১০০ টি চমৎকার ঘটনা
বিরল আত্মত্যাগ
ঘটনা-৪৩
, ০৮ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
![বিরল আত্মত্যাগ](https://www.al-ihsan.net/uploads/1700687324_১০০ ঘটনা.png)
সেই ব্যক্তি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার দরবারে এসে হাযির হলেন এবং দেখতে পেলেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি উনার শরীকদার ব্যবসায়ীর নিকট থেকে এক পয়সার হিসাব বুঝে নিচ্ছেন। তখন সে ব্যক্তি মনে মনে চিন্তা করতে লাগলেন, যিনি এক পয়সার হিসাব নিতে পারেন তিনি আমাকে কিভাবে সাহায্য করবেন? একথা চিন্তা করে তিনি আবার গিয়ে হাযির হলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফে। বললেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম তিনি এক ব্যক্তির কাছ থেকে এক পয়সার হিসাব বুঝে নিচ্ছেন। যিনি এক পয়সার হিসাব বুঝে নেন তিনি কিভাবে দান করতে পারেন?’ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ‘হে ব্যক্তি! তুমি উনার কাছে গিয়ে আমার কথা বলো, তাহলে তিনি তোমাকে সাহায্য করবেন।’
তখন সেই ব্যক্তি আবার সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার দরবার শরীফে হাযির হলেন এবং বললেন, ‘হে জলীলুল ক্বদর ছাহাবী! আমাকে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপনার কাছে পাঠিয়েছেন। আপনি যেন আমাকে কিছু সাহায্য করেন।’ তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘হে ব্যক্তি! আপনি এক কাজ করুন। আপনি ওমুক পাহাড়ে গিয়ে দাঁড়ান। সেখানে কিছুক্ষণ পর দেখতে পাবেন সেই পাহাড়ের পিছন দিক থেকে আমার একটি উটের কাফেলা আসছে এবং সকল উটের পিঠের উপর বোঝাই করা সম্পদ রয়েছে। সেখান থেকে আপনার যতটুকু ইচ্ছা ততটুকু সম্পদ আপনি নিয়ে যান।’
সে ব্যক্তি উনার কথা অনুযায়ী সেই পাহাড়ে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং ঠিক কিছুক্ষণ পরে দেখা গেলো সেই পাহাড়ের পিছন দিক থেকে বিরাট এক উটের কাফেলা আসছে এবং সমস্ত উটের পিঠে বোঝাই করা সম্পদ রয়েছে। অতঃপর উক্ত বিরাট কাফেলা সেই ব্যক্তির সম্মুখে আসলো। তখন সেই ব্যক্তি হাত উঁচু করে সেই উটের কাফেলাটিকে থামিয়ে দিলেন। সেই কাফেলার যিনি সর্দার ছিলেন, তিনি বললেন, ‘হে ব্যক্তি! আপনি কেন এই উটের কাফেলাটিকে থামিয়ে দিলেন?’ সেই ব্যক্তি বললেন, ‘হে কাফেলার সর্দার! সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, এই উটের কাফেলা থেকে আমার যে উটটি পছন্দ হয় সে উটটিই যেন সম্পদসহ নিয়ে যাই।’ একথা শুনে কাফেলার সর্দার বললেন, ‘ঠিক আছে, আপনার যে উটটি পছন্দ হয় সে উটটি সম্পদসহ নিয়ে যান।’ তখন সেই ব্যক্তি সবার সামনের সবচেয়ে সুন্দর এবং সবচাইতে বেশি সম্পদ বোঝাই করা উটটিকে পছন্দ করলেন। এটা দেখে সেই কাফেলার সর্দার বললেন, ‘হে ব্যক্তি! আপনাকে এই উটটি দেয়া যাবে না। কেননা উটের নিয়ম হলো, সামনের উট যেদিকে যায় পিছনের উটগুলোও তার পিছনে পিছনে সেদিকে যায়।’ কিন্তু সে ব্যক্তি সামনের উটটি ব্যতীত অন্য কোন উট নিতে রাজি হলো না।
তখন দুজনে মিলে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার কাছে গিয়ে হাযির হলেন এবং কাফেলার সর্দার বললেন, ‘হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! আপনি কি এই ব্যক্তিকে আমাদের কাফেলা থেকে যেকোনো একটি উট সম্পদসহ নিয়ে যেতে বলেছেন?’ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি তা বলেছি।’ কাফেলার সর্দার বললেন, ‘এই ব্যক্তি আমাদের কাফেলার সর্বপ্রথম উটটিকে পছন্দ করেছেন। এখন যদি এ ব্যক্তিকে সেই উটটি দিয়ে দেয়া হয় তাহলে সমস্ত উটসহ সমস্ত সম্পদও চলে যাবে। আমাদের কিছুই থাকবে না।’
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার চেহারা মুবারক লাল হয়ে গেল এবং তিনি বললেন, ‘হে কাফেলার সর্দার! তুমি কি জানো, এই ব্যক্তিকে কে আমার কাছে পাঠিয়েছেন? তিনি হলেন, সরওয়ারে দোজাহান, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কাজেই এ ব্যক্তি তো শুধু আমার উট এবং সম্পদ চেয়েছে। হে কাফেলার সর্দার! তুমি শুনে রাখো এবং জেনে রাখো! এই ব্যক্তি যদি আমাকেও চায় তাহলে আমি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালামকেও উনার সঙ্গে চলে যেতে হবে।’ সুবহানাল্লাহ!
তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নির্দেশে উক্ত ব্যক্তি কাফেলার এক হাজার উট খাদ্য-শস্যসহ সঙ্গে নিয়ে চলে গেলেন। সুবহানাল্লাহ!
এভাবেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নিজেদের জান-মাল সবকিছু কুরবানী করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়ার জন্য কোশেশ করেছেন এবং শুকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে খুশি প্রকাশ করেছেন এবং বিনিময়ে দুনিয়াতে থাকতেই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। সুবহানআল্লাহ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করা এবং কারো ঘরে উঁকি দেয়া
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহিলাদের সুন্নতী লিবাস, অলংকার ও সাজ-সজ্জা (১৬)
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য (৭)
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুওয়াল: যার জাররা পরিমাণ ঈমান আছে সেও একদিন জান্নাতে যাবে। ইহা পবিত্র হাদীছ শরীফ কি-না? যদি পবিত্র হাদীছ শরীফ হয় তাহলে জাররা পরিমাণ বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুওয়াল: মৃত ব্যক্তির লাশের কাছে কান্নাকাটি করা, দোয়া-কালাম পড়া, কথাবার্তা বলা হয়। এগুলো মৃত ব্যক্তি শুনতে পায় কি না? বুঝতে পারে কি না?
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাইয়ূছ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র আশুরা সম্পর্কিত সুওয়াল জাওয়াব
১২ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র আশুরা সম্পর্কিত সুওয়াল জাওয়াব
১১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে (৪)
১০ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাসপাতালে নারীর নিরাপত্তা এবং শরয়ী পর্দাভিত্তিক আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা
০৯ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)