পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ১৩ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৫ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ২৭ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
(ধারাবাহিক)
হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি অনুরূপ কথা বলেছেন যেটা হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম নিজের মুখে বলেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সেটা পবিত্র কুরআন শরীফে উল্লেখ করেছেন যে, হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম উনার যখন একজন সম্মানিত আওলাদ তাশরীফ নিলেন অর্থাৎ আওলাদ যমীনে তাশরীফ নেয়ার সময় যখন হয়ে গেল তখন তিনি দূরে চলে গেলেন।
সম্মানিত আওলাদ তাশরীফ নিলে তিনি জনসমাবেশে ফিরে আসলেন। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে তিনি যখন ফিরে আসলেন তখন বললেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! মানুষ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করে তাহলে আমি কি বলবো?
কারণ হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কোন পিতা ছিলেন না। এটা স্বাভাবিক মানুষের কাছে, এটা আশ্চর্য ঘটনা মনে হচ্ছে।
সত্যিই তিনি যখন ফিরে আসলেন তখন তারা অবাক হয়ে বললো- হে হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম! আপনার সম্মানিত আওলাদ তাশরীফ নিলেন কি করে?
তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন- হে হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম! আপনি কোন কথা বলবেন না, আপনি শুধু আপনার সম্মানিত আওলাদ উনার দিকে ইশারা করবেন।
যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফে উল্লেখ করেছেন-
فَأَشَارَتْ إِلَيْهِ قَالُوا كَيْفَ نُكَلِّمُ مَنْ كَانَ فِي الْمَهْدِ صَبِيًّا
(পবিত্র সূরা মারইয়াম : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
তখন নিয়ম ছিল- রোযা রাখলে কথা বলা নিষেধ। তিনি বললেন, আমি রোযা রেখেছি। কাজেই কথা বলা যাবে না। তোমরা আমার আওলাদ উনাকে জিজ্ঞাসা করো, অর্থাৎ কোলের সন্তানকে।
তারা বললো-
كَيْفَ نُكَلِّمُ مَنْ كَانَ فِي الْمَهْدِ صَبِيًّا
যিনি দোলনায় রয়েছেন (শিশু) উনার সঙ্গে আমরা কি করে কথা বলবো?
এটা বলার সাথে সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত রসূল হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি কথা বলে উঠলেন।
قَالَ إِنِّي عَبْدُ اللهِ آتَانِيَ الْكِتَابَ وَجَعَلَنِي نَبِيًّا
তোমরা জেনে রাখ, নিশ্চয় আমি মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে সম্মানিত নবী করেছেন।
وَجَعَلَنِي مُبَارَكًا أَيْنَ مَا كُنْتُ وَأَوْصَانِي بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ مَا دُمْتُ حَيًّا
এবং আমাকে বরকতের কারণ করেছেন, আমি যেখানে থাকিনা কেন আমি বরকতের কারণ হবো। আমাকে নামাযের এবং যাকাতের আদেশ করা হয়েছে যতদিন আমি জীবিত থাকবো।
অবশ্য এই আয়াতের তাফসীরে মুফাস্সিরীনে কিরাম বলেছেন যে, নবীদের উপর যাকাত ছিলনা, তিনি যেটা বলেছেন ওটা মূলত উনার উম্মতের জন্য। যে যাকাতের কথা বলা হয়েছে সেটাই তিনি উল্লেখ করেছেন।
مَا دُمْتُ حَيًّا
আমি যতদিন জীবিত থাকবো ততদিন আমার জন্য আদেশ করা হয়েছে- নামায এবং যাকাতের জন্য।
وَبَرًّا بِوَالِدَتِي وَلَمْ يَجْعَلْنِي جَبَّارًا شَقِيًّا
আমি নেক সন্তান, আমার মাতার প্রতি আমি অনুগত। আমি নেককার, নেকবখ্ত্ মহান আল্লাহ পাক উনার নবী। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং আমার সম্মানিত মাতা উনার আমি অনুগত।
মহান আল্লাহ পাক তিনি এখানে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার যে গুণ মুবারক বর্ণনা করেছেন তার মধ্যে এই গুণটিও বর্ণনা করে দিয়েছেন, যেটা হযরত ইয়াহ্ইয়া আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছিল।
এখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আমি আমার মাতার বাধ্য, আমি অবাধ্য নই। আমি আমার মাতার অবাধ্য আওলাদ নই, আমি আমার মাতার বাধ্য আওলাদ। এটাও মহাসম্মানিত নবী আলাইহিস সালাম উনার গুণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
وَلَمْ يَجْعَلْنِي جَبَّارًا شَقِيًّا
“আমি জালিম বা জুলুমকারী নই এবং বদবখ্ত্ নই। ”
তাহলে দেখা যাচ্ছে, যারা পিতা-মাতা বিশেষ করে মাতার সাথে জুলুম করে থাকে তারা জালিম এবং বদবখ্ত্। এটাই মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফে উল্লেখ করেছেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কথিত ফ্যাশন হাউজগুলো অশ্লীলতার আমদানীকারক
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়ার অর্থ হচ্ছে- হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম এবং হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধিতা করা!
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কায়িনাতবাসীর সমস্ত নিয়ামত মুবারক বণ্টনকারী
২৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
২৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
২৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরজ। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (৪)
২২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত মীলাদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
২২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২০ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কোথায় যাকাত দিবেন, তা আগে যাচাই করে দেখতে হবে
২০ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার পবিত্রতা রক্ষা করা সকলের জন্যেই ফরয
১৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র যাকাত পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার মধ্যে দেয়াই উত্তম
১৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরজ। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (৩)
১৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)