জীবনী মুবারক
বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আসমা বিনতু আবী বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা (১)
, ২৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৭ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ৩১ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
বিছাল শরীফ: ৭৩ হিজরী (৬৯৫ খ্রি:)
বয়স মুবারক: ১০০ বছর।
পরিচিতি:
তিনি এমন একজন মহিলা ছাহাবী, উনার পিতা, দাদা, বোন, স্বামী ও পুত্র সবাই ছিলেন বিশিষ্ট ছাহাবী। সুবহানাল্লাহ! উনার পিতা হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জীবনকালের সার্বক্ষণিক, সর্বশ্রেষ্ঠ ছাহাবী। হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ অর্থাৎ আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পরে উনার প্রথম খলীফা।
উনার মা কুতাইলা বিনতু আবদিল উজ্জা, উনার দাদা হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার পিতা হযরত আবু কুহাফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার বোন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাওয়ারী (বিশেষ খাদিম) ও আশারায়ে মুবাশ্শারা (বেহেশতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন উনাদের একজন) হযরত যুবাইর ইবনু আওয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহাল বা স্বামী। এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে শহীদ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পুত্র। এই হলো হযরত আসমা বিনতু আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার সংক্ষিপ্ত পরিচয়।
হিজরতের ২৭ বৎসর পূর্বে তিনি মক্কা শরীফে বিলাদত শরীফ লাভ করেন। ইসলাম উনার আবির্ভাবের সময় তিনি বুদ্ধি বিবেচনার বয়সে পৌঁছেছিলেন। তিনি প্রাথমিক যুগে ইসলাম গ্রহণকারীগণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। উনার মা ইসলাম গ্রহণ করেননি। এজন্য হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি তাকে তালাক দিয়েছিলেন।
যাতুন নিত্বাকাইন:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হিজরতের জন্য হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার গৃহে আগমন করলে হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাদের ছফরের জন্য খাদ্যদ্রব্য ও পানীয় প্রস্তুত করলেন।
কিন্তু যখন দেখলেন যে, উনার নিতাক (কোমরবন্ধ) ব্যতীত ইহা বেঁধে দেয়ার মত আর কোন জিনিষ নেই তখন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার নির্দেশ মত নিতাকটি ছিঁড়ে দুই টুকরা করে ফেললেন। উনার এক টুকরা দ্বারা খাদ্যের পুটলি এবং অন্য টুকরা দ্বারা মশকের মুখ বেঁধে দিলেন। এই কারণেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে “যাতুন নিত্বাকাইন” (দুই কোমরবন্ধের অধিকারিণী) বলে আখ্যায়িত করেন।
হিজরত ও মুহাজিরদের প্রথম সন্তান:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ও হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনারা মদীনা শরীফ পৌঁছে নতুন স্থানে প্রাথমিক সমস্যা কাটিয়ে একটু স্থির হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেন যে, মক্কা শরীফ থেকে মহিলাদের আনার ব্যবস্থা করতে হবে। উল্লেখ্য যে, হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার আহাল বা স্বামী হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্বেই মদীনা শরীফে পৌঁছে গিয়েছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত যায়েদ বিন হারিছা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও স্বীয় গোলাম হযরত রাফি‘ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে মক্কা শরীফে পাঠালেন। আর এদিকে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ছেলে হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মা, দুই বোন হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা ও হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম এবং পরিবারের কয়েকজন মহিলাকে নিয়ে মদীনা শরীফের পথ ধরেন। হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তখন আসন্ন সন্তান সম্ভাবা মহিলা। মদীনা শরীফের কুবা পল্লীতে পৌঁছার পর গর্ভস্থ সন্তান হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বিলাদত শরীফ লাভ হয়। (তাবাকাত, উসুদুল গাবা)
তিনি ছিলেন মদীনা শরীফে মুহাজিরদের পরিবারে বিলাদত প্রাপ্ত প্রথম শিশু। পরবর্তীকালে হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলতেন, আমি আমার মায়ের পেটে থাকতেই হিজরত করেছি। তিনি আরো বলতেন, আমার মা আমাকে পেটে নিয়ে হিজরত করেছেন। তিনি যত ক্লান্তি ও ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করেছেন, তার সবই ‘আমিও সহ্য করেছি। সুবহানাল্লাহ! (ইছাবা) (চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












