পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ০৯ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৭ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৬ জুন, ২০২৫ খ্রি:, ২৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
(ধারাবাহিক)
এ প্রসঙ্গে বলা হয়, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বর্ণনা করেন-
جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُبَايِعُهُ عَلَى الْهِجْرَةِ، وَتَرَكَ أَبَوَيْهِ يَبْكِيَانِ، فَقَالَ: ارْجِعْ إِلَيْهِمَا، وَأَضْحِكْهُمَا كَمَا أَبْكَيْتَهُمَا.
এক ব্যক্তি আসলেন, হিজরতের বাইয়াত করলেন, অর্থাৎ হিজরত করার জন্য বাইয়াত করলেন, সে ব্যক্তি বললেন,
رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا
আমি তো হিজরতের বাইয়াত গ্রহণ করলাম, কিন্তু আমি যখন আসতেছিলাম, তখন আমার পিতা-মাতা উভয়ে কাঁদতেছিলেন। এখন আমি কি করবো?
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اِرْجِعْ إِلَيْهِمَا، وَأَضْحِكْهُمَا كَمَا أَبْكَيْتَهُمَا.
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনি ফিরে যান। ফিরে গিয়ে উনাদেরকে হাসি-খুশী করান, যেভাবে আপনি উনাদেরকে কাঁদায়েছেন, ঠিক সেইভাবে আপনি উনাদেরকে হাসান আবার উনাদেরকে খুশি করান। আপনি উনাদেরকে কাঁদাবেন সেটা আপনার জন্য ভাল হবে না। আপনি আবার উনাদের কাছে যান, গিয়ে উনাদেরকে হাসান অর্থাৎ খুশি করান। এটা আপনার দায়িত্ব রয়েছে। কারণ সে ব্যক্তি ব্যতীত উনার পিতা-মাতার খেদমত করার মত কোন লোক ছিল না।
কাজেই যার যতটুকু দায়িত্ব রয়েছে, কর্তব্য রয়েছে, সেটা তাকে ঠিক ততটুকু যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে হবে, তাহলে তার জন্য কামিয়াবী, অন্যথায় তার জন্য কোন কামিয়াবী নেই।
কারণ প্রত্যেক সন্তানের জন্য পিতা-মাতার হক্ব রয়েছে, আবার পিতা-মাতারও হক্ব রয়েছে সন্তানের প্রতি যথাযথ।
যেটা কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যে সন্তান তার পিতা-মাতার হক্ব যথাযথ আদায় করবে, তার সন্তানরাও তার হক্ব যথাযথ আদায় করবে। যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতার হক্ব আদায় করবে না, তার সন্তানরাও তার হক্ব যথাযথ আদায় করবেনা।
মূলতঃ প্রত্যেকটা বিষয়ের মূল হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক। পিতা-মাতার হক্ব আদায় করলে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তুষ্ট হন, মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও সন্তুষ্ট হন।
কাজেই পিতা-মাতার হক্ব প্রত্যেককে আদায় করতে হবে। আর আদায় যদি কেউ না করে, তাহলে সেটা অসন্তুষ্টির কারণ। আযাব এবং গযবের কারণ। কাজেই তা থেকে প্রত্যেকেরই বিরত থাকতে হবে।
যেহেতু যাদের পিতা-মাতা জিন্দা রয়েছে, তাদেরতো সহজ। আর যাদের অতীত হয়ে গেছে, তাদের জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যাতে সহজে সে ব্যক্তি পিতা-মাতার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে, সেটাও বর্ণনা করেছেন।
কাজেই, মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের প্রত্যেককেই পিতা-মাতার হক্ব আদায় করার তৌফিক দান করেন, যারা জীবিত রয়েছেন। আর যারা ইন্তেকাল করে গেছেন, তাদের হক্ব যেন আদায় করার তৌফিক দান করেন।
পিতা-মাতার হক্ব এবং পিতা-মাতা ইন্তেকাল করার পর অনেক লোক এমনও রয়েছেন, যারা তাদের পিতা-মাতা থাকা অবস্থায় সৎব্যবহার করতে পারেননি। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের বুঝ পয়দা হয়েছে, সমঝ এসেছে যে, পিতা-মাতার সহিত খারাপ ব্যবহার করা হয়েছিল, তখন জানা ছিলনা। কিন্তু যখন বুঝ পয়দা হয়েছে, তখন উনারা ইন্তেকাল করেছেন। এখন সে কি করে নেক সন্তান হবে বা পিতা-মাতার সহিত সদ্বব্যবহার করবে? যাদের পিতা-মাতা ইন্তেকাল করেছেন তাদের জন্য সেটা জানারও দায়িত্ব রয়েছে, কর্তব্য রয়েছে।
আমরা এটাই দোয়া করবো, মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের প্রত্যেককেই প্রত্যেকের পিতা-মাতার হক্ব আদায় করার তৌফিক দান করেন। ভুল-ত্রুটি মানুষের হবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন শোধরায়ে দেন। খালিছ তওবা নছীব করেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত উম্মে সুরাইকা দাওসিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












