বেতন না পেয়ে চা-ইডলি বিক্রি করছে ভারতের চন্দ্রাভিযানের কিছু কর্মী
এডমিন, ০৭ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৩সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) বিদেশের খবর

চন্দ্রপৃষ্ঠে ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর সফল অবতরণের দিন ২৩ আগস্ট। ওই দিন ইসরোর বৈজ্ঞানিকরা অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছিলো, তখন ঝাড়খ- রাজ্যের একটি সরকারি কারখানার কর্মী দীপক উপরারিয়া ইডলি (এক ধরনে পিঠা) বিক্রি করছিলো।
ওই একই সময়ে তার এক সহকর্মী মধুর কুমার মোমো বেচছিলো। আর আরেক সহকর্মী প্রসন্ন চায়ের দোকান সামলাচ্ছিলো।
অথচ এই দীপক উপরারিয়া, মধুর কুমার বা প্রসন্নদেরও সফল চন্দ্রাভিযানের জন্য কিছুটা হলেও তো অভিনন্দন প্রাপ্য ছিল। কারণ তাদের কারখানাতে তৈরি লঞ্চপ্যাড থেকেই উৎক্ষেপিত হয়েছিল চন্দ্রযান-৩, আর তারও আগে চন্দ্রযান-২।
কিন্তু অভিনন্দন তো দূরের কথা, গত ১৮ মাস ধরে সরকারি কর্মচারী হয়েও তারা বেতনই পায়নি। তাই বাধ্য হয়ে ইডলি, মোমো বা চায়ের দোকান খুলেছে তারা।
তারা সবাই কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের (এইচইসি) কর্মী। দেড় বছর ধরে বকেয়া বেতনের জন্য আন্দোলন করছে সংস্থাটির প্রায় তিন হাজার কর্মী।
এইচইসি-এর টেকনিশিয়ান দীপক কুমার উপরারিয়ার দোকানটা রাঁচির ধুরওয়া এলাকায় পুরানো বিধানসভা ভবনের ঠিক সামনে। সকাল সন্ধ্যায় সে ইডলি বিক্রি করছে, আর দুপুরে অফিস যাচ্ছে।
সে বলে, ‘প্রথম কিছু দিন ক্রেডিট কার্ড দিয়ে সংসার চালিয়েছি। তাতে প্রায় দুই লাখ টাকা বিল হয়ে যায়। আমাকে ঋণখেলাপি ঘোষণা করে দেয়। তারপর আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ধার-দেনা করছিলাম। এখন পর্যন্ত চার লাখ টাকা ধার করেছি। ধার শোধ করতে পারি না, তাই কেউ আর এখন ধার দিতে চায় না। কিছু দিন স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখেও সংসার চালিয়েছি। একটা সময় মনে হচ্ছিল না খেয়েই মারা যাব। তখন মাথায় এলো ইডলির দোকানের ব্যাপারাটা। আমার স্ত্রী খুব ভালো ইডলি বানায়, আর আমি বিক্রি করি। এখন তিন-চার শ’ টাকার ইডলি বিক্রি করছি প্রতিদিন। দিনের শেষে ৫০-১০০ টাকা লাভ হচ্ছে, তাই দিয়েই ঘর চালাচ্ছি।’