সুওয়াল-জাওয়াব:
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন
, ০৪ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ৩০ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৯ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ১৪ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
সুওয়াল:
বাতিল আক্বীদা ও ফিরক্বার লোকদের বক্তব্য হচ্ছে, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার তারিখ নিয়ে মতভেদ; তাই মতভেদ সম্পর্কিত বিষয় পালন করা ঠিক নয়। আর ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ বিলাদত শরীফ উনার দিন এটা সবচেয়ে দুর্বল মত। ” এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের ফায়সালা কি?
জাওয়াব: (৩য় অংশ)
মূলত: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সঠিক তারিখ ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ সম্পর্কে যারা চু-চেরা করে থাকে তারা দু’ দিক থেকে কাফির।
প্রথমতঃ তারা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ছহীহ ও মশহূর বর্ণনা অস্বীকার করার কারণে কাফির। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
روى حضرت ابو بكر ابن ابى الشيبة بسند الصحيح عن حضرت عفان عن حضرت سعيد بن مينا عن حضرت جابر وابن عباس رضى الله تعالى عنهما قالا ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم عام الفيل يوم الاثنين الثانى عشر من شهر ربيع الاول.
অর্র্থ: “হযরত হাফিয আবূ বকর ইবনে আবী শাইবাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি ছহীহ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন, হযরত আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত জাবির ও হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ হস্তি বাহিনী বর্ষের পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) হয়েছিলো। (বুলুগুল আমানী শরহিল ফাতহির রব্বানী)
এ ছহীহ ও নির্ভরযোগ্য বর্ণনার উপরই ইমামগণ উনাদের ইজমা’ (ঐকমত্য) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (সীরাত-ই-হালবিয়াহ, যুরক্বানী আলাল মাওয়াহিব, মা ছাবাতা বিস সুন্নাহ ইত্যাদি)
দ্বিতীয়ত: পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘নাসী’কে স্বীকার করে নেয়ার কারণে তারা কাফির। যেমন এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
انما النسىء زيادة فى الكفر يضل به الذين كفروا يحلونه عاما ويحرمونه عاما ليواطؤوا عدة ما حرم الله فيحلوا ما حرم الله.
অর্র্থ: “নিশ্চয়ই নাসী তথা মাসকে আগে পিছে করা কুফরীকে বৃদ্ধি করে থাকে। এর দ্বারা কাফিরেরা গুমরাহীতে নিপতিত হয়। তারা (ছফর মাসকে) এক বছর হালাল করে নেয় এবং আরেক বছর হারাম করে নেয়, যাতে মহান আল্লাহ পাক উনার হারামকৃত মাসগুলোর গণনা পূর্ণ করতে পারে। ” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৭)
অর্র্থাৎ, জাহিলিয়াতের যুগে কাফির, মুশরিকরা ছফর মাসকে অশুভ ও কুলক্ষণে মনে করতো। তাই তারা নিজেদের খেয়াল-খুশি মুতাবিক উক্ত মাসটিকে আগে-পিছে করতো। আরেকটি কারণ হলো, যখন তারা যুদ্ধ-বিগ্রহ করার প্রয়োজন মনে করতো বা যুদ্ধে লিপ্ত থাকতো, তখন তারা ছফর মাসকে আগে পিছে করে হারাম মাসের সংখ্যা নিরূপণ করতো, যা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও কুফরী। (তাফসীরে দুররে মানছূর)
এছাড়াও কাফির, মুশরিকরা তাদের নিজেদের স্বার্থে দুনিয়াবী ফায়দা লাভের জন্য বছরকে ১২ মাসে গণনা না করে কোন কোন বছর ১০ মাস থেকে ১৭ মাস পর্যন্ত গণনা করতো, যা নাসী হিসেবে মশহূর। এর কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক উনার তারিখ ও দিন নিয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। কারণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক থেকে বিদায় হজ্জ পর্যন্ত প্রায় তেষট্টি (৬৩) বছর। এই তেষট্টি বছর যাবৎ কাফির, মুশরিকরা নাসী করেছে। আর এই জন্যই বিদায় হজ্জের সময় খুতবায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মাস, তারিখ, দিন, স্থান সমস্ত কিছু নতুন করে ফায়সালা করেছেন, যা বিদায় হজ্জের খুতবায় বর্ণিত রয়েছে।
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ থেকে সংকলিত)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী কদমবুছি বিষয়ে কওমী মুখপত্রের শরীয়তের খেলাফ বক্তব্যের খন্ডনমূলক জাওয়াব
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১৪)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৬)
২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৫)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ-মহিলা নামায আদায়ের ছহীহ পদ্ধতি
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৪)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ড
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১০)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ডন
২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












