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি এতো মর্যাদা পেলেন কি করে?
তিনি বললেন, দেখ, কারণতো রয়েছে অনেক তবে আমি আমার পিতা-মাতার খেদমত করেছি এবং উনাদের কষ্টে ধৈর্য্যধারণ করেছি। সে উছীলায় মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আমাকে এই মর্যাদা- মর্তবা ও ফযীলত দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ্!
মহান আল্লাহ্ পাক তিনি উনাকে ফযীলত দিয়েছেন, উনার মা খাছ করে উনাকে অন্তর থেকে দোয়া করেছেন। মায়ের প্রতি ইহ্সান কতটুকু করা যেতে পারে সেটা তিনি প্রকাশ করেছেন।
সেই ইহ্সানটা কতটুকু হবে? সেটা ফিকির এবং চিন্তার বিষয়। পিতা-মাতার প্রতি সৎব্যবহার করতে হবে। তা কতটুকু করতে হবে? যতটুকু মানুষের সামর্থ্য রয়েছে, সাধ্য রয়েছে। সাধ্য এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সৎ ব্যবহার বা ইহ্সান করা প্রত্যেকেরই উপর দায়িত্ব কর্তব্য।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












