সুওয়াল-জাওয়াব :
প্রসঙ্গ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা বিশেষ শান মুবারক “ছায়া ছিলো না” সম্পর্কে বাতিলদের বক্তব্য খন্ড
, ০২রা রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৭ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১১ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
সুওয়াল:
যামানার তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার মাধ্যমে বিশ্ববাসী অবগত আছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া ছিলো না। কিন্তু এক মাহফিলে জনৈক বক্তা তার বক্তব্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া না থাকার বিষয়টিকে অস্বীকার করে এবং বলে যে, “ছায়া ছিলো না” সম্পর্কিত বর্ণনাসমূহ নাকি মিথ্যা ও বানোয়াট। নাউযুবিল্লাহ!
জানার বিষয় হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া না থাকার বিষয়টি যারা অস্বীকার করবে তাদের ব্যাপারে ইসলামী শরীয়ত উনার কি ফায়ছালা? আর ছায়া ছিলো না সংক্রান্ত বর্ণনাসমূহ কোন পর্যায়ের? বিস্তারিতভাবে দলীল সহকারে জানতে চাই।
জাওয়াব: (৩য় অংশ)
হযরত আল্লামা হুসাইন ইবনে মুহম্মদ দিয়ারে বিকরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খামীছ ফি আহওয়ালে আনফুসে নাফীস নামক কিতাবে বর্ণনা করেন-
لم يقع ظله صلى الله تعالى عليه وسلم على الارض ولايرى له ظل فى شمس ولا قمر.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া যমীনে পড়তো না এবং চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও উনার ছায়া দেখা যেতো না। ”
হযরত আল্লামা সাইয়্যিদ যুরকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শরহে মাওয়াহিবুল লাদুন্নীয়া শরীফে বর্ণনা করেছেন-
لم يكن له صلى الله عليه وسلم ظل فى شمس ولاقمر لانه كان نورا
অর্থ: “চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া ছিলো না। কেননা তিনি নূর ছিলেন। ” (আর নূরের কোন ছায়া নেই)
হাফিয আল্লামা ইবনে জাওযী মুহাদ্দিছ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবুল ওয়াফায় বর্ণনা করেন-
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه لم يكن للنبى صلى الله عليه وسلم ظل ولم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوء الشمس ولم يقع مع سراج قط الا غلب ضوءه ضوء السراج.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া ছিলো না। আর তিনি সূর্যের আলোতে দাঁড়ালে কখনো ছায়া পড়তো না। কেননা উনার নূর মুবারক উনার উজ্জ্বলতা সূর্যের রশ্মিকে অতিক্রম করে যেতো। কোন জলন্ত বাতির সামনে বসলেও কখনো ছায়া পড়তো না কারণ উনার উজ্জ্বল নূর মুবারক, বাতির আলোকেও ছাড়িয়ে যেতো। ”
খাছায়িছুল হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বিতীয় বাবের চতুর্থ অধ্যায়ে বলা হয়েছে-
لم يقع ظله على الارض ولارءى له ظله فى شمس ولا قمر قال ابن سبع لانه كان نورا.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মাটিতে পড়েনি। চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও উনার ছায়া দেখা যেতো না। এ সম্পর্কে হযরত ইবনু সাবা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কেননা তিনি নূর ছিলেন।
ইমাম আল্লামা কাজী আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শিফা শরীফ কিতাবে বলেছেন-
وما ذكر من انه لا ظل تشخصه فى شمس ولاقمر لانه كان نورا.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক উনার নূরুল মুজাসসাম মুবারক উনার ছায়া সূর্য ও চাঁদের আলোতেও পড়তো না। কেননা তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নূর মুবারক। ”
হযরত ফাজেল মুহম্মদ বিন ছিবান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইস্আফুর রাগিবীন কিতাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করে বলেন-
وانه لا فيئ له.
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ বৈশিষ্ট্য এই যে, উনার ছায়া ছিলো না।
আল্লামা আহমদ বিন মুহম্মদ খতীব কোস্তালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মাওয়াহিবুল লাদুন্নীয়া এবং মিনহাজে মুহম্মদীয়া কিতাবে উল্লেখ করেন যে-
رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم کی لیئے سایہ نہ تھا دھوپ میں نہ چاندنی میں-
অর্থ: চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া ছিলো না। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী কদমবুছি বিষয়ে কওমী মুখপত্রের শরীয়তের খেলাফ বক্তব্যের খন্ডনমূলক জাওয়াব
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১৪)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৬)
২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৫)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ-মহিলা নামায আদায়ের ছহীহ পদ্ধতি
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৪)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ড
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১০)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ডন
২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












