বাতিল ফিরকা লা-মাযহাবী ও কথিত সালাফীদের কুফরী আকীদা উন্মোচন ও মুসলমানদের বিভ্রান্তির অপনোদন (২)
, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
আরশে ইস্তাওয়া হওয়া:
২। মহান আল্লাহ পাক উনার ছিফতসমূহ থেকে আরো একটি ছিফত হচ্ছে- ‘মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র আরশে ইস্তাওয়া হওয়া। পবিত্র আরশে ইস্তাওয়া হওয়ার বিষয়টি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে। এক্ষেত্রে সে যুগের প্রকৃত সালাফীদের আক্বীদা ছিলো-
الاستواء معلوم والكيف مجهول والايمان به واجب
অর্থাৎ, “আরশে ইস্তাওয়া হওয়া তো নসুসের মধ্যে উল্লেখ আছে, যা সকলেরই জানা-শোনা। কিন্তু ইস্তাওয়া হওয়ার পদ্ধতি কারও জানা নেই। তবে এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে যেরূপ বলা হয়েছে, সেভাবে ঈমান আনা ওয়াজিব। ” এই ছিলো ইস্তাওয়া সম্পর্কে উলামায়ে সালাফের আক্বীদা ও অবস্থান।
পক্ষান্তরে ভ্রান্ত মুশাব্বিহা সম্প্রদায়ের আক্বীদা ছিলো- মহান আল্লাহ পাক আরশে ইস্তাওয়া হওয়া; হুবহু রাজা-বাদশাহগণ সিংহাসনে সমাসীন হওয়ার ন্যায়। এই আক্বীদাটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ও কুফরীমূলক। নাউযুবিল্লাহ!
উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ৬ জায়গায় অর্থাৎ পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৪, পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩, পবিত্র সূরা রাদ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২, পবিত্র সূরা ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯, পবিত্র সূরা সিজদাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪ এবং পবিত্র সূরা হাদীদ শরীফ উনার ৪নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ-এ
ثُمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ
(ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল আরশ’) উল্লেখ রয়েছে। আর পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ উনার ৫ নং পবিত্র আয়াত শরীফ-এ
الرَّحْمٰنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَـوٰى
(আর রহমানু ‘আলাল আরশিস্তাওয়া’) উল্লেখ রয়েছে।
এ সকল জায়গায় (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি হবে সৃষ্টির কারো জানা ছিলো না। এ সম্পর্কে মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত ইমামে আ’যম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনিসহ আরো বড় বড় ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে সুওয়াল করা হয়েছিলো যে, اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি? উনারা বলেছেন যে, اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দের শাব্দিক অর্থ আমাদের জানা রয়েছে, ‘উপবেশন করা, বরাবর হওয়া’ ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি কিভাবে اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) হয়েছেন, এটা আমাদের জানা নেই।
প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর পর আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আলমে খলক্ব ও আলমে আমর দুইটি বিষয় রয়েছে। আলমে খলক্ব হচ্ছে- যেটা আরশে আযীমের নীচে। অর্থাৎ তাহ্তাছ ছারা বা মাটির নিম্নতম স্তর থেকে আরশে আযীম পর্যন্ত হচ্ছে আলমে খলক্ব। এটা মহান আল্লাহ পাক তিনি ছয় ধাপে সৃষ্টি মুবারক করেছেন।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
هُوَ اللهُ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَـيْـنَـهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ
অর্থ: “সেই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমানসমূহ (সাত আসমান) এবং সমস্ত যমীন (সাত যমীন) এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু আছে, এ সমস্ত কিছু ছয় দিনে তথা ছয় ধাপে সৃষ্টি মুবারক করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা সিজদাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
আবার আরশে আযীম থেকে ঠিক সম উচ্চতা হচ্ছে আলমে আমর। অর্থাৎ তাহতাছ ছারা থেকে আরশে আযীম পর্যন্ত যে পরিমাণ জায়গা ঠিক আরশে আযীম থেকে সেই পরিমাণ উচ্চতা হচ্ছে আলমে আমর। যা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম হওয়া মাত্র সৃষ্টি হয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
كُنْ فَـيَكُوْنَ
অর্থ: হও, হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি যে ইরশাদ মুবারক করেন-
هُوَ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: (এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার হাক্বীক্বী অর্থ হলো) তিনি সেই মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন ৬ দিনে অর্থাৎ ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। (কারণ দিন তো তখন ছিলো না। ) ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে আযীমকে আলমে খলকের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলমে খ্বালক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (অসমাপ্ত)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












