পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ২৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৪ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ২৩ মে, ২০২৫ খ্রি:, ১০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
(ধারাবাহিক)
এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, একটা লম্বা হাদীছ শরীফ উল্লেখ করেছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। হযরত কা’ব ইবনে উজরাতা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন-
عَنْ حضرت كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اُحْضَرُوا الْمِنْبَرَ فَحَضَرْنَا فَلَمَّا ارْتَقَى دَرَجَةً قَالَ: آمِينَ، فَلَمَّا ارْتَقَى الدَّرَجَةَ الثَّانِيَةَ قَالَ: آمِينَ فَلَمَّا ارْتَقَى الدَّرَجَةَ الثَّالِثَةَ قَالَ: آمِينَ. فَلَمَّا نَزَلَ قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَدْ سَمِعْنَا مِنْكَ الْيَوْمَ شَيْئًا مَا كُنَّا نَسْمَعُهُ قَالَ: إِنَّ جِبْرِيلَ عَلَيْهِ السَّلَامِ عَرْضَ لِي فَقَالَ: بَعُدَ مَنْ أَدْرَكَ رَمَضَانَ فَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ فَقُلْتُ: آمِينَ فَلَمَّا رَقِيتُ الثَّانِيَةَ قَالَ: بَعُدَ مَنْ ذُكِرْتَ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ فَقُلْتُ: آمِينَ، فَلَمَّا رَقِيتُ الثَّالِثَةَ قَالَ: بَعُدَ مَنْ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ الْكِبَرَ عِنْدَهُ أَوْ أَحَدُهُمَا، فلَمْ يُدْخِلَاهُ الْجَنَّةَ، قُلْتُ: آمِينَ.
হযরত কা’ব ইবনে উজরাতা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম! আপনারা প্রত্যেকেই মিম্বরের কাছে আসুন। মিম্বরের কাছে হাজির হোন।
اُحْضَرُوا الْمِنْبَرَ فَحَضَرْنَا
উনারা বর্ণনা করেন, আমরা সকলেই হাজির হলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উপস্থিত হয়ে এক সিঁড়ি, দুই সিঁড়ি, তিন সিঁড়ি করে তৃতীয় সিঁড়িতে দাঁড়ালেন। প্রত্যেক সিঁড়িতে উঠার সময় আমীন, আমীন, আমীন বললেন। তৃতীয় সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কিছু নছীহত মুবারক করলেন। নছীহত মুবারক শেষ করে আবার নেমে আসলেন। যখন নেমে আমাদের কাছে এসে বসলেন, আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আজকে এমনকিছু কথা আমরা শুনলাম, যেটা পূর্বে কখনও শুনিনি আপনার জবান মুবারক থেকে। যে, কি শুনেছেন? আপনি প্রত্যেক সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় প্রত্যেক সিঁড়িতে আমীন, আমীন, আমীন, বলেছেন, তার কি কারণ রয়েছে? তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, যে “দেখুন; আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে পা রাখলাম-
إِنَّ جِبْرِيلَ عَلَيْهِ الَسَلامَ، عَرَضَ لِي قَالَ: بَعُدَ مَنْ أَدْرَكَ رَمَضَانَ، فَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ، فَقُلْتُ: آمِينَ
প্রথম সিঁড়িতে আমি যখন নূরুদ দারাজাত মুবারক বা পা মুবারক রাখলাম, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে আমাকে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ ব্যক্তি ধ্বংস, হালাক, যে রমাদ্বান শরীফ মাস পেলো, অথচ তার গুণাহখাতা সে ক্ষমা করাতে পারলো না। সে হালাক, সে ধ্বংস।”
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আমি তখন বললাম, “আমীন”, হ্যাঁ ঐ ব্যক্তি ধ্বংস, যে রমাদ্বান শরীফ মাস পেলো, অথচ তার গুণাহ্খাতা সে ক্ষমা করাতে পারলো না, সে ধ্বংস, সে হালাক।
فَلَمَّا رَقِيتُ الثَّانِيَةَ
এরপর যখন দ্বিতীয় সিঁড়িতে আমি নূরুদ দারাজাত মুবারক বা পা মুবারক রাখলাম-
قَالَ: بَعُدَ مَنْ ذُكِرْتَ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ فَقُلْتُ: آمِينَ،
দ্বিতীয় সিঁড়িতে নূরুদ দারাজাত মুবারক রাখলাম, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ ব্যক্তি ধ্বংস, হালাক, যে ব্যক্তির সামনে আপনার নাম মুবারক উচ্চারিত হলো, উচ্চারণ করা হলো অথচ সে আপনার প্রতি দুরূদ শরীফ পাঠ করলো না, সে ব্যক্তি ধ্বংস।”
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “আমীন।” হ্যাঁ, সে ব্যক্তি ধ্বংস, সে ব্যক্তি হালাক, যে আমার নাম মুবারক শুনলো অথচ আমার প্রতি দুরূদ শরীফ পাঠ করলো না।
فَلَمَّا رَقِيتُ الثَّالِثَةَ
এরপর যখন আমি তৃতীয় সিঁড়িতে নূরুদ দারাজাত মুবারক বা পা মুবারক রাখলাম-
قَالَ: بَعُدَ مَنْ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ الْكِبَرَ أَوْ أَحَدُهُمَا، فلَمْ يُدْخِلَاهُ الْجَنَّةَ، قُلْتُ: آمِينَ.
এরপর যখন আমি তৃতীয় সিঁড়িতে নূরুদ দারাজাত মুবারক বা পা মুবারক রাখলাম, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ ব্যক্তি ধ্বংস, ঐ ব্যক্তি হালাক, সে জাহান্নামী, যে তার পিতা-মাতা দু’জন অথবা একজনকে পেলো বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা অবস্থায় অথচ পিতা-মাতার খেদমত করলো না। উনাদের দোয়া নিলো না। পিতা-মাতার সন্তুষ্টি হাছিল করলো না; সে ধ্বংস, সে হালাক।”
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি বললাম, “আমীন।” হ্যাঁ, সে ধ্বংস হোক, সে হালাক। যে তার পিতা-মাতার দু’জনের একজনকে পেলো অথচ পিতা-মাতার সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারলো না অর্থাৎ সে তার পিতা-মাতার সহিত অসৎ আচরণ করেছে, যার কারণে উনারা তাকে দোয়া না করে বদ দোয়া করেছেন, সে ধ্বংস, সে হালাক।
কাজেই প্রত্যেক ব্যক্তিকেই সেটা খেয়াল রাখতে হবে। যদি কারো জন্য তার পিতা-মাতা বদ দোয়া করে, তাহলে তার জন্য ধ্বংস ছাড়া কোন গতি নেই। প্রকৃতপক্ষে, ধ্বংস ছাড়া কোন গতি নেই।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












