প্রতিবাদ ঢাবিতে হিজাব পরায় হেনস্তার অভিযোগে প্রতিবাদ সমাবেশ:
, ১৭ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৫ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২০ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
![প্রতিবাদ ঢাবিতে হিজাব পরায় হেনস্তার অভিযোগে প্রতিবাদ সমাবেশ:](https://www.al-ihsan.net/uploads/1693689949_ঢাবি.jpg)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে মৌখিক পরীক্ষায় হিজাব পরিধান করে অংশ নেওয়ায় এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিভাগের অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামান চাঁন ওই নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এস সি’র সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে টি এস সি থেকে প্রশাসনিক ভবন অভিমুখে মিছিল নিয়ে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া। এ সময় তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামান আমাদের এক বোনকে হিজাব পরিধান করায় ভাইভা বোর্ড থেকে বের করে দিয়েছেন। অভিযোগ জানানো হলে সেই শিক্ষার্থীকে উগ্রবাদী ট্যাগ দিয়েছেন। হিজাবি ও নিকাবি মেয়েরা যারা পর্দা করতে চান, তারা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে। আমার দাবি হচ্ছে, প্রত্যেকটা মহল থেকে এই মন্তব্যের প্রতিবাদ হওয়া উচিত। এখানে নারীদের সমান অধিকার রয়েছে। কিন্তু তারপরও এমন সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের জন্য আশা করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, হিজাব নিয়ে যে ঘটনা তার শুরু গতকাল থেকে নয়। কয়েকমাস আগ থেকে এই সমস্যার সূত্রপাত, যখন হিজাব বন্ধ করে নোটিস দেয় বাংলা বিভাগ। পরবর্তীতে হাইকোর্টে রিট করেন তিন শিক্ষার্থী। সেখান থেকে কোনো পূর্নাঙ্গ রায় না এলেও কতিপয় শিক্ষক ভেবে বসেছে,তারা শিক্ষার্থীদের হিজাব-নেকাব খুলতে পারবে। শিক্ষকরা যুক্তি দেন শিক্ষার্থী শনাক্তকরণের জন্য হিজাব খুলতে হয়। কিন্তু আমরা বিকল্প দিয়েছি নারী শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থী শনাক্তকরণের। আমরা বলেছি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী শনাক্ত করতে। কিন্তু তারা এই পদ্ধতি মেনে নিতে চায় না। তাদের উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম নুবা বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হিজাব ইস্যুতে আমাদের বারবার পথে নামতে হচ্ছে। এই দুঃখ পুরো জাতির। শিক্ষা আমার মানবাধিকার হওয়ার পরও শুধুমাত্র ধর্ম পালনের কারণে আমাদের হেনস্তা করা হচ্ছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে ৭ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। দাবিগুলো হলো- ভাইভা বোর্ডে পর্দানশীল শিক্ষার্থীদের হেনস্থা হওয়ার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে শিক্ষার্থীর ভাইভা নেওয়ার ব্যবস্থা করা, অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামন চাঁনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা, বাংলা বিভাগ কর্তৃক পরীক্ষা চলাকালীন কানসহ মুখম-ল দৃশ্যমান রাখা সংক্রান্ত নোটিস বাতিল করা, শিক্ষিকার মাধ্যমে আলাদা রুমে হিজাব ও নিকাব পরিহিতদের পরিচয় শনাক্ত করার ব্যবস্থা চালু করা, দ্রুততম সময়ে সকল অনুষদের সকল বিভাগে হিজাব-নিকাব পরিধানকারী শিক্ষার্থীদেরকে হেনস্থা করা বন্ধে নোটিস জারি, পরিচয় শনাক্তকরণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা, বিভিন্ন সময়ে ক্লাসরুম-ভাইবা বোর্ডে অথবা পরীক্ষার হলে নিকাব খুলতে বাধ্য করা অথবা কটূক্তির মাধ্যমে নারী শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি করার মতো ঘটনাগুলো তদন্তপূর্বক বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং এ সংক্রান্ত ঘটনায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে এনে অথবা ভিন্ন উপায়ে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খুবই মানবিক এবং অসাম্প্রদায়িক। এখানে কোনোকিছু নিয়ে বাড়াবাড়ির সুযোগ নেই। এখানে হিজাব থাকবে, দাঁড়ি-টুপি থাকবে, প্যান্ট-শার্ট থাকবে। সব ধরনের পোশাক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য। এখানে কোনো আইডেন্টিটি ক্রাইসিস থাকবে না। শিক্ষকরা পরীক্ষার হলে, ভাইভা বোর্ডে আইডেন্টিফিকেশন প্রয়োজন মনে করলে সেই নিরিখে চলতে হবে শিক্ষার্থীদের।
উল্লেখ্য যে, জুলাই মাসের শেষ দিকে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৩য় বর্ষের ভাইভা চলাকালে ড. ওয়াহিদুজ্জামান চাঁনসহ কয়েকজন শিক্ষক একজন ছাত্রীকে হিজাব খুলে ভাইভা দিতে জোর করে বলে অভিযোগ ওঠে। হিজাব না খোলায় আরেকজন ছাত্রীর ভাইভা নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ওয়াহিদুজ্জামান চাঁন ভুক্তভোগী ছাত্রীকে উগ্রবাদী ট্যাগ দেয় এবং পুরোপুরি পর্দা পালন করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে না আসার কথা বলে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করা এবং কারো ঘরে উঁকি দেয়া
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহিলাদের সুন্নতী লিবাস, অলংকার ও সাজ-সজ্জা (১৬)
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য (৭)
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুওয়াল: যার জাররা পরিমাণ ঈমান আছে সেও একদিন জান্নাতে যাবে। ইহা পবিত্র হাদীছ শরীফ কি-না? যদি পবিত্র হাদীছ শরীফ হয় তাহলে জাররা পরিমাণ বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুওয়াল: মৃত ব্যক্তির লাশের কাছে কান্নাকাটি করা, দোয়া-কালাম পড়া, কথাবার্তা বলা হয়। এগুলো মৃত ব্যক্তি শুনতে পায় কি না? বুঝতে পারে কি না?
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাইয়ূছ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র আশুরা সম্পর্কিত সুওয়াল জাওয়াব
১২ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র আশুরা সম্পর্কিত সুওয়াল জাওয়াব
১১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে (৪)
১০ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাসপাতালে নারীর নিরাপত্তা এবং শরয়ী পর্দাভিত্তিক আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা
০৯ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)