বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঔপনিবেশিক-ব্রাক্ষণ্যবাদী আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (৯)
, ০৮ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০২ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
যুগ যুগ ধরে যেসব আরবী-ফারসী শব্দ, পরিভাষা এবং বানানরীতি বাংলা ভাষার প্রাণ হয়ে বাংলার মধ্যে একাকার হয়ে মিশেছিল, বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছিলো। কলকাতার কথিত বিজ্ঞরা সেসব আরবী-ফারসী শব্দ, পরিভাষা এবং বানান রীতিকে বেছে বেছে বের করে তার স্থলে সংস্কৃত শব্দ, পরিভাষা ও বানান রীতি প্রবেশ করিয়েছে। এর বিরুদ্ধে একসময় মুসলমান কবি-সাহিত্যিকরা কলম ধরলেও শতভাগ সংস্কৃতের আগ্রাসন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। যার ফলে বাংলা ভাষায় এখনও প্রচুর সংস্কৃত শব্দ ও পরিভাষা চলমান রয়েছে, এবং কথিত মান্য বা প্রমিত বানানরীতির ব্যবহারও চলছে যা একদিকে বাংলা ভাষার উপর আগ্রাসন, অন্যদিকে মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার জন্য হুমকিস্বরূপ। বহিরাগত সংস্কৃতের আগ্রাসী ও ঈমানবিধ্বংসী সেসব শব্দ ও পরিভাষাগুলোর মধ্যে এখানে কিছু শব্দ ও পরিভাষা তুলে ধরা হয়েছে, এবং দুই একটা বানানরীতির ব্যবহার দেখানো হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করা মানে বাংলা ভাষার বিকৃতিকে মেনে নেয়া।
এছাড়া এই তালিকায় এমন কিছু শব্দ ও পরিভাষা উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করা সরাসরি শিরক ও কুফরির অন্তর্ভুক্ত। নাঊযুবিল্লাহ! একজন মুসলমান কোনোক্রমেই এসব শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করতে পারে না। মুসলমানকে অবশ্যই শরীয়তসম্মত শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করতে হবে।
অশুদ্ধ ও শুদ্ধ পরিভাষা, শব্দ এবং বানানের তালিকা:
২২. ভাবমূর্তি নয়, বলতে হবে ভাবমর্যাদা:
ভাবমূর্তি, বিমূর্ত ইত্যাদি শব্দ মূর্তির সাথে সংশ্লিষ্ট।
দ্বীন ইসলামে মূর্তির সাথে কোন সম্পর্ক নেই। মূর্তি পূজা সম্পূর্ণরূপে শিরক। কাজেই ভাবমূর্তি, বিমূর্ত ইত্যাদি মূর্তির সাথে সম্পৃক্ত সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার শব্দই পরিত্যাজ্য।
২৩. সূর্য সন্তান:
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী সূর্য তাদের একটি দেবতা এবং তাদের কথিত দেবতার তিনটি পুত্র সন্তান ও তিনটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। কাজেই সূর্য সন্তান, সূর্য কন্যা বা অগ্নিকন্যা, অগ্নিপুরুষ এগুলো ব্যবহার করা জায়েয হবে না।
২৪. মুখে ফুল চন্দন পড়–ক:
এটি একটি শিরকী প্রবাদ। হিন্দুদের পূজার একটি উপকরণ হচ্ছে চন্দন মাখানো ফুল যা দিয়ে তাদের কথিত দেবতার পূজা করা হয়। কাজেই কোন মুসলমানের জন্য এই শিরকী প্রবাদটি ব্যবহার করা জায়েয হবে না।
২৫. মানুষের ভুল আছে শয়তানের নেই:
এটি একটি কুফরী কথা। কারণ, শয়তান ২৪ ঘন্টাই ভুলের মধ্যে আছে এবং সে লা’নতগ্রস্ত। কাজেই শয়তানের ভুল নেই এটি বলা কুফরী হবে।
এর পরিবর্তে বরং ‘মানুষের কমবেশি ভুল আছে, আর শয়তানের পুরোটাই ভুল’ এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
২৬. মহাভারত কি অশুদ্ধ হয়ে গেলো?
এই প্রবাদটিও একটি কুফরী প্রবাদ। কারণ মহাভারত একটি কাল্পনিক ইতিহাস গ্রন্থ। দ্বীন ইসলামের দৃষ্টিতে যা কখনো শুদ্ধ ছিলো না। এই প্রবাদটি ব্যবহার করা কস্মিনকালেও জায়েয হবে না। তবে এর পরিবর্তে অসম্ভব বুঝাতে, ‘মহাভারত শুদ্ধ হইলো কবে?’ এটি বলা যেতে পারে।
২৭. লক্ষী ছেলে, লক্ষী মেয়ে:
‘লক্ষী’ এটি হিন্দুদের কথিত একটি দেবীর নাম। কাজেই লক্ষী শব্দটি মুসলমানদের ক্ষেত্রে লক্ষী ছেলে, লক্ষী মেয়ে, লক্ষী বউ ইত্যাদি ব্যবহার করা জায়েয হবে না।
২৮. লীলা/লীলা খেলা:
মুশরিকদের কথিত দেবতার কার্যকলাপ যা বোধগম্য কিংবা বোধগম্য নয় এসবকে তারা লীলা বলে থাকে। কাজেই এই লীলা, লীলাখেলা বা লীলাভূমি এগুলো ব্যবহার করা জায়েয হবে না। মুসলমানগণ ব্যবহার করবেন সম্মানিত কুদরত মুবারক পরিভাষা।
২৯. মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া:
কথিত এই প্রবাদটি একটি কুফরী প্রবাদ। এটি ব্যবহার করা যাবে না।
৩০. সতীর্থ:
‘সতীর্থ’ পরিভাষাটি একটি হিন্দুয়ানী ও সংস্কৃত ভাষার শব্দ। হিন্দুদের একই গুরুর শিষ্যদেরকে সতীর্থ বলা হয়। কাজেই মুসলমানের জন্য সতীর্থ ব্যবহার করা জায়েয হবে না। মুসলমানরা সহপাঠী, কলিগ ইত্যাদি বলতে পারেন।
৩১. রক্তের হোলি খেলা:
হোলি পূজা হিন্দুদের একটি পূজার নাম। কাজেই হোলির সাথে সম্পৃক্ত যেকোন শব্দ বা প্রবাদ মুসলমানদের জন্য পরিত্যাজ্য।
৩২. যজ্ঞ সংক্রান্ত শব্দ:
হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসযজ্ঞ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। যজ্ঞ শব্দটি হিন্দুদের পূজা সম্পর্কিত একটি পরিভাষা। কাজেই ‘যজ্ঞ’ পরিভাষার সাথে সম্পৃক্ত যে কোন শব্দই পরিত্যক্ত ও পরিত্যাজ্য।
৩৩. হন্যে হয়ে খোঁজা:
হন্যে শব্দটি খারাব অর্থে ব্যবহৃত হয়। কুকুর যখন কুকুরকে জৈবিক চাহিদা চরিতার্থে দৌড়ায় তখন ‘হন্যে হয়ে খোঁজা’ বা হন্যে হয়ে দৌড়ানো ইত্যাদি শব্দ ব্যবহৃত হয়। কাজেই মানুষের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












