নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
প্রত্যহ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে দু’জন ফেরেশতা কী ঘোষণা করেন-১
৮ই সফর, ১৪৪২ হিজরী (ইয়াওমুস সাবত)
, ০৮ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
عَنْ أَبـِيْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللّٰهُ تَـعَالٰى عَـنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا يَـنْـتَظِرُ أَحَدُكُمْ إِلَّا غِنًى مُطْغِيًا أَوْ فَـقْرًا مُنْسِيًا أَوْ مَرَضًا مُفْسِدًا أَوْ هَرَمًا مُفْنِدًا أَوْ مَوْتًا مُـجْهِزًا أَوِ الدَّجَّالَ فَالدَّجَّالُ شَرٌّ غَائِبٌ يُـنْـتَظَرُ أَوِ السَّاعَةَ وَالسَّاعَةُ أَدْهٰى وَأَمَرُّ. (رواه الترمذى و النسائى)
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের কেউ এমন ধনী হওয়ার প্রতীক্ষায় রয়েছে যা পাপাচারে লিপ্ত করবে। অথবা এমন দরিদ্রতার, যা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভুলিয়ে দিবে। অথবা এমন রোগ-ব্যাধির, যা তাকে ধ্বংস করে দিবে। অথবা এমন বার্ধক্যের, যা বিবেক শূন্য করে দিবে। অথবা এমন মৃত্যুর, যা অতর্কিত আগমন করবে। অথবা দাজ্জালের প্রতীক্ষায় রয়েছে। আর দাজ্জাল হলো অপেক্ষমান অদৃশ্য বিষয়ের মধ্যে সর্বাপেক্ষা মন্দ বা নিকৃষ্ট। অথবা ক্বিয়ামতের প্রতীক্ষায়; আর ক্বিয়ামত অত্যন্ত কঠিন এবং তিক্ত।
[তিরমিযী ও নাসায়ী শরীফ]
অর্থাৎ মানুষ কোনো না কোনো প্রতীক্ষায় থাকে, যারা ধনী হওয়ার আশায় থাকে; ধন-সম্পদ তাদেরকে পাপাচারে লিপ্ত করে দেয়। দরিদ্রতা মানুষকে মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে গাফিল করে দেয়, মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভুলিয়ে দেয়। অথবা রোগ-ব্যাধি মানুষের জীবন শেষ করে দেয়। আর বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার ফলে বিবেক শূন্য হয়ে পড়ে।
সুতরাং মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে যে সময়ে যে অবস্থায় রেখেছেন সেই অবস্থায় গাফিল না থেকে সময়কে মূল্যায়ন করা উচিত। বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে যা কিছু লাভ করে সবই নিয়ামত। আর এই নিয়ামত উনার শুকরিয়া আদায় করতে হবে মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য বা ফরমাবরদারী করার মাধ্যমে।
মহান আল্লাহ পাক থেকে গাফিল থাকা বান্দার জন্য ঠিক হবে না। পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে,
عَنْ أَبـِي الدَّرْدَاءِ رَضِىَ اللّٰهُ تَـعَالٰى عَـنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا طَـلَعَتِ الشَّمْسُ إِلَّا وَبـِجَـنْـبَــتَــيْـهَا مَلَكَانِ يُـنَادِيَانِ يُسْمِعَانِ الْـخَلَائِقَ غَيْـرَ الثَّـقَلَيْنِ يَا أَيُّـهَا النَّاسُ هَلُمُّوْا إِلٰى رَبِّكُمْ مَا قَلَّ وَكَفٰى خَيْـرٌ مـِمَّا كَثُـرَ وَأَلْـهٰى ( رواه ابو نعيم فى الـحلية و مشكوة)
হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সূর্য উঠার সাথে সাথে, তার (সূর্য) দুই পাশে দুইজন ফেরেশতা আলাইহিমাস সালাম উনারা জ্বিন-ইনসান ব্যতীত সমস্ত মাখলুকাতকে ঘোষণা করে শুনাতে থাকেন, হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রব উনার দিকে আসো। যা কম এবং যথেষ্ট সেটা, যা বেশি এবং মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে গাফিল করে রাখে তা অপেক্ষা উত্তম।
[তিরমিযী শরীফ]
অর্থাৎ যে সম্পদের প্রাচুর্য মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ থেকে গাফিল করে রাখে তা অপেক্ষা প্রয়োজন মাফিক স্বল্প মাল-সম্পদই উত্তম। তাই মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে রুজু হয়ে প্রয়োজন মাফিক স্বল্প মাল-সম্পদে অভ্যস্ত হতে হবে। কারণ সম্পদের প্রাচুর্য মহান আল্লাহ পাক থেকে মানুষকে গাফিল করে রাখে। আর যারা মহান আল্লাহ পাক থেকে গাফিল থাকবে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত, বরকত, সাকীনা লাভ করা থেকে মাহরুম হবে। ফলে তারা ইহকাল ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অনেক সম্পদের মালিক ছিলেন কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ জমা করে রাখেননি। কোনো অবস্থাতেই মহান আল্লাহ পাক থেকে গাফিল থাকেননি। সদা-সর্বদা যিকির-ফিকির, ইবাদত-বন্দেগী ও আমলে ছলেহ তথা নেক আমলে মশগুল ছিলেন। উনারা এভাবেই জীবন যাপন করেছেন।
ইনশাআল্লাহ চলবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












