মহিলাদের পাতা
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ৩০ শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৩ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ৩১ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১৭ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
মূলতঃ পিতা-মাতার হক্ব এবং সন্তান সন্ততির হক্ব প্রত্যেকটাই খুব ব্যাপক। যে বিষয় সম্পর্কে প্রত্যেক মুসলমান নর এবং নারীর জন্য জানা অবশ্য কর্তব্য। যেহেতু কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা শরীফ এবং ক্বিয়াস শরীফে তার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
তবে যতটুকু জানা দরকার ততটুকু না জানলে মানুষের পক্ষে খালিছভাবে ঈমানের উপরে, আমলের উপরে এবং কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফের উপর থাকা সম্ভব নয় ঠিক ততটুকু প্রত্যেকেরই জানা দরকার।
মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاعْبُدُوا اللهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ إِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ مَنْ كَانَ مُخْتَالًا فَخُورًا
মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফে বলেন-
وَاعْبُدُوا اللهَ মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করো,
এবং وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا মহান আল্লাহ পাক উনার সহিত কাউকে শরীক করো না।
وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا এবং পিতা মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করো।
وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ এবং আরো সদ্ব্যবহার করো, যারা তোমার আত্মীয়-স্বজন, মিসকীন-ইয়াতীম।
وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা তোমার আত্মীয়, আত্মীয়দেরও হক্ব রয়েছে, এরপর যদি প্রতিবেশী হয় এবং আত্মীয় হয় তাহলে তার দু’টা হক্ব وَالْجَارِ الْجُنُبِ এবং যারা প্রতিবেশী এবং নিকটবর্তী প্রতিবেশী।
وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ এবং যারা তোমার সঙ্গী-সাথী, যাদের সঙ্গে তুমি উঠা-বসা করো, চলাচল করে থাকো, যারা তোমার সঙ্গী বা ছাহেব
وَابْنِ السَّبِيلِ আর যারা মুসাফির, যে মুসাফির অবস্থায় তোমার নিকট উপস্থিত হয় কোন জরুরতের কারণে।
وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ এবং যারা তোমাদের অধীনস্থ রয়েছে, যারা তোমার অধীনস্থ রয়েছে। তাদের প্রত্যেকের সাথে তুমি সদ্ব্যবহার করো।
এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি একই কথা বলেছেন, যেটা অন্যান্য আয়াত শরীফে বলেছেন যে, হক্কুল্লাহ্ এবং হক্কুল ইবাদ। হক্কুল্লাহ্ হচ্ছে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করা যাবে না। মহান আল্লাহ পাক উনাকে এক জেনে ও মেনে আমল করতে হবে।
আর দ্বিতীয় হচ্ছে হক্কুল ইবাদ। হক্কুল ইবাদ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বর্ণনা করেছেন, হক্কুল ইবাদের মধ্যে প্রথম হক্ব হচ্ছে যারা পিতা-মাতা তাদের হক্ব। যারা পিতা-মাতা তাদের হক্ব হচ্ছে সবচাইতে প্রথম।
এরপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম-মিসকীন, প্রতিবেশী, আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, নিকটবর্তী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির এবং অধীনস্থ পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকের বর্ণনা করেছেন। যার যে হক্ব রয়েছে ঠিক সেই হক্ব মোতাবেক, মহান আল্লাহ পাক তিনি উল্লেখ করেছেন।
যাতে প্রত্যেকেই তাদের হক্ব যথাযথ পেয়ে যায় এবং যারা আদায় করবে তারা যেন যথাযথ আদায় করতে পারে। এরপর মহান আল্লাহ পাক তিনি বলে দিয়েছেন-
إِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ مَنْ كَانَ مُخْتَالًا فَخُورًا নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না যে দাম্ভিক এবং অহংকারী, যে দাম্ভিক এবং অহংকারী তাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পছন্দ করেন না। অর্থাৎ সে তার অহংকারের কারণে দাম্ভিকতার কারণে আত্মীয়-স্বজন, গ্যাতি-গোষ্ঠী এমনকি পিতা-মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করবে না এটা মহান আল্লাহ পাক তিনি পছন্দ করেন না। যে দাম্ভিকতা প্রকাশ করবে, ফখর করবে, অহংকার করবে, মূলতঃ তার ইহ্কাল এবং পরকাল বরবাদ হয়ে যাবে।
এই আয়াতের তাফসীরে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلْوَالِدُ أَوْسَطُ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ فَإِنْ شِئْتَ فَأَضِعْ ذَلِكَ الْبَابَ أَوِ احْفَظْهُ
اَلْوَالِدُ أَوْسَطُ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ অর্থাৎ পিতা হচ্ছেন
فِى رِوَايَةٍ وَالِدَانِ
পিত-মাতা উভয় হচ্ছেন বেহেস্তের উত্তম দরজা।
أَوْسَطُ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ فَإِنْ شِئْتَ فَأَضِعْ ذَلِكَ الْبَابَ أَوِ احْفَظْهُ
যদি কেউ ইচ্ছা করে, সে তার এই দরজাটা ধ্বংস করুক অথবা ইচ্ছা করলে সে হিফাজত করুক। অর্থাৎ পিতা-মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করার কারণে সে জান্নাতে যাবে, অসৎ ব্যবহার করার কারণে সে জাহান্নামে যাবে। সে যদি ইচ্ছা করে তার এই জান্নাতের দরজাটা সে বজায় রাখতে পারে, সেটাকে বহাল তবিয়তে সে রাখতে পারে। অন্যথায় সে ইচ্ছা করলে দরজাটা ধ্বংস করে দিতে পারে। (অসমাপ্ত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












