সরু চোখে.... (পর্ব ১)
বিপদে পরার আগে কিংবা মৃত্যুর আগেই তওবা করি
, ০১ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৪ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২৪ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১০ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
কয়েকদিন আগে অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গেলাম। তিনি কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়েছিলেন, সেই কথাই বলছিলেন। তার বক্তব্য ছিলো এমন- কিছুদিন আগে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ আমার শরীর অসুস্থ লাগে। ঘুম ভেঙ্গে যায়। মাথার ভেতর তীব্র ব্যাথা করছিলো। কানের মধ্যে বাজছিলো বিকট শব্দ, মনে হচ্ছিলো যেন পৃথিবীর সব শব্দ কানের মধ্যে ঢুকে গেছে। শ্বাস কষ্টও শুরু হয়। প্রেসার মেপে দেখি ২৪০/১৫০। এক পর্যায়ে তীব্র বমি শুরু হয়, যেন থামবেই না। তিনি আরো বলেন, আমি ধরেই নিয়েছিলাম, আমার মৃত্যুর সময় চলে এসেছে। আমি কালেমা শরীফ পাঠ করা শুরু করি। আমাকে প্রেসারের ওষুধ খাওনো হয়। ঘণ্টাখানেক পর প্রেসার ২০০/১১০ নেমে আসে। কিছুটা সুস্থতা বোধ করি। এরপর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে সিটি স্ক্যান, এমআরআই করে দেখতে পায়, মাথার খুব সরু একটা রক্তনালীতে রক্ত কিছু সময়ের জন্য আটকে গিয়েছিলো। সে সময় রক্ত বাইপাস করে আরেকটি নালী দিয়ে চলে যায়। তবে কোন রক্ত নালী ছিড়ে যায়নি বা হেমারেজের ঘটনা ঘটেনি। তবে যদি রক্ত বাইপাস করে অন্যদিকে চলে না যেতো, তবে নালী ছিড়ে হেমারেজের ঘটনা ঘটতে পারতো। রক্ত জমে আটকে যাওয়ার সময়টা খুব সামান্য ছিলো। সেই সামান্য সময়ই ছিলো আমার অসুস্থতার কঠিন সময়।
আমি তার এই কথাগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম, আর ভাবছিলাম, আমরা কতটা ক্ষুদ্র, কতটা অসহায়। কয়েক মিলিমিটার ব্যসের ছোট একটি রক্ত নালীতে রক্ত আটকে গেছে, তাতেই আমাদের জীবন পেরেশান। মহান আল্লাহ পাক উনার কত রহমতের মাধ্যমে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন। এজন্যই মহান আল্লাহ পাক সূরা আর রহমানের মধ্যে বার বার আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, “ফাবি আইয়্যি আ-লা-ই রব্বিকুমা তুকায্যিবান”: “অতএব, তোমরা উভয়ে (জিন ও ইনসান) তোমাদের পালনকর্তা উনার কোন্ কোন্ অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে?”
আমরা ভাবি, এত শরীয়ত মেনে কি হবে? কেন এত কিছু মানতে হবে? না মানলে কি হবে? আমি বোধ হয় স্বনির্ভর হয়ে গেছি, আমি বোধ হয় মুক্ত হয়ে গেছি। আমাকে ধরার কে আছে? আমার শক্তি আছে, বুদ্ধি আছে, টাকা আছে, ক্ষমতা আছে, সৌন্দর্য আছে, যৌবন আছে সেগুলো আমাকে হেফাজত করবে। মহান আল্লাহ পাক উনার কথা না শুনলে, আমার কি বা হবে? কোন কিছু হলে সেটা সামাল দেয়ার মত যোগ্যতাও স্টক আছে। নাউযুবিল্লাহ। এ চিন্তাগুলোই আমাদের স্বনির্ভর হওয়ার ভাবনার সূচনা করে। আমরা ভুলে যাই, আমাদের যোগ্যতা আসলে কিছুই না। পুরোটাই মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের মধ্যেই বেঁচে আছি। সামান্য একটু এদিক ওদিক হয়ে গেলে আমাদের জীবন শেষ হয়ে যেতে পারে। এজন্যই আমরা যখন বেশি বেপরোয়া হয়ে যাই, তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের বিপদ দিয়ে স্মরণ করিয়ে দেন, বান্দা তুমি যতই ঘুড়ির মত আকাশে উড়ো, যত নিজেকে স্বাধীন ভাবো, তোমার নিয়ন্ত্রণ কিন্তু আমার কুদরতী হাত মুবারকে আছে। সুতা টান দিলেই চলে আসবে।
সুতরাং আসুন, আমরা নিজেকে অমুখাপেক্ষী ভেবে বেপরোয়া না হয়ে যাই।
মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের থেকে দূরে না সরে যাই।
বিপদে পড়ার আগে কিংবা মৃত্যুর আগেই তওবা করি। উনাদের দিকেই রুজু থাকি।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে খালিছ তওবা করে উনাদের মত-পথে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন! (চলবে)
-উম্মু আমিম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












