বদনছীব আবূ জাহেলের খোশনছীব সন্তান
ঘটনা-৪৯
, ২০ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
কিছু কুরাইশ দূর থেকে এটা দেখে ফেললো। তারা হযরত আকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললো, ‘আপনি আমাদের সর্দারের ছেলে। আপনারাই আইন করেছেন, কেউ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কোনরূপ সম্পর্ক স্থাপন করলে তাকে মৃত্যুদ- দেয়া হবে। তাহলে এখন আপনি নিজেই যে উনার সাথে মুসাফাহা-মুয়ানাকা করলেন, আপনার কি শাস্তি হওয়া উচিত না?’ তখন হযরত আকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ‘ঠিক আছে। তোমরা আইন বাস্তবায়ন করো।’ কুরাইশরা বললো, ‘আপনি কিভাবে শাস্তি নিবেন?’ তিনি বললেন, ‘তোমরা যেভাবে পছন্দ করো।’
তারা তখন পরামর্শ করে উনাকে পাহাড়ের উপর থেকে নিচে ফেলে দিল। কিন্তু দেখা গেল যেভাবে উনার পড়ার কথা তিনি সেভাবে নিচে পড়ছিলেন না। বরং মনে হচ্ছিলো উনাকে যেন ধরে আস্তে করে মাটিতে নামিয়ে দেয়া হলো। সুবহানাল্লাহ! কুরাইশরা যখন দেখলো এভাবে কাজ হলো না, তখন তারা আবার পরামর্শ করে উনাকে হাত পা বেঁধে জঙ্গলে ফেলে আসলো, যাতে হিংস্র প্রাণীরা উনাকে খেয়ে ফেলে। কিন্তু দেখা গেল কিছুক্ষণ পরে হিংস্র প্রাণীরা অত্যন্ত তা’যীম তাকরীমের সাথে উনাকে পিঠে করে জঙ্গলের কিনারে পৌঁছে দিয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ! কুরাইশরা এতে যারপরনাই অবাক হলো। তারা আবার পরামর্শ করে উনাকে হাত পা বেঁধে সাগরের মধ্যে ফেলে দিল। সাথে সাথেই হাজার হাজার মাছ এবং সামুদ্রিক প্রাণীরা উনাকে ঘিরে ফেললো এবং নিরাপদে তীরে পৌঁছে দিল। সুবহানাল্লাহ!
কুরাইশরা অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে বললো, ‘হে হযরত আকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আমরা আপনাকে পরপর তিনবার মৃত্যুদ- দেয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু প্রতিবারই আপনি নিরাপদে বেঁচে গেলেন। এর হাক্বীক্বত কি?’ তখন তিনি বললেন, “হে কুরাইশগণ! তোমরা তো আসল বিষয় বুঝতে পারোনি। তোমরা যখন আমাকে পাহাড় থেকে নিচে ফেলে দিলে সাথে সাথে অসংখ্য অগণিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা আমাকে ঘিরে ধরলেন। উনারা ছলাত-সালাম পাঠ করছিলেন। আমাকে বললেন, ‘হে হযরত আকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি চিন্তিত হবেন না। আপনি যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তা’যীম-তাকরীম করেছেন, মুহব্বতের সাথে মুসাফাহা-মুয়ানাকা করেছেন। আপনার শরীর থেকে উনার পূতপবিত্র জিসিম মুবারকের সুঘ্রাণ আসছে। এই সম্মানার্থে আপনার কোনো ক্ষতি হবে না।’ তারপর উনারা আমাকে সম্মানের সাথে আস্তে করে মাটিতে নামিয়ে রাখলেন।” সুবহানাল্লাহ!
“তারপর যখন তোমরা আমাকে জঙ্গলে ফেলে আসলে, সেখানের হিংস্র প্রাণীরা আমাকে ঘিরে ফেললো। তারাও সকলে ছলাত-সালাম পাঠ করছিল। আমাকে বললো, ‘হে হযরত আকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি পেরেশান হবেন না। আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূতপবিত্র জিসিম মুবারক উনার সংস্পর্শে এসেছেন। আপনার শরীর থেকে উনার মুবারক সুঘ্রাণ আসছে। উনার সম্মানার্থে আপনার কোনো ক্ষতি করা হবে না।’ তারপর তারা আমার বাঁধন খুলে তা’যীম-তাকরীমের সাথে জঙ্গলের কিনারে পৌঁছে দিয়ে গিয়েছে। সুবহানাল্লাহ! তারপর তোমরা আমাকে যখন সাগরে ফেলে দিলে, তখন সাগরের মাছগুলোও ছলাত-সালাম পাঠ করছিল। তারাও একইভাবে আমাকে সুসংবাদ শুনিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আদবের সাথে নিরাপদে তীরে পৌঁছে দিয়ে গিয়েছে।” সুবহানাল্লাহ!হযরত আকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পরবর্তীতে দ্বীন ইসলাম কবুল করেন এবং হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে জিহাদে শহীদ হন। সুবহানাল্লাহ! এখানে ফিকিরের বিষয় হলো, মাত্র একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সংস্পর্শ মুবারকে আসার কারণে হযরত আকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এতো সম্মানিত হয়ে গেলেন যে, বনের পশু, পানির মাছ এমনকি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম সবাই উনার খিদমতের আঞ্জাম দিলেন। সুবহানাল্লাহ! এভাবে কায়িনাতের যত কিছুই উনার পূত পবিত্র সংস্পর্শ মুবারকে এসেছে সবকিছুই মর্যাদাবান বা সম্মানিত হয়ে গিয়েছে। সুবহানআল্লাহ।
ইনশাআল্লাহ চলবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












