পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ১৯ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২১ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ২০ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ৫ চৈত্র, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
(ধারাবাহিক)
এ প্রসঙ্গে বলা হয়, হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَجْزِى وَلَدٌ وَالِدَهُ إِلاَّ أَنْ يَجِدَهُ مَمْلُوكًا فَيَشْتَرِيَهُ فَيُعْتِقَهُ.
হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন
নাবিয়্যীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক ফরমান, কোন সন্তানের পক্ষে তার পিতা অর্থাৎ পিতা-মাতার হক্ব আদায় করা সম্ভব নয়। কোন সন্তানের পক্ষে তার পিতা-মাতার যা হক্ব রয়েছে তা আদায় করা সম্ভব হবে না।
إِلاَّ أَنْ يَجِدَهُ مَمْلُوكًا فَيَشْتَرِيَهُ فَيُعْتِقَهُ.
যদি কোন সন্তান তার পিতাকে গোলাম হিসেবে পায় তাহলে সে যেন তাকে আজাদ করে দেয়, তাহলে যদি কিছুটা হক্ব তার আদায় হয়। যদি কোন সন্তান তার পিতাকে গোলাম হিসেবে পায় এবং তাকে সে আজাদ করে দেয়। তাহলে যদি কিছুটা হক্ব আদায় হয়। অন্যথায় হক্ব আদায় করা সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে বলা হয়, হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, একদিন উনারা হজ্বে গিয়েছেন। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ছিলেন সেখানে।
এক ব্যক্তি তার মাকে কাঁধে করে তাওয়াফ করতেছিল এবং সে বলতেছিল যে দেখ, মানুষ যত বাহনেই চড়ুক না কেন প্রত্যেকটা বাহনেই মানুষকে অস্বীকার করে চলে যায়, কিন্তু আমি আমার মাকে অস্বীকার করিনি। আমার মাকে আমি সবসময় কাঁধে কাঁধে নিয়ে চলে থাকি।
সে এটা বলতেছিল, এমন সময় সে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সামনে পড়লো, পড়ার পর বললো, হে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আমি তো আমার মাকে কাঁধে কাঁধে নিয়ে ফিরি, এতে কি আমার মায়ের হক্ব আদায় হয়েছে? অর্থাৎ আমি আমার মাকে তো কাঁধে কাঁধে নিয়ে ঘুরি, তাওয়াফ করতেছি, হজ্ব আদায় করতেছি, অন্যান্য যা কাজ সেগুলি সব সমাধান করতেছি। এতে কি আমার মা’র হক্ব আদায় হয়েছে?
তিনি বললেন যে দেখ, তুমি তোমার মায়ের কি হক্ব আদায় করবে, তুমি যখন জন্মগ্রহণ করো, তোমার মায়ের তখন যে প্রসব বেদনা উঠেছিল সেই কঠিন বেদনার সময় তোমার মা যখন একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়েছিল, সে সময় অনেক দীর্ঘশ্বাসই ছেড়ে থাকে মায়েরা। সেই একটা দীর্ঘশ্বাসের বদলাও তুমি এখন পর্যন্ত আদায় করতে পারোনি। সুবহানাল্লাহ!
তখন সে ব্যক্তি লা-জাওয়াব হয়ে গেল, সে মনে করেছিল, সে তার মায়ের হক্ব আদায় করেছে বা করতেছে। তিনি যখন একথা বললেন যে, একটা দীর্ঘশ্বাসের বদলাও তুমি এখন পর্যন্ত আদায় করতে পারোনি, তাহলে সম্পূর্ণ হক্ব কি করে আদায় করবে? এটা শুনে তখন সে লা-জাওয়াব হয়ে গেল।
কাজেই পিতা-মাতার যে হক্ব রয়েছে এটা খুব কঠিন। প্রত্যেকের কোশেশ করা উচিত সেটা আদায় করা।
বলা হয়েছে, হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَحَبَّ أَنْ يُمِدَّ اللهُ فِي عُمْرِهِ، وَيَزِيدَ فِي رِزْقِهِ، فَلْيَبَرَّ وَالِدَيْهِ، وَلْيَصِلْ رَحِمَهُ "
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক ফরমান-
مَنْ أَحَبَّ أَنْ يُمِدَّ اللهُ فِي عُمْرِهِ، وَيَزِيدَ فِي رِزْقِهِ،
কোন ব্যক্তি যদি চায় বা পছন্দ করে তার হায়াত বৃদ্ধি হোক এবং তার রিযিক বৃদ্ধি হোক সে যেন তার পিতা-মাতার খিদমত করে বা সৎ ব্যবহার করে এবং আত্মীয়দের সাথে আত্মীয়তার যে সম্পর্ক রয়েছে সেটা যেন সে বজায় রাখে।
যে ব্যক্তি তার রিযিক বৃদ্ধি করতে চায় এবং তার হায়াত বৃদ্ধি করতে চায় তার দায়িত্ব ও কর্তব্য হবে, সে যেন তার পিতা-মাাতার সহিত সৎ ব্যবহার করে এবং আত্মীয়দের সহিত আত্মীয়তা বজায় রাখে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












