পুরুষ ও মহিলাদের নামাযে পদ্ধতিগত পার্থক্য (১)
, ২০ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ১৯ মে, ২০২৫ খ্রি:, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতময় সৃষ্টি মানব জাতি। তাদের এক অংশ নর অপর অংশ নারী। একজন অন্যজনের পরিপূরক। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَخَلَقْنَاكُمْ أَزْوَاجًا
অর্থ: আমি তোমাদেরকে জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছি। (পবিত্র সূরা নাবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
তবে তাদের মধ্যে সৃষ্টিগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। জীবন যাপনের মধ্যেও কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। একইভাবে ইবাদত বন্দেগীতেও তাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। অথচ ছহীহ সমঝের অভাবে কিছু গোমরাহ লোক তা উপলব্ধি করতে পারেনা। ফলে তারা তাদের গোমরাহী মূলক ফতওয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে সমাজে ফিতনা- ফাসাদ সৃষ্টির পায়তারা করে থাকে। আর তাদের কারণে আযাব-গযব নাযিল হয়। জিন-ইনসান হিদায়েতের পথ থেকে বিচ্যূত হয়।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এরূপ লোকদের সংশ্রব থেকে দূরে থাকার নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَكُونُ فِى آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ
অর্থ: আখিরী যামানায় অনেক মিথ্যাবাদী দাজ্জালের আর্বিভাব হবে। তারা তোমাদেরকে এমন সব কথা-বার্তা বলবে যা ইতিপূর্বে তোমরা কখনো শুনোনি, এমনকি তোমাদের পূর্বপুরুষগণও শুনেননি। তোমরা এরূপ লোকদের নিকট যাবে না, তাদেরকে তোমাদের কাছে আসতে দিবে না। তাহলে তারা তোমাদেরকে ফিতনায় ফেলতে পারবেনা, গোমরাহ করতে পারবে না। (অন্যথায় তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করবে, ফিতনায় ফেলবে, ফিতনাগ্রস্ত করবে। ) (মুসলিম শরীফ)
নামায, রোযা, হজ্জ, জিহাদ, মিরাছ ইত্যাদি সকল ইবাদত-বন্দেগীতে পুরুষ-মহিলার মধ্যে কিছু না কিছু পার্থক্য আছেই। নারীর দুইজনের স্বাক্ষ্যের সমান একজন পুরুষের স্বাক্ষ্য। প্রতি মাসে নারীদের প্রায়ই দশদিন নামায আদায় করা নিষেধ। কিন্ত পুরুষদের সেই হুকুম নেই। নারীদেরকে প্রতি রমাদ্বান শরীফ মাসে প্রায়ই দশদিন রোযা রাখতে হয় না। কিন্তু পুরুষদের বেলায় তা প্রযোজ্য নয়। হজ্জের ক্ষেত্রে নারীদের মাথা মু-ন করা নিষেধ। তারা মাথা খোলাও রাখতে পারবে না। অথচ পুরুষরা মাথা ঢেকে রাখলে দম দিতে হয়। মাথা মুন্ডন করলে দ্বিগুণ ফযীলত পায়।
নারী-পুরুষের সতরও ভিন্ন। পুরুষরা নাভীর নীচ থেকে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত ঢেকে রাখলে ফরয আদায় হয়। কিন্তু নারীদের বেলায় পুরো শরীরই ঢেকে রাখতে হবে। তবে নামাযের সময় শুধু মুখমন্ডল, হাতের তালু ও পায়ের পাতা খোলা থাকবে। অনিচ্ছাসত্বেও তার চেয়ে বেশী খোলা থাকলে আর তা যদি তিন তাছবীহ এর বেশী সময় পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে তাহলেও নামায ফাসিদ (ভঙ্গ) হবে। এমনকি নারীদের কণ্ঠও পর্দার অর্ন্তভুক্ত। কাজেই তাদেরকে আযান ও ইকামত ছাড়াই নামায আদায় করতে হয়।
এই সতর ও পর্দা রক্ষার সুবিধার্থে এবং সহজার্থে তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠানো, হাত বাঁধা, রুকু করা, সিজদা করা, প্রথম ও শেষ বৈঠকে বসা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পুরুষের সাথে নারীর পার্থক্য রয়েছে। তাদের সতরের পরিমাণ যেহেতু বেশি। আবার যেভাবে তাদের সতর বেশী রক্ষা হয় সেদিকটিও বিবেচনা করা হয়েছে। যদিও আরো বহুবিদ কারণ রয়েছে যা আমাদের অজানা। মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই ভালো জানেন।
পুরুষ ও নারীর নামায আদায়ে যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে তা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নাহ শরীফ, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও তাবেয়ীনে কিরামগণের ফতওয়া ও আছার শরীফ দ্বারাই ছাবিত বা প্রমাণিত।
-আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালিম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












